অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে দারুণ লড়াই দেখলো টেনিস বিশ্ব। দুর্দান্ত লড়াইয়ে স্তেফানোস সিৎসিপাস হারিয়ে রেকর্ড দশম শিরোপা জিতলেন সার্বিয়ান তারকা নোভাক জোকোভিচ। একই সঙ্গে পুরুষ এককে রাফায়েল নাদালের সর্বোচ্চ ২২ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ডও ছুঁলেন তিনি।
হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি এবং মাঠের বাইরের নাটকীয়তাকে পেছনে ফেলে রোববার (২৯ জানুয়ারি) রড লেভার এ্যারেনায় জকোভিচ ৬-৩, ৭-৬ (৭/৪), ৭-৬ (৭/৪) গেমে তৃতীয় বাছাই সিৎসিপাসকে পরাজিত করেন।
পিতা সার্দিয়ানের অনুপস্থিতিতেই শিরোপা জয় করেছেন জকোভিচ। গত বুধবার অনুষ্ঠিত কোয়ার্টার ফাইনালে ছেলের জয়ে আপ্লুত হয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আবয়ব সম্বলিত পতাকা নিয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে ছবিতে পোজ দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
মুহূর্তেই ওই ঘটনাটি ক্ষোভের জন্ম দেয় ইউক্রেনে। টুর্নামেন্টে জকোভিচের পিতাকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানানো হয় ইউক্রেনের পক্ষ থেকে। ম্যাচ জয়ের পরপর প্লেয়ার্স বক্সে ছুটে গিয়ে মাকে আলিঙ্গন করেন জকোভিচ। এ সময় কাঁন্নায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এ সার্বিয় তারকা।
এটি ছিল চতুর্থ বাছাই ৩৫ বছর বয়সি তারকার এক অসাধারণ প্রত্যাবর্তন। কেননা কোভিড ভ্যাকসিন না সেওয়ায় গত বছর এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারেননি জোকোভিচ। এ নিয়ে রাফায়েল নাদালের সমান ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন জোকোভিচ।
এতদিন এককভাবে এ রেকর্ডের মালিক ছিলেন নাদাল। স্প্যানিশ এ তারকা কুচকির ইনজুরিতে পড়ে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিদায় নিয়েছেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় পর্ব থেকে। তবে ক্লে কোর্টে ফেরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নাদাল।
এদিকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ায় সোমবার প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা র্যাংকিংয়েও কিছুটা অবনম ঘটবে নাদালের। অপরদিকে, স্প্যানিশ কিশোর কার্লোস আলকারাজকে পেছনে ফেলে জুনের পর প্রথম র্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থান ফিরে পাবেন জোকোভিচ। অবশ্য ওই তালিকায় শীর্ষ তিনেই থাকছেন সিৎসিপাস।
২০০৮ সালে এই রড লেভার এ্যারেনাতেই প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জয় করেছিলেন জাকোভিচ। যেখানে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের শেষ ষোলর লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন ফেদেরারকে হারিয়ে আলোচনায় আসেন সিৎসিপাস।
শিরোপা জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জোকোভিচ বলেন, “আমি শুধু এটিই বলবো, এ যাবৎকালে আমি যতগুলো টুর্নামেন্টে খেলেছি, তন্মধ্যে এটি ছিল আমার জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং টুর্নামেন্ট। গত বছর আমি এখানে খেলতে পারিনি। এ বছর আবার ফিরে এসেছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাকে অভ্যর্থনা জানানোয় সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যেটি মেলবোর্নে আমার উপস্থিতিকে স্বস্তিদায়ক করে দিয়েছিল। আমি সব সময় নিজেকে সতেজ রাখার চেষ্টা করেছি। এটি ছিল একটি দীর্ঘ পথ পরিক্রমা। শুধু আমার টিম ও পরিবারের সদস্যরাই জানে, গত চার -পাঁচ সপ্তাহ আমরা কিভাবে কাটিয়েছি। পরিস্থিতি বিবেচনায় শুধু এটিই বলবো, এটি আমার জীবনের সেরা একটি জয়।”
২৪ বছর বয়সি সিৎসিপাস ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “নোভাক, আমি কী বলব বুঝতে পারছি না। সংখ্যাই বলে দিচ্ছে আপনি কী অর্জন করেছেন। আপনাকে অভিনন্দন।”
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস