বাড়িতে পোষা কুকুর থাকলে সাধারণত মালিকরা সেটির সাথে সময় কাটান, ঘুরতে বের হন। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো প্রদেশের উইন্ডির বাসিন্দা এরিন স্টিভেনসনও নিজের পোষা কুকুরের সাথে মজার সময় কাটাচ্ছিলেন। তবে কুকুরের সাথে খেলায় মেতে উঠার বিকেলটা আর মজায় থাকেনি। আদরের কুকুরের আঘাতে যেতে হয়েছিল আইসিইউতে। যদিও সেখান থেকে বেঁচে ফিরেছেন তিনি।
ঘটনাটি চলতি বছরের জনুয়ারি মাসের। বিকেলে খেলার এক পর্যায়ে এরিনের মাথায়, থুতুনী এবং দাঁতে মাথা দিয়ে আঘাত করে কুকুরটি। প্রথমে বিষয়টি তিন দিন পর্যন্ত পাত্তা দেননি এরিক। তবে আঘাতগুলো যে অন্য দিনের মতো ছিল না -তা বুঝতে তিনদিন লেগে যায় ৪১ বছর বয়সী এরিনের।
ওই ঘটনার তিনদিন পর এক সকালে ঘুম থেকে ওঠে এরিন বুঝতে পারেন তিনি খাবার গিলতে পারছেন না।মুখের একপাশ ফুলে গেছে। সাথে সাথেই হাসপাতালে যান এরিন। সেখানেও নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাকে।
হাসপাতালে চিকিৎসকরাও এরিনের রোগ নির্ণয় করতে দ্বিধায় পড়ে যান। বিভিন্ন পরীক্ষা করেও কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না যে, আসলেই কী হয়েছে।
তবে অবস্থার অবনতি হতে থাকা এরিক এক সময় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যান। পরে দ্রুতই তাকে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। সেখানে পুরো এক সপ্তাহ থাকতে হয়েছে। তবে প্রতিনিয়ত এরিকের বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালে থেকেই মর্মান্তিক এমন ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন এরিন স্টিভেনসন। সাক্ষাৎকারে এরিন মর্মান্তিক এ সফরের পুরো স্মৃতিচারণ করেছেন।
তিনি বলেন, “আমাকে লাইফ-সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। আমি সঠিক জানি না, স্ক্যাই (কুকুর) হয়তো আমার দাঁতে আঘাত করেছিল। আমার মুখে একটা ফোড়া হয়েছিল, যেটি খুব বেশি ফুলে গেছিল।”
মালিক যে আঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালের বিছানাতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন, বাড়িতে থাকা কুকুর কিছুই জানতো না। সাধারনত বিভিন্ন দেশে কুকুরদের বাড়িতে পোষা হয় পরিবারের সদ্যসদের মতো। তাদের সাথে যোগাযোগের একটা মাধ্যমও তৈরি হয়।
এরিনের মুখের ফোলা নিয়ে চিকিৎসকেরা যথেষ্ট চিন্তিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন এরিন। বলেন, “তারা (চিকিৎসকরা) চিন্তিত ছিল যে, যদি ফোলা না কমে, তাহলে আমার শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে যাবে! আমাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল এবং আমার জন্য কৃত্রিমভাবে শ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল।”
আইসিইউ-তে থাকার সময় চিকিৎসকরা এরিনের আসল সমস্যা ধরতে পারেন। চিকিৎসকরা জানান, কুকুরের মাথার আঘাত এরিনের দাঁতে ফাটল ধরেছিল। এছাড়া একটি ছিন্দ্র হয়েছিল, যা মারাত্মক আকার ধারণ করছিল।
চিকিৎসকরা এরিনের দুটি দাঁত তুলে ফেলেছেন। এছাড়া ইনফেকশন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য এরিনে ঘাড়ে একটি বিশেষ ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।
এরিন বলেন, “আমাকে তারা (চিকিৎসক) লাইফ-সাপোর্টে রেখেছিলেন। তারা নিশ্চিত হতে চাইছিলেন যে, আমার আর কোথাও ইনফেকশন ছড়িয়েছে কি-না। কিন্তু আমার আরও একটা ইনফেকশন হয়েছিল। পরবর্তীতে চিকিৎসকেরা যেটির সমাধান করেছেন।”
বেঁচে ফিরলেও এরিককে এখনই শঙ্কামুক্ত বলছেন না চিকিৎসকরা। কারণ, তার শরীরে এখনও বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। যে কারণে হাসপাতাল থেকে এখনও ছাড় পাননি এরিন।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি/আরএস