প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে চলতি মৌসুমের উইম্বলডন টেনিসও বাতিল করা হয়েছে। গত পঁচাত্তর বছরে যা হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথম বাতিল হলো গ্র্যান্ড স্ল্যাম উইম্বলডন। তবে এতে হতাশ হয়েছেন টেনিস তারকারা।
রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল, সেরেনা উইলিয়ামস, সিমোনা হালেপ, পেত্রা কিতোভা, সানিয়া মির্জা, বরিস বেকার-সহ সকল টেনিস তারকারা তাদের হতাশা ব্যক্ত করেছেন। একই সঙ্গে এমন সিদ্ধান্তকে তারা দুঃখজনক হলেও অভিহিত করেছেন।
ক্যারিয়ারে ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী সুইজারল্যান্ডের রজার ফেদেরার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে লিখেছেন, ‘হতাশ-বিধ্বস্ত লাগছে।’
১৯টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক স্পেনের রাফায়েল নাদাল বলেছেন, ‘আমরা এখন পরিস্থিতির শিকার। এটি বাতিল হওয়াটা আমাদের জন্য দুঃখজনক।’
২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেরেনা উইলিয়ামস। তার কণ্ঠেও হতাশা। টুইটারে সেরেনা লিখেন, ‘এমন খবর শুনে আমি হতাশ। এ হতাশা সহজে মুছে যাবে না।’
গতবারের চ্যাম্পিয়ন সিমোনা হালেপের প্রতিক্রিয়া ছিল এমন, ‘উইম্বলডন এবার আয়োজিত হবে না শুনে খুব খারাপ লাগছে। গতবারের ফাইনালটা আমার জীবনের অন্যতম আনন্দের মুহূর্ত হয়ে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু এ মুহূর্তে আমরা টেনিসের থেকে আরও বড় একটা লড়াই করছি। উইম্বলডন আবারও ফিরবে। আমাকে খেতাব রক্ষার লড়াইয়ে নামার জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।’
দুইবারের চ্যাম্পিয়ন পেত্রা কিতোভাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি লিখেন, ‘এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না। উইম্বলডন আমার কাছে শুধু বিশেষ একটা প্রতিযোগিতাই নয়, ইতিহাসের অংশও। তবে সবার আগে সকলের নিরাপদ। সবাই, বাড়িতে থাকুন, সুস্থ থাকুন।’
ভারতীয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জাও টুইটারে নিজের অভিমত তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেন, ‘খুবই খারাপ লাগছে প্রতিযোগিতাটি বাতিল হয়ে যাওয়ায়।’
তবে তিনবারের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন সাবেক জার্মান টেনিস তারকা বরিস বেকার উইম্বলডন বাতিলের আগে এ মাসটি পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই মনে করি এপ্রিল মাস শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত উইম্বলডনের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। ধৈর্য্যের ফল মধুর হয়, এটা আমরা সবাই জানি।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় ঐতিহ্যবাহী এ টেনিস প্রতিযোগিতা বাতিল করার সিদ্বান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে আয়োজক অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাব। যা গত পঁচাত্তর বছরে ঘটেনি।
চলতি বছরের ২৯ জুন থেকে শুরুর সূচি ছিল উইম্বলডন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতা বাতিল করাটাই সঠিক বলে জানিয়েছেন অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাবের চেয়ারম্যান ইয়ান হিউইট। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন চেষ্টা করব এ বিপদে স্থানীয় জনগণকে আমাদের সাধ্যমত সাহায্য করতে।’
এদিকে শুধুমাত্র উইম্বলডনই নয়, ঘাষ কোর্টের মৌসুমও বাতিল করা হয়েছে। ফলে ১৩ জুলাইয়ের আগে বিশ্বের কোথাও পেশাদার টেনিস হওয়ার সম্ভাবনা নেই।