আট বছরের রুমাইসা আর সাড়ে চার বছরের রাহীল। দু’জনই মোবাইল গেমসে ‘এক্সপার্ট’। খেলাধুলা মানেই তাদের কাছে মোবাইলে নয়তো ইউটিউবে গেমস। নিয়মিত দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, ফুটবল, ক্রিকেট খেলার আনন্দ তাদের নাগালের বাইরে। কারণ মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় তাদের বাসার আশেপাশে সুষ্ঠু পরিবেশে খেলার কোনো মাঠ নেই।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে গত এক বছর ধরে ব্যতিক্রমী একটি কর্মসূচি পালন করছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। গত মাস থেকে এই কর্মসূচিতে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত হয়েছে ইউনিলিভার বাংলাদেশের অন্যতম ব্র্যান্ড সার্ফ এক্সেল।
সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগিতায় ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার মানিক মিয়া এভিনিউ সড়কের প্রায় ২০০ মিটার অংশ প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এই তিন ঘণ্টা সময় শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এখানে এসে নিজের মতো খেলাধুলা, শরীর চর্চা, ব্যায়াম, সাইকেল চালানো, আড্ডাসহ নানা রকম সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নেন। এখানে আসার জন্য কোনো ধরনের নিবন্ধন বা টিকেট কাটাতে হয় না।
শুক্রবার (৪ জানুয়ারি) বরাবরের মতই এই কর্মসূচির ১৪ তম আসর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে। এদিন স্বাভাবিক কর্মসূচির সঙ্গে ইউনিলিভারের ব্র্যান্ড সার্ফ এক্সেলের পক্ষ থেকে শিশু-কিশোরদের জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন থাকবে।
এ আয়োজন সম্পর্কে ইউনিলিভার বাংলাদেশের মার্কেটিং ডিরেক্টর তানজিন ফেরদৌস আলম বলেন, খেলাধুলা শিশুদের অন্যতম প্রধান অধিকার। এই বিশ্বাস থেকে সার্ফ এক্সেল মনে করে, প্রতিভা বিকাশে শিশুদের এই অধিকার রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ খেলার মাধ্যমেই শিশুরা অনেক কিছু শিখে। আর এভাবে শিখতে গেলে কাপড়ে কঠিন দাগ লাগতেই পারে। সেই দাগ দূর করে শিশুদের পুনরায় তাদের জগতে ফিরে যেতে সাহায্য করে সার্ফ এক্সেল।
কর্মসূচি সম্পর্কে ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান জানান, ২০০৬ সাল থেকে প্রতি বছর ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস পালন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের এই দিবস পালনের অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়ক মানিক মিয়া এভিনিউ মাসে অন্তত একটি দিন গাড়িমুক্ত রাখার ঘোষণা দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেই ঘোষণা অনুযায়ী সে বছর নভেম্বরে প্রথম এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর থেকে প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার এ কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে।
এ কর্মসূচিতে গড়ে প্রায় ৫০০ লোক সমবেত হচ্ছে। শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ, প্রবীণ, প্রতিবন্ধী নির্বিশেষে সব ধরনের মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশে নতুন হলেও বিশ্বের অনেক দেশেই এমন ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে আছে বলেও জানান তিনি।