সেমিফাইনালে ওঠার জন্য চার ঘণ্টা ৪৯ মিনিট কোর্টে লড়েছেন। তার আগে তৃতীয় রাউন্ডে ঘাম ঝরানো জয়। সেই রাফায়েল নাদাল কি-না অল্পতেই হার মেনে নিলেন! না, প্রতিপক্ষের কাছে নয়। বেরসিক চোটের কাছে হারলেন ক্লে কোর্টের রাজা।
গত শুক্রবার ফ্ল্যাশিং মিডোয় হুয়ান দেল পেত্রোর বিপক্ষে শুরু থেকেই কেন জানি নাদালের মাঝে একটা ঝিমানো ভাব দেখা যায়। যার ফল প্রথম দুই সেটে হাতেনাতে ধরা দেয়। প্রথম সেট টাইব্রেকারে গড়ায়। সেখানে ৭-৩ গেমে হেরে যান নাদাল। দ্বিতীয় সেটে আরও খেই হারিয়ে ফেলেন। তাতে পেত্রোর কাছে ৬-২ গেমে হারতে হয় স্প্যানিশ সুপারস্টারকে। এরপর যেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটার একটা লক্ষণ। আর ফেরা হলো না কোর্টে। ট্রেইনারের সঙ্গে কথা বলে ম্যাচটা প্রতিপক্ষকে উপহার হিসেবে দিয়ে দিলেন। যাওয়ার বেলায় হাত নেড়ে দর্শকদের থেকে বিদায় নেন নাদাল। পেত্রোর সঙ্গেও কথা হয়। তাতে চোখেমুখে ভেসে ওঠে রাজ্যের হতাশা। টেনিসযোদ্ধার এমন হার। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে নিজের কষ্টগুলো না পাওয়া বেদনাগুলো শেয়ার করলেন সবার সঙ্গে, 'কোর্টে থাকা আমার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল। ব্যথা নিয়েও প্রথম দুটি সেটে ছিলাম। রেজাল্ট ভালো আসেনি। ক্রমেই ব্যথাটা বেড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আমাকে সরতেই হলো।'
১৭বার গ্র্যান্ডস্লাম জিতেছেন। টেনিসের সঙ্গে তার সম্পর্কটা বেশ মিষ্টি। তাই কোর্ট ছেড়ে চলে যাওয়ায় মনটা ভীষণ কাঁদছে নাদালের, 'টিকে থাকাটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আসলে আমি সরে যাওয়ার মতো খেলোয়াড় নই। নিজের সঙ্গে অনেক বোঝাপড়া করেছি, পারিনি।'
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন নাদাল। এবার আর দেখা যাবে না তাকে। ফেভারিটের তকমা নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি। তার পরও এ বছরটা একেবারে খারাপ কাটেনি তার। ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতেছেন। চোট তাকে ছিটকে দিলেও আবারও নবউদ্যোমে ফিরবেন কোর্টে। আবারও শাসন করবেন টেনিসবিশ্ব এই আশাবাদ নাদালের, 'আমি জানি আমি কী করতে পারি। আমার চোট কেমন সেটাও জানি। যত দ্রুত সম্ভব ফেরার চেষ্টা করব।' নাদালের সঙ্গে পুরোটা সময় লড়তে পারলে ভালো লাগত পেত্রোর, 'নাদাল চমৎকার একজন খেলোয়াড়। তার বিপক্ষে খেলা সত্যিই দারুণ ব্যাপার। এভাবে খেলাটা শেষ হবে আশা করিনি। খারাপ লাগছে তার জন্য।'