মাঠের ২২ গজে নিয়মিতই ঝড় তুলতেন গতি দিয়ে। একটা সময় এই গতি দিয়েই ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটে। আগ্রাসনই ছিল তার কাছে শেষ কথা। বলা হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার ‘গতিদানব’ খ্যাত মিশেল জনসনের কথা। তার আগুনে বোলিংয়ে সর্বদা তটস্থ থাকতেন বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানরা।
এতদিন ২২ গজেই গতির ঝড় তুলতেন জনসন। মাস চারেক আগে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও এখনো থামেনি গতির সেই ঝড় তোলার নেশা। তাই তো মোটর স্পোর্টসে নাম লিখিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই পেসার। অস্ট্রেলিয়ার বারবাগেলো রেসওয়েতে চলতি সপ্তাহেই অভিষেক হচ্ছে জনসনের। ফর্মুলা ওয়ানের ১০০০ সিরিজে অংশ নেবেন তিনি।
এ নিয়ে জনসনের ভাষ্য, ‘সবসময়ই আমি গাড়ি ভালোবাসি। এর প্রতি আমার এক ধরনের গভীর আসক্তি রয়েছে। যদিও সেটা ক্রিকেটের মতো নয়, তবে এটা আমার হরমোনের সঙ্গেই মিশে আছে। এখানে সবকিছু দ্রুত করতে হয়, সেই সঙ্গে অনেক টেকনিক্যাল বিষয়ও মাথায় রাখতে হয়। এটা শুরু করতে পেরে আমি দারুণ রোমাঞ্চিত।’
প্রথমবার একটি দাতব্য সংস্থার জন্য মোটর স্পোর্টসে অংশ নেন জনসন। সেই থেকেই নেশায় পেয়ে যায়। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শেখার জন্য ভর্তি হয়ে যান ট্রেনিং স্কুলে। হয়ে ওঠেন পুরোদস্তুর রেসার। আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী সপ্তাহে গাড়ি নিয়ে নামবেন তিনি। জনসনের কাছে ফাস্ট বোলিং আর রেসিং দুটোই গতির খেলা।
অবশ্য রেসিংয়ের শুরুটা ক্রিকেটের মতোই কঠিন ছিল। এ নিয়ে জনসন বলেন, ‘কুইন্সল্যান্ডে খেলার সময় আমি প্রথম শোয়েব আখতারের মোকাবিলা করেছিলাম। তার বল আমাকে চারবার আঘাত করেছিল। পরে তাকে বলেছিলাম আমাকে আঘাত করো না। যদিও পরে সব ঠিক হয়ে যায়। এখানেও (রেসিং) প্রথম প্রথম আমার জন্য একই রকম ঘটনা ঘটেছিল।’
২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু হয় জনসনের। ২২ গজের লড়াইয়ে নিয়মিতই গতির ঝড় তোলা এই অজি পেসারের ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা ছিল ২০১৩-১৪ সালে। ২০১৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ঘণ্টায় ১৫৬.৮ কিলোমিটার গতিতে বল করে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি।
২০১৪ সালের একই সঙ্গে আইসিসি ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার এবং টেস্ট প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন জনসন। ১৫৩টি একদিনের ম্যাচে তার ঝুলিতে রয়েছে ২৩৯ উইকেট। এ ছাড়া ৭৩টি টেস্টে তার শিকারের সংখ্যা ৩১৩ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে পেসার হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেট শিকারি তিনি।
ব্যাট হাতেও কম যেতেন না জনসন। সাদা পোশাকে তার নামের পাশে রয়েছে একটি সেঞ্চুরি ও ১১টি হাফ সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতেও রয়েছে দুটি হাফ সেঞ্চুরি। এ ছাড়া দলের প্রয়োজনে ব্যাট থেকে বেরিয়েছে একাধিক ছোট, অথচ ঝড়ো ইনিংসও। চার মাস আগে অনেকটা হুট করেই ক্রিকেটকে বিদায় জানান জনসন।