প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “খেলার মাঠে সব সময় চিন্তায় রাখতে হবে আমরা যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি, আমরা বিজয়ী জাতি। হার-জিত খেলায় আছে, এটা ঠিক। কিন্তু মাথায় এটা রাখতে হবে যে, আমাকে জিততে হবে।”
রোববার (১৯ জুন) আন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনা ক্রীড়াবিদদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে সম্মাননার চেক বিতরণকালে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
খেলাধুলাকে এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে দেশে বিশ্বমানের ক্রীড়াবিদ তৈরিতে সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “বন্যাও আমরা মোকাবিলা করবো এবং খেলাধুলাও আমাদের চলবে, সবই আমাদের চলবে। এটাই আমাদের জীবন, এটাকেই মেনে নিতে হবে।”
বাস্তবতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সাথে দেশের খেলাধুলায় পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শিল্প প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, “খালি ব্যবসা করবেন আর ইন্ডাষ্ট্রি করবেন আর পয়সা বানাবেন, সেটা তো হয় না। দেশের জন্য তো কিছু করতে হবে। এটাই আমি চাই। এ ম্যাসেজটা আমাদের ব্যবসায়ীদের দিয়ে দেওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “খেলোয়াড়দের যদি ব্যবসায়ীরা নিয়োগ দিয়ে রাখে, তাহলে তারা খেলাধুলার দিকে সম্পূর্ণভাবে মনোযোগ দিতে পারে। জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করার প্রয়োজন হয় না। আমরা যত সহযোগিতা করবো ততো উৎকর্ষতা বাড়বে। যারা খেলবে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনবে, তাদের জীবন-জীবিকার সুযোগটাও আমাদের করে দিতে হবে।”
গ্রামীণ খেলাধুলার প্রচার এবং প্রসারে আরও জোর দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশ কান্ট্রি গেমস এসেসিয়েশনকে স্বীকৃতি দিয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এ সময় সারাদেশের উপজেলা পর্যায়ে নির্মাণাধীন মিনি স্টেডিয়ামের কাজ আরও দ্রুত সম্পন্ন করতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শারীরিক প্রতিবন্ধিদের ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের জন্য বয়ে আনা বিভিন্ন সাফল্যের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধীদের এক সময় বোঝা মনে করা হতো, তবে সুযোগ পেলে তারাও যে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনতে পারে, আজকে তারা প্রমাণ করেছেন। তারা প্রমাণ করেছে যে, তারা দেশের সম্পদ।”
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাফ-২০২১ চ্যাম্পিয়ন নারী অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ফুটবল দলের ৩৩ জন সদস্যসহ মোট ৮৮ জন ক্রীড়াবিদকে আর্থিক সম্মাননা প্রদান করা হয়। অপর ৫৫ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে মুজিববর্ষ ফিফা আন্তর্জাতিক ফুটবল সিরিজ ২০২০-এর ৩৩ জন এবং বঙ্গবন্ধু ৪-জাতি ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২২-এর বিজয়ী ২২ জন খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সাফ-২০২১ চ্যাম্পিয়ন নারী অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন মারিয়া মান্দা, খেলোয়াড় মনিকা চাকমা এবং প্রধান প্রশিক্ষক গোলাম রব্বানী ছোটন, বাংলাদেশ শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন ফয়সাল খান এবং বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন জামাল ভূঁইয়ার হাতে আর্থিক সম্মানীর চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে তিন শ্রেণির ক্রীড়া দলের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি (বাফুফে) কাজী মো. সালাহউদ্দিন, নারী অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্দা এবং বাংলাদেশ শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ফয়সাল খান বক্তব্য রাখেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস