ইউএস ওপেন টেনিস টুর্নামেন্ট। বছরের শেষ গ্র্যান্ডস্ল্যাম এটি। ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক যুক্তরাষ্ট্রের সেরেনা উইলিয়ামসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি আসর। এ টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতলেই মহিলাদের বিভাগে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড স্পর্শ করবেন।
২৪টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিতে সবার ওপরে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার মারগারেট কোর্ট। ফলে এবারের ইউএস ওপেন দিয়ে কোর্টকে স্পর্শ করার লক্ষ্য সেরেনার। সেরেনার পাশাপাশি ইউএস ওপেনের শিরোপা জয়ের দিকে চোখ রয়েছে শীর্ষ বাছাই ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জাপানের নাওমি ওসাকার ও চতুর্থ বাছাই রোমানিয়ার সিমোনা হালেপেরও।
রেকর্ড শিরোপা স্পর্শ করার পথে সেরেনার প্রথম প্রতিপক্ষ রাশিয়ার হার্টথ্রব মারিয়া শারাপোভা। নিজের প্রথম রাউন্ডেই সেরেনা মুখোমুখি হচ্ছেন শারাপোভার। শারাপোভার বিপক্ষে সেরেনার রেকর্ড বেশ উজ্জ্বল। ২১ দেখায় ১৯ বার জয় পেয়েছেন সেরেনা উইলিয়ামস। ফলে প্রথম রাউন্ডে সেরেনা-শারাপোভার ম্যাচের দিকেই চেয়ে থাকবে টেনিস ভক্তরা। পুরো টেনিস বিশ্বেরই চোখ থাকবে এ ম্যাচের প্রতি।
শীর্ষ বাছাইয়ে ওসাকা বলেছেন, ‘অবশ্যই, আমি ম্যাচটি দেখবো। আমার মনে হয়, ওই দিন সবাই তাদের ম্যাচটি দেখতেই কোর্টে যাবে। প্রথম রাউন্ডেই এ ম্যাচ হওয়াতে আমি মোটেও বিস্মিত নই। কারণ, প্রতি গ্র্যান্ডস্ল্যামের শুরুতে কিছু নাটক হয়ে থাকে। এ ম্যাচটিও এমন হতে পারে।’
এবারের আসরে অস্টম বাছাই হিসেবে খেলতে হচ্ছে সেরেনাকে। কোয়ার্টার ফাইনালে উফলে দ্বিতীয় বাছাই অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশলে বার্তির মুখোমুখি হতে পারেন তিনি। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের পর কোন গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিততে পারেননি সেরেনা। গেল বছর ইউএস ওপেনের ফাইনালে উঠেও শিরোপা হাতছাড়া করেছেন। ফাইনালে ওসাকার কাছে হেরে যান সেরেনা।
বার্তি, ওসাকা, হালেপ এবং তৃতীয় বাছাই চেক প্রজাতন্ত্রের কারোলিনা প্লিসকোভাও প্রথম গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। উইলিয়ামসের লক্ষ্য পূরণে বড় বাঁধা হতে পারেন তারা।
সেরেনা বলেন, ‘আমি মনে করি এটি অবশ্যই অর্থবহ। এ মূর্হুতে আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়ে বিভিন্নভাবে ভাবছি এবং এমনকি লক্ষ্যগুলো আরও বড় করে চিন্তা করার চেষ্টা করছি। আমার জীবনের আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে এবং অবশ্যই টেনিস অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। আমি অনুভব করি, এটিই আমার জীবনে সবচেয়ে বড়।’
গতবার সেরেনাকে হারিয়ে প্রথমবারের মত গ্র্যান্ড স্ল্যামের শিরোপা জয় করেন ওসাকা। এবারও শিরোপা জয়ের ব্যাপারে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ওসাকা। বলেন, ‘গত বছর তিন ম্যাচ হেরে আমি এখানে খেলতে এসেছিলাম। তাই আমি শুধুমাত্র একটি ম্যাচ পেতে চেয়েছিলাম। আর সেখান থেকে ঘুড়ে দাঁড়াতে পারি। এ বছর আমি পরপর দু’টি কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছি এবং তাই নিজেকে নিয়ে আমি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।’
দ্বিতীয় বাছাই হিসেবে কোর্টে নামবেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশলে বার্তি। ২০১৮ সালের ইউএস ওপেনের চতুর্থ রাউন্ড খেলেছিলেন তিনি। তবে ক্যারিয়ারে একবার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড রয়েছে বার্তির। চলতি বছরই ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জিতেন তিনি। ওই শিরোপা তাকে সাহস দিচ্ছে ইউএস ওপেনে সাফল্য অর্জনে।
বার্তি বলেন, ‘এই আসরেও আমি ভালো পারফরমেন্স করতে মুখিয়ে আছি। ফ্রেঞ্চ ওপেনে যেভাবে খেলেছি, এভাবে খেলতে পারলে আবারও শিরোপায় স্পর্শ করতে পারব।’
তৃতীয় বাছাই হিসেবে এবারের আসরে খেলবেন চেক প্রজাতন্ত্রের প্লিসকোভা। ২০১৬ সালে ফাইনাল খেললেও শিরোপা জিততে পারেননি তিনি। ফলে এখনও গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয় করতে পারেননি প্লিসকোভা।
দু’টি গ্র্যান্ডস্ল্যামের মালিক সিমোনা হালেপ। তবে ইউএস ওপেনে সেমিফাইনালের গন্ডিই পার হতে পারেননি তিনি। সেটিও ২০১৫ সালে। তবে ২০১৮ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেন ও ২০১৯ সালে উইম্বলডনের শিরোপা জয় করেন হালেপ। শেষ দু’বছর ইউএস ওপেনের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেন হালেপ। তবে উইম্বলডনে সেরেনাকে হারানোর ফলে বেশ আত্মবিশ্বাসী হালেপ।
তিনি বলেন, ‘গত দু’বছর প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছি আমি। এর চেয়ে খারাপ কিছুই হতে পারে না। তবে এখন আমি সত্যি ভালো আছি, ভালো অনুভব করছি এবং বেশ সতেজ বোধ করছি।’