নেপালে সদ্য সমাপ্ত ১৩তম সাউথ এশীয় (এসএ) গেমসে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফলতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ১৯টি স্বর্ণ পদক নিয়ে নতুন ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশি ক্রিড়াবিদরা। নতুন রেকর্ড গড়াসহ ছাড়িয়ে গেছে ২০১০ সালের এসএ গেমসের স্বর্ণ পদক জয়ও। ওই আসরে ১৮টি স্বর্ণ পদক জয় করেছিল বাংলাদেশ।
১৯টি স্বর্ণ পদক নিয়ে নতুন ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশি ক্রিড়াবিদরা। নতুন রেকর্ড গড়াসহ ছাড়িয়ে গেছে ২০১০ সালের এসএ গেমসের স্বর্ণ পদক জয়ও। ওই আসরে ১৮টি স্বর্ণ পদক জয় করেছিল বাংলাদেশ।
এবারের আসরে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় সফলতা আরচ্যারিতে। এ ইভেন্টের ১০টি ডিসিপ্লিনের সবকটিতেই স্বর্ণ পদক জয় করেছেন বাংলাদেশের তীরন্দাজরা।
পুরুষ দলগত ইভেন্টের ফাইনালে মো. রোমান সানা, মোহাম্মদ তামিমুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হাকিম আহমেদ রুবেলকে নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ ৫-৩ সেটে ব্যবধানে শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করে স্বর্ণ জয় করে। রিকার্ভ মহিলা দলগত ইভেন্টের ফাইনালে মোসাম্মৎ ইতি খাতুন, মেহনাজ আক্তার মনিরা ও বিউটি রায় ৬-০ সেটের ব্যবধানে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে স্বর্ণ জিতেছে।
রিকার্ভ মিশ্র দলগত ইভেন্টের ফাইনালে মো. রোমান সানা ও ইতি খাতুনের বাংলাদেশ ৬-২ সেটে ভুটানকে হারিয়ে সোনার পদক জয় করে। কম্পাউন্ড পুরুষ দলগত ইভেন্টের ফাইনালে মো. সোহেল রানা, অসীম কুমার দাস ও মোহাম্মদ আশিকুজ্জামানকে নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ ২২৫-২১৪ স্কোরের ব্যবধানে ভুটানকে হারিয়ে স্বর্ণ পদক জয় করে।
কম্পাউন্ড মহিলা দলগত ইভেন্টের ফাইনালে সুস্মিতা বনিক, সুমা বিশ্বাস ও শ্যামলী রায় ২২৬-২১৫ স্কোরের ব্যবধানে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। কম্পাউন্ড মিশ্র দলগত ইভেন্টের ফাইনালে মো. সোহেল রানা ও সুস্মিতা বনিক ১৪৮-১৪০ ব্যবধানে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে বাংলাদেশের জন্য স্বর্ণ জয় করেন।
আরচ্যারির একক ইভেন্টেরও সবকটি স্বর্ণ জয় করেছে বাংলাদেশ। মহিলাদের একক কম্পাউন্ডে সোমা বিশ্বাস শ্রীলঙ্কার অনুরাধা করুনারত্নেকে ১৪২-১৩৪ পয়েন্টে এবং পুরুষ বিভাগে সোহেল ভুটানের তানদিন দর্জিকে ১৩৭-১৩৬ পয়েন্টে হারিয়ে স্বর্ণ পদক জয় করেন।
নারীদের রিকার্ভ এককে ভুটানের সোনম ডেমাকে হারিয়ে স্বর্ণ পদক জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়ার উৎসবে যোগ দেন ১৪ বছর বয়সী ইতি খাতুন। আরচ্যারি থেকে বাংলাদেশের ১০ম ও শেষ স্বর্ণ জয় করেন দেশ সেরা তীরন্দাজ রোমান সানা।পুরুষ রিকার্ভের একক ইভেন্টের ফাইনালে ভুটানের কিনলে টিজেরিংকে ৭-১ সেট পয়েন্টে হারিয়ে স্বর্ণ জয় করেন তিনি।
শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে পুরুষ ক্রিকেট দল স্বর্ণ পদক জয় করলে অতীত রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। এর আগে বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেট দল এসএ গেমসের ইতিহাসে প্রথম স্বর্ণ পদকের দেখা পায় শ্রীলঙ্কাকে দুই রানে হারিয়ে।
এর বাইরে ভারোত্তোলন ও ফেন্সিং থেকেও তিনটি স্বর্ণ পদক জয় করে বাংলাদেশ। মাবিয়া আকতার সীমান্ত ও জিয়ারুল ইসলাম ভারোত্তালন থেকে এবং ফাতেমা মুজিব ফেন্সিং থেকে স্বর্ণ পদক জয় করেন।
নেপালে এবারের এসএ গেমস থেকে সর্বমোট ১৩৮টি পদক জয় করেছে বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা। এর মধ্যে ১৯টি স্বর্ণ, ৩২টি রৌপ্য ও ৮৭টি ব্রোঞ্জ পদক। সব মিলিয়ে ৭ দেশের অংশগ্রহণে এ গেমেসের পদক তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে বাংলাদেশ।
এ তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারত। তাদের সর্বমোট পদক সংখ্যা ৩১২টি। এর মধ্যে রয়েছে ১৭৪টি স্বর্ণ, ৯৩টি রৌপ্য ও ৪৫টি ব্রোঞ্জ পদক। ৫১টি স্বর্ণ, ৬০টি রৌপ্য ও ৯৫টি ব্রোঞ্জ পদকসহ মোট ২০৬টি পদক নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে স্বাগতিক নেপাল।
আর ২৫১টি পদক নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থান নিশ্চিত করেছে শ্রীলঙ্কা। পদকগুলোর মধ্যে রয়েছে ৪০টি স্বর্ণ , ৮৩টি রৌপ্য ও ১২৮টি ব্রোঞ্জ পদক। ১৩১টি পদক নিয়ে তালিকার চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। তাদের সংগ্রহ ৩১টি স্বর্ণ, ৪১টি রৌপ্য ও ৫৯টি ব্রোঞ্জ পদক। এছাড়া তালিকার তলানীতে থাকা মালদ্বীপের সংগ্রহ একটি স্বর্ণ ও ৪টি রৌপ্যসহ মোট ৫টি পদক।