‘জিগারী টু ইউ ওয়েলকাম’। অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্ট নগরীতে এমন উক্তি দিয়েই আজ (বুধবার) গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কমনওয়েলথ গেমসের খেলোয়াড়, কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত জানালেন কমনওয়েলথ গেমস কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পিটার বিওয়েটে।
স্থানীয় সময় রাত আটটায় মাঠে প্রবেশ করেন প্রিন্স চার্লস। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন হয় তাকে বরণের আনুষ্ঠানিকতা। এ সময় ডায়াসে হাজির ছিলেন সিজিএফের প্রেসিডেন্ট লুইস মার্টিন। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন মেয়র টম টেট। এর পর অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলন সম্পন্ন হবার পর আতাশবাজি পুড়িয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ববি অ্যালুর কণ্ঠে ভেসে আসে ‘উকুলেলে’ শিরোনামের গান। গানের সঙ্গে একদল পারফর্মারের চমৎকার উপস্থাপনায় তুলে আনা হয় গোল্ডকোস্টের সমুদ্র তটে বিনোদন ও সার্ফিংয়ের দৃশ্য। পরের উপস্থাপনায় ছিল সুমদ্র স্নানে এসে ডুবন্ত পর্যটকদের কিভাবে উদ্ধার করে লাইফ গার্ডরা। এর সঙ্গে মিশেল ছিল স্থানীয় আদিবাসিদের সংস্কৃতি।
এই দুই উপস্থাপনার পরেই শুরু হয় অ্যাথলেটদের মার্চ ফাস্ট। প্রথমে মাঠে প্রবেশ করে গত আসরের আয়োজক দেশ স্কটল্যান্ড। মার্চ পাস্টেও প্রাধান্য দেয়া হয় সার্ফিংকে। সার্ফিংময় ওই মার্চ পাস্টে পতকাবাহকের সঙ্গে দেশের নাম সম্বলিত প্লেকার্ডের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় সার্ফিং বোট।
এমনিতেই পর্যটন নগরী। সর্বত্রই ঝকঝকে, তকতকে। বিশ্বের শির্ষস্থনীয় পর্যটন নগরী বলে কথা। অস্ট্রেলিয়ার সেই পর্যটন নগরী গোলকোস্টে আজ সন্ধ্যার ২১তম কমনওয়েলথ গেমসের উদ্দোধনী অনুষ্ঠানের কারণে পুরো নগরী জুড়ে ছিল সাজ সাজ রব। স্থানীয় মানুষের মধ্যে ছিল বাড়তি উচ্ছ্বাস।
আগে থেকেই নির্ধারণ ছিল কারারা স্টেডিযামে গেমেসের উদ্বোধন হবে। সে অনুযায়ী গোটা স্টেডিয়ামের চতুর্দিকে ছিল বাড়তি নিরাপত্তা। এরই মধ্যে স্বাগতিক অস্ট্রেরিয়ার স্বেচ্ছাসেবকদের চমৎকার তৎপরতার মধ্যে সময়ের আগেই পুরো স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
আনুমানিক ৪০ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে স্টেডিয়ামে এরপর একে একে প্রবেশ করে কানাডা, ইংল্যান্ড, জিব্রাল্টা, নিউজার্সি, মাল্টা, উত্তর আয়ারল্যান্ডসহ কমনওয়েলথভুক্ত দেশের অ্যাথলেটরা। এশিয়া অঞ্চলের প্রথম দেশ হিসেবে মাঠে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। কৃতি শ্যুটার আবদুল্লাহেল বাকি বহন করেন লাল সবুজের পতাকা। সবশেষে মাঠে প্রবেশ করে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিশাল বহর।
এরপর একেএকে দুটি সঙ্গীত পরিবেশনের পর অংশগ্রহণকারী দেশের পতাকা নিয়ে উপস্থাপন করা হয় আরেকটি চমৎকার পরিবেশনা। এ সময় কমনওয়েলথ গেমস ফাউন্ডেশনের পতাকা বহন করে নিয়ে আসেন আগের আসরে স্বর্ণপদক জয়ী ছয় শীর্ষ ক্রীড়াবিদ। পরে উত্তোলন করা হয় পতাকাটি। অস্ট্রেলিয়ান অ্যাথলেট লিসা আলেক্সান্ডার শপথ বাক্য পাঠ করান। এরপর গেমস এর মশাল নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন অলিম্পিক ও কমনওয়েলথ স্বর্ণ বিজয়ী কার্ট ফেয়ারলি।
দেশটির তারকা অ্যাথলেট ব্র্যাড মিগি, লিজ এলিজ ও ব্রেন্ট লিভারমোররের হাত ঘুরে সবশেষে মশাল পৌঁছে সার্লি পিয়ারসনের কাছে। তিনি মশালটি তুলে দেন গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমস কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পিটার বিওয়েটে ও কমনওলেথ গেমস ফেডারেশনের সভাপতি লুইস মর্টিনের হাতে। তারা দু’জন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লসের হাতে তুলে দেন বাকিমহ্যাম প্যালেস থেকে কমনওযেলথভুক্ত দেশ ঘুরে গোল্ড কোস্টে পৌঁছানো মশালটি। এরপর তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে গেমসের উদ্ধোধন ঘোষণা করেন।