প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস আতঙ্কের পাশাপাশি বদলে যাওয়া ক্যালেন্ডারের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পারায় আসন্ন ইউএস ওপেনে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রাফায়েল নাদাল। টুইটারে নিজের অ্যাকাউন্টে নাদাল নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাদাল লিখেন, ‘অনেক চিন্তাভাবনার পর আমি ইউএস ওপেনে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পুরো বিশ্বজুড়েই পরিস্থিতি বেশ জটিল, প্রতিদিনই কোভিড-১৯’এ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এখনো আমরা এ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কিছুই করতে পারিনি।’
তিনি আরও লিখেন, ‘এ ধরনের সিদ্ধান্ত আমি কখনই নিতে চাই না। কিন্তু এবার আর কোনভাবেই নিজেকে সামলাতে পারলাম না। কিছুদিনের জন্য আমি কোন দেশ ভ্রমণে যেতে চাই না।’
পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী চলতি বছরের ৩১ আগস্ট থেকে নিউ ইয়র্কে ইউএস ওপেন শুরু হচ্ছে, যা চলবে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর ১৫ দিন পরেই রোলা গাঁরোতে শুরু হবে পিছিয়ে যাওয়া আরেক গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফ্রেঞ্চ ওপেন।
৩৪ বছর বয়সী স্প্যানিশ এ টেনিস তারকা কোভিড-১৯ এর কারণে আটকে যাওয়া আন্তর্জাতিক সূচি নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। নাদাল বলেন, ‘চার মাস কোন ধরনের টেনিস অনুষ্ঠিত না হওয়ায় পুরো ক্যালেন্ডারের চেহারা পাল্টে গেছে। পরিবর্তিত সূচি নিয়েও আমি শঙ্কিত।’
হাঁটুর অস্ত্রোপচারের কারণে ইতোমধ্যেই টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন নাদালের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী রজার ফেদেরার। ১৯৯৯ সালের পর এই প্রথমবারের মতো বিশ্ব টেনিসের এ দুই শীর্ষ তারকা একসাথে কোন গ্র্যান্ড স্ল্যাম থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিলেন।
এখন পর্যন্ত ১৯টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জয় করা নাদাল নিউ ইয়র্কে জিততে পারলে ফেদেরারের সর্বোচ্চ ২০টি স্ল্যামের রেকর্ড স্পর্শ করতে পারতেন। এর আগে জুনে নাদাল সতর্ক করে বলেছিলেন, পুরো পরিস্থিতি বিবেচনায় নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ মনে না করলে ইউএস ওপেনে অংশ নেবেন না।
ইউএস ওপেনের পরপরই ক্লে কোর্টে ফ্রেঞ্চ ওপেন টুর্নামেন্ট আয়োজনের বাস্তবতা নিয়েও বেশ কিছুদিন ধরে নাদাল শঙ্কা জানিয়ে আসছিলেন। তবে এতো কাছাকাছি সময়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি কোর্টে দুটি গ্র্যান্ড স্ল্যামে অংশ নিয়ে খেলোয়াড়রা নিজেদের কতটা মানিয়ে নিতে পারবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
নাদালের দীর্ঘদিনের কোচ টনি জুনে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, কোন গ্র্যান্ড স্ল্যামে স্প্যানিশ তারকা খেলবেন সে ব্যপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি। টনি বলেছেন, ‘পুরো সূচিই যেন অবাবস্তব। বিশেষ করে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের জন্য। এক সাথে লম্বা সময় ধরে এতো বড় টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়। বিষয়টা অবশ্যই এটিপির ভেবে দেখা উচিৎ ছিল।’
নিউ ইয়র্কে নাদাল ও ফেদেরারের খেলার হচ্ছে না -এটা নিশ্চিত। আর সে কারণেই বিশ্বের এক নম্বর তারকা নোভাক জকোভিচের সামনে দারুণ একটি সুযোগ। ক্যারিয়ারের ১৮তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ঘরে তোলার। ইতোমধ্যেই ইউএস ওপেনের এন্ট্রি তালিকায় জকোভিচের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
বিশ্বের শীর্ষ ১০ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে সাতজনের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। তিনবারের ইউএস ওপেন বিজয়ী জকোভিচের সাথে এ তালিকায় আরও রয়েছেন- বিশ্বের তিন নম্বর খেলোয়াড় ডোমিনিক থিয়েম, ৫ নম্বর খেলোয়ার ড্যানিল মেদভেদেভ ও ষষ্ঠ র্যাঙ্কধারী স্টিফানসো টিসিতসিপাস।
নারী বিভাগে এন্ট্রি তালিকায় রয়েছেন- ১৩জন গ্র্যান্ড স্ল্যাম বিজয়ী ও বিশ্বের শীর্ষ ১০ জনের মধ্যে ৯ জন খেলোয়াড়। যদিও ইতোমধ্যেই করোনা ঝুঁকির কারণে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বিশ্বের এক নম্বর তারকা অস্ট্রেলিয়ান অ্যাশলে বার্টি।
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]