বিশ্বের নামী-দামী তারকারদের বিভিন্ন ক্লাবে ভিড়িয়ে ফুটবল উন্নয়নে ইতিমধ্যে সৌদি আরব নজর কেড়েছে। এখন ফুটবল ছাড়া বিভিন্ন ক্রীড়া উন্নয়নে জোর দিয়েছে দেশটি। তারই ধারাবাহিকতায় নিজ দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে এবার বাংলাদেশের সহযোগিতায় প্রত্যাশা করলো সৌদি। একই সাথে বাংলাদেশের ক্রীড়া উন্নয়নে এগিয়ে আশার কথা জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রদূত।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সচিবালয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের সাথে এক বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান এসব কথা বলেন।
বৈঠকে বন্ধু প্রতীম দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে সম্মত হন ক্রীড়া মন্ত্রী এবং সৌদি রাষ্ট্রদূত। এ সময় ব্যবসা বাণিজ্য, জনশক্তি রপ্তানি ও ধর্মীয় সহযোগিতার পাশাপাশি যুব ও ক্রীড়ার উন্নয়নেও দুই দেশ একযোগে কাজ করবে মর্মে মতৈক্য হয়।
বাংলাদেশকে সৌদি আরবের ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, “সৌদি আরব সব সময় বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক যৌথ অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয়সমূহ যেমন বাণিজ্য থেকে শুরু করে জনশক্তি, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায়ও বন্ধু প্রতিম দুই দেশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে।”
তিনি আরও বলেন, “সৌদি সরকার যুব ও ক্রীড়ার উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে চায়। বাংলাদেশ স্পোর্টসে অনেক ভালো করছে। বিশেষ করে ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশ শক্তিশালী দল। ক্রিকেটের উন্নয়নে বাংলাদেশ সৌদি আরবকে সহযোগিতা করতে পারে। একইভাবে সৌদি আরবও বাংলাদেশকে ফুটবল, আর্চারী, ব্যাডমিন্টনে সহযোগিতা করতে পারে। যার ফলে উভয় দেশের জনগণই উপকৃত হবে।”
এ সময় সৌদি সরকার বাংলাদেশে ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তত শিল্পেও বিনিয়োগে আগ্রহী বলে জানান রাষ্ট্রদূত। সৌদি রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানিয়ে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী।
নাজমুল হাসান পাপন বলেন, “আমরা সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেট, নারী ফুটবল, আরচ্যারীসহ অন্যান্য খেলাধুলাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছি। বর্তমানে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টে সুবিধা ভোগ করছে। দেশের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশই যুব সমাজ।”
“দেশের এ বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠিকে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে আধুনিক বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে রুপান্তরিত করছে। এ সকল দক্ষ ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জনশক্তি বাংলাদেশ সরকার সৌদি আরবে রফতানী করছে। যারা উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।” -যোগ করেন তিনি।
যুব ও ক্রীড়ার উন্নয়নে উভয় দেশের মধ্যে অচিরেই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলে ক্রীড়ার উন্নয়নে উভয় দেশের দক্ষ অভিজ্ঞ খেলোয়াড় কোচ ও কর্মকর্তা বিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশ উপকৃত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “পারস্পারিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। সৌদি উন্নয়ন সহায়তা ফান্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন স্পোর্টস অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে। এছাড়াও যুব বিনিময় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। যুবকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি ক্রীড়া, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার উপর গুরুত্বারোপ করা হবে।”
সাক্ষাৎকালে যুব ও ক্রীড়া সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ সহ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।