সমালোচনা দিয়ে শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই সমাপ্তি হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপেএল) নবম আসর। তবে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টিতে আরও সুন্দর ও হারিয়ে যাওয়া জৌলুস ফিরিয়ে আনার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ স্পোর্টস ল’ অ্যান্ড ল’ইয়ার্স ফাউন্ডেশনে আয়োজিত ‘কেমন হলো বিপিএল-২০২৩’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এমন তাগিদ দেওয়া হয়।
বিপিএল শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক অধিনায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রকিবুল হাসান বলেন, “আমি সমালোচনা খুব পছন্দ করি, তবে তা হবে বস্তুনিষ্ট । ১৪টি দেশে এবারের বিপিএল সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে, কিছু কিছু গণমাধ্যম ঢালাওভাবে কিছু ভুল তথ্য প্রচার হয়েছে, যাহা কাম্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয়েছে ডিআরএস এবং এআরএসের আইন নিয়ে অনেকের মাঝে স্বচ্ছ ধারণা ছিল না। আশা করি, ভবিষ্যতে এমন ভুল বোঝাবুঝি আর থাকবে না।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অনুপম হোসেন বলেন, “ক্রীড়াঙ্গন বাঁচাতে হলে সত্যিকারে ক্রীড়াপ্রেমিকে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। এখন আর আগের মত শোনা যায় না যে, স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে বা ছেলের গাড়ি কেনার টাকা দিয়ে সংগঠকরা টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছেন। বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থায় রাজনৈতিক বিবেচনায় এমন কিছু লোক বসে আছেন যে, তাকে অন্য কোথাও কাজে লাগাতে পারছে না, ক্রীড়াঙ্গনের কোন পদে বসিয়ে দিয়েছেন। তারপর যা হওয়ার তাই হচ্ছে।”
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে সামসুল ইসলাম বলেন, “অনলাইনে টিকিট বিক্রয় ব্যবস্থা চালু করতে না পারা, স্টেডিয়ামগুলোতে দর্শকদের জন্য অপ্রতুল সুযোগ-সুবিধা, দীর্ঘমেয়াদী ফ্রাঞ্চাইজি এবং তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ পেশাদারী কাঠমোর মধ্যে আনতে না পারা, হোম এন্ড এওয়ে ম্যাচ না থাকায় দেশের অনেক অঞ্চলের ক্রিকেট প্রেমীরা আন্তরিকভাবে সম্পৃক্ত হয় না। আন্তর্জাতিক মানসম্মত আম্পায়ারিংয়ের অপ্রতুলতা এবং এডিআরএস/ডিআরএস বিতর্ক বিপিএলের জনপ্রিয়তা হারানোর অন্যতম কারণ।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্পোর্টস ল’ অ্যান্ড ল’ইয়ার্স ফাউন্ডেশনের (বিএসএলএলএফ) উপদেষ্টা পর্ষদ চেয়ারম্যান, জাতীয় ক্রীড়া ভাষ্যকার আলফাজউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “ইংরেজি ধারাভাষ্যের পাশাপাশি বাংলা ধারাভাষ্যেও গুরুত্ব দিতে হবে। বিপিএল ব্র্যান্ডিংয়ে খুব পিছিয়ে, সেটির জন্য নতুন নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা শক্তি কাজে লাগাতে হবে। যেমন অফিসিয়াল জার্সি বা অন্যান্য স্মৃতিস্মারক বিক্রি করা যেতে পারে।”
বাংলাদেশ স্পোর্টস ল’ অ্যান্ড ল’ইয়ার্স ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমাদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক নাসরিন সুমি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া পরামর্শক ডা. অনুপম হোসেন, খোদা বকস্ মৃধা ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি পলাশ খান, জাতীয় ক্রীড়া ভাষ্যকার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কল্যান সম্পাদক জুবায়ের রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
অন্যান্যের মাঝে ক্রীড়া ভাষ্যকার ও বিশ্লেষক আমানুল্লাহ সরকার, শেখ রুহুল আমিন, বাংলাদেশ স্পোর্টস ল’ অ্যান্ড ল’ইয়ার্স ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন পর্ষদ সদস্য রিয়াজ মাহমুদ মিঠু, আবিদ সুলতানা, গোলাম মোস্তফা, খান ই ইমরান, আলী ইমাম আল আবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস