বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম আসরে দারুণ একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভাষার মাসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ক্রিকেটারদের হাতে পড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলা বর্ণ সম্বলিত কালো ব্যাজ। যেখানে বিপিএল খেলতে এসে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররাও এ ব্যাজ পড়ছেন।
ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জন্য একটি বিশেষ মাস। এ মাসের ২১ তারিখে বাংলা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন সালাম বরকতরা। মাতৃভাষার জন্য শহীদ হয়েছেন তারা। দিনটি এখন এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালন করা হয়।
সিলেট পর্বে ১ ফেব্রুয়ারি বিপিএলের কোন ম্যাচ ছিল না। ২ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) দিনের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক সিলেট স্ট্রাইকার্স ভাষার মাসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজেদের জার্সিতে বাংলা বর্ণ দিয়ে সাজিয়ে খেলে।
ওই ম্যাচ থেকে ক্রিকেটাররা হাতে কালো ব্যাজ পড়ে খেলছেন। যেখানে কালো ব্যাজে সাদা রঙে বাংলা বর্ণ লিখা রয়েছে। একই ব্যাজ পড়ে বিপিএলে খেলছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা।
পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ ও শোয়েব মালিকের হাতেও কালো ব্যাজ
এবারের বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আমির জামাল। এছাড়া ফরচুন বরিশালের হয়ে শোয়েব মালিক, রংপুর রাইডারর্সের হয়ে বাবর আজমসহ অন্যান্য দলেও পাকিস্তানি ক্রিকেটার রয়েছেন।
১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলার জন্য পাকিস্তানি মিলেটারিদের গুলিতেই প্রাণ হারিয়েছিলেন দেশের দামাল ছেলেরা। নিজেদের প্রাণের বিনিময়ে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যদা দেওয়ার জন্য লড়াই করেছেন।
উর্দূকে পূর্ব পাকিস্তানি (বর্তমানে বাংলাদেশ) রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদে মিছিল করতে গিয়ে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনীর গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন আবুল বরকত, রফিকউদ্দিন আহমদ, শফিউর রহমান, আবদুস সালাম, আবদুল জব্বাররা।
ভাষার মাসে বাংলায় জার্সি নম্বর এবং নাম লিখে খেলছে সিলেট স্ট্রাইকার্স
এবার সেই শহীদের স্মরণেই বিপিএলে ক্রিকেটারদের হাতে কালো ব্যাজ পড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা বিপিএল খেলতে এসে সেই পাকিস্তানিরাও সালাম-জব্বারদের স্মরণে বাংলা ভাষার বর্ণ লিখা কালো ব্যাজ পড়ে ক্রিকেট খেলছেন।
বিপিএল গভার্নিং বডির সূত্রে জানা গেছে, পুরো ফেব্রুয়ারি জুড়েই বাংলা বর্ণ লিখা কালো ব্যাজ পড়ে খেলবেন ক্রিকেটাররা। এছাড়া এবারের দশম আসরে বিপিএল লোগোতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নকশা পেইন্টিং। যা ইতিমধ্যে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় জয়গা পেয়েছে বাংলাদেশের রিকশা পেইন্টিং।