পর্দা উঠল দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত এসএ গেমসের ১৩তম আসরের। রোববার (১ ডিসেম্বর) নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর নবনির্মিত দশরথ স্টেডিয়ামে বর্ণিল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো সাত দেশের ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এ গেমসের।
বিশিষ্ট অতিথি, অংশগ্রহণকারী অ্যাথলেট ও আনুমানিক ৩০ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি গেমসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। আতশবাজীর ব্যাপক ঝলকানি ও বর্ণিল আয়োজনে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মুগ্ধ করেছে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ক্রীড়ামোদিদের।
অংশগ্রহণকারী অ্যাথলেটদের মার্চপাস্টের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া মূল অনুষ্ঠানে ফুটিয়ে তোলা হয় নেপালের সংস্কৃতি, ইতিহাস ঐতিহ্য এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার বিষয়টিও উপস্থাপিত জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। এ সময় সার্কভুক্ত সাত দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও ফুটিয়ে তোলা হয়।
বাংলাদেশের অ্যাথলেটদের মার্চপাস্ট দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের শেফ দ্য মিশন আসাদুজ্জামান কোহিনুর ছোট্ট জাতীয় পতাকা নিয়ে সবার আগে দল নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন। এরপর একে একে মাঠে প্রবেশ করে অংশগ্রহনকারী বাকি দেশের অ্যাথলেটরা। এরপর মাঠে আসে ১৩তম এসএ গেমসের মাসকাট ‘ক্রিষ্ণাসার’।
১০ দিনের এ আঞ্চলিক গেমেসের ২৬টি ডিসিপ্লিনের প্রতিযোগিতায় ৩২৫০ অ্যাথলেটসহ সর্বমোট ৫০ হাজার প্রতিনিধি যোগ দিয়েছে। যেখানে সর্বাধিক অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে স্বাগতিক নেপাল থেকে। তারাই একমাত্র দেশ যারা সবক’টি ডিসিপ্লিনে অংশ নিচ্ছে।
নেপালের ছয়টি প্রদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে সর্বমোট ১৫ হাজার আর্টিস্ট মনোরম পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে। কাঠমান্ডু ও পোখারায় আয়োজিত আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় ২৬টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২৫টিতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ।
ডিসিপ্লিনগুরো হচ্ছে- আর্চ্যারি, অ্যাথলেটিকস, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, বক্সিং, সাইক্লিং, ফুটবল, গলফ, ফ্যান্সিং, খো খো, হ্যান্ডবল, হকি, জুডো, কাবাডি, কারাতে, শ্যুটিং, স্কোয়াশ, সাঁতার, ক্রিকেট, টেবিল টেনিস, তায়কোয়ান্দো, ভলিবল, ভারোত্তোলন, কুস্তি ও উশু।
১৯৮৪ সালে নেপালে শুরু হয়েছিল সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন আয়োজিত এ গেমস। ১৯৯৯ সালে তারা আয়োজন করে অষ্টম আসর। দু’টি আসরেরই উদ্বোধন করেছিলেন নেপালের প্রয়াত রাজা বীরেন্দ্র। ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার কলোম্বোতে আয়োজিত ১০ম আসর দিয়ে গেমসের নতুন নামকরণ করা হয়। সাফ গেএসর পরিবর্তে এর নামকরণ হয় ‘এসএ গেমস’।
এবারের আসরে মোট ৩২৫০ জন অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে। ১ হাজার ১১৯টি পদকের জন্য লড়বেন ক্রীড়াবিদরা। তার মধ্যে স্বর্ণ ৩১৭টি, রৌপ্য ৩১৭টি ও ব্রোঞ্জ ৪৭৯টি।
স্বাগতিক নেপালের সর্বাধিক ৬৪৮ জন অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশে ৬২১ জন, ভারত থেকে ৪৬৮ জন এবং পাকিস্তান ৪১৩ জনের বহর নিয়ে পৌঁছে গেছে নেপালে। তবে সবচেয়ে বড় দল নিয়ে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তাদের ৬২২ জন ক্রীড়াবিদ নিয়ে গেছে নেপালে। মালদ্বীপ ৩৩২ আর ভুটান থেকে গেছে ১৪২ জনের দল।