ইউএস ওপেন শেষে অবসরের ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন মার্কিন টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়ামস। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ইউএস ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে অস্ট্রিয়ার আজা টমইয়ানোভিচের কাছে পরাজিত হয়ে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিশ্ব টেনিসের অন্যতম সেরা এ টেনিস তারকা।
৪০ বছর বয়সী সেরেনা ৩ ঘণ্টা ৫ মিনিটের লড়াইয়ে ৭-৫, ৬-৭ (৪/৭), ৬-১ গেমে পরাজিত হয়ে বিদায় নেন। ২৭ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারে ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক বিভিন্ন সময়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। খেলোয়াড়ী জীবনে পেশাদারীত্ব তো অনেকেই মাঝেই থাকে, তবে খেলার পাশাপাশি ব্যক্তিত্ব গুণে নিজেকে সকলের মধ্যে আলাদ একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাটা সবসময়ই সবাই পেরে ওঠে না।
সেরেনা ছিলেন তেমনই একজন ভিন্ন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন খেলোয়াড়। ফলে আর্থার এ্যাশ স্টেডিয়ামে শেষবারের মতো নিজের প্রিয় খেলোয়াড়কে বিদায় জানানোর ক্ষণটা কেউই যেন মিস করতে চাননি। সেরেনা তার ভক্তদের সম্মানের যথাযোগ্য জবাব দিয়েছেন।
ম্যাচ পরবর্তী সাক্ষাৎকারে যখন তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল-ক্যারিয়ার এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনো ধরনের সম্ভাবনা আছে কি-না, তার উত্তরে সেরেনা বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না, তারপরও বলা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই যাত্রাটা অসাধারণ ছিল। ক্যারিয়ারে এ ধরনের যাত্রার অনুভূতি কখনই আমি পাইনি। যে কয়টি মানুষ আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে, ‘সেরেনা এগিয়ে যাও’ তাদের প্রত্যেকের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তাদের কারণেই আজ আমি এখানে।’
সেরেনার ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন তার বাবা রিচার্ড উইলিয়াম ও মা ওরাসিন প্রাইস, বড় বোন ভেনাস উইলিয়াম। সেরেনা বলেন, ‘আমার অভিভাকদের হাত ধরে এ যাত্রা শুরু হয়েছিল। তাদের কারনেই আজ আমার এ অর্জন। সত্যিকার অর্থেই আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’
একই সাথে বড় বোন ভেনাসের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে সেরেনা। বলেন, ‘ভেনাস যদি এখানে না থাকতো তবে আমি কখনই কোর্টের সেরেনা হয়ে উঠতে পারতাম না। সব কিছুর জন্য অনেক ধন্যবাদ। সেরেনা উইলিয়াম যদি টেনিসে বেঁচে থাকে তবে তার একমাত্র কারণ ভেনাস।’
এদিকে, ম্যাচে জয়ী টমইয়ানোভিচ সেরেনার অবসরের ঘোষণায় হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমি সত্যিই দারুণ কষ্ট পাচ্ছি। কারণ অন্য সকলের মতই আমিও সেরেনাকে অনেক ভালোবাসি। টেনিসে সে আমার জন্য যা সহযোগিতা করেছে তা সত্যিই অনন্য। আমি কখনই চিন্তা করিনি তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটির প্রতিপক্ষ আমি হব। তার সবগুলো ফাইনাল ম্যাচের কথা এখন আমার মনে পড়ছে।’
ম্যাচে জয়ী হওয়ার বিষয়ে কখনই ভাবতে পারেননি বলেও টমইয়ানোভিচ স্বীকার করেছেন। কোনো গ্র্যান্ড স্ল্যামের কোয়ার্টার ফাইনালের পরে আর যেতে পারেননি বিশ্বের ৪৯তম র্যাঙ্কধারী ২৯ বছর বয়সী টমইয়ানোভিচ।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস