বাংলাদেশ যুব গেমস প্রথম আসরের পদকের লড়াইয়ে প্রথম স্বর্ণপদকটি এসেছে শ্যুটিং থেকে। রোববার প্রথম স্বর্ণপদক জিতেছে পাবনার মেহেদী হাসান মিলন।
এদিন সুইমিং পুলে ঝড় তুলেছেন ঢাকা বিভাগের আরিফুল। ৩টি ইভেন্টে অংশ নিয়ে সবক’টিতেই স্বর্ণপদক জিতেছে এ তরুণ। বালিকা বিভাগে দাপট দেখিয়েছেন খুলনা বিভাগের সুম্মা খাতুন। দুটি ইভেন্টে অংশ নেয়া খুলনা বিভাগের এই সাঁতারু দুটিতেই স্বর্ণ জিতেছেন।
যুব গেমসে প্রথম স্বর্ণ লিমনের
বাংলাদেশ যুব গেমসের চূড়ান্ত পর্বের দ্বিতীয় দিন আজ (রোববার) শ্যুটিং ডিসিপ্লিনের ৬টি স্বর্ণপদকের লড়াই শেষ হয়েছে। শ্যুটিংয়ের প্রথম স্বর্ণজয়ী পাবনার মো. মেহেদী হাসান লিমন। পাবনা রাইফেল ক্লাবের এই শ্যুটার .১৭৭ ওপেন সাইট এয়ার রাইফেল (তরুণ) বিভাগে ২৪৭ স্কোর গড়ে স্বর্ণ জিতে নেন। এই ইভেন্টে গুলশান শ্যুটিং ক্লাবের ফজলে রাব্বি ২৩৯ স্কোর গড়ে রৌপ্য এবং নেত্রকোনা রাইফেল ক্লাবের ফারদিন মো. অর্ণব ২৩৬ স্কোর গড়ে তাম্র পদক জেতেন।
একই ইভেন্টে (তরুণী) বিভাগে পিরোজপুর রাইফেল ক্লাবের জিন্নাত কবির সূচনা ২৩৫ স্কোর গড়ে স্বর্ণ, মেট্রোপলিটন শ্যুটিং ক্লাব চট্টগ্রামের সায়রা আরেফিন ২৩১ স্কোর গড়ে রৌপ্য এবং বগুড়া রাইফেল ক্লাবের শিল্পা রায় ২১২ স্কোর গড়ে তাম্র পদক জয় করেন।
তরুণদের .১৭৭ ম্যাচ এয়ার পিস্তলে নেত্রকোনা রাইফেল ক্লাবের শেখ শাহজালাল সাদমান ২৭০ স্কোর গড়ে স্বর্ণ, শুলশান শ্যুটিং ক্লাবের রওনক চৌধুরী ২৬২ স্কোর গড়ে রৌপ্য এবং মেট্রোপলিটন শ্যুটিং ক্লাব চট্টগ্রামের প্রতিযোগি শাকের আহমেদ ২৫৩ স্কোর গড়ে তাম্র পদক জেতেন। একই ইভেন্টে তরুণী বিভাগে কুষ্টিয়া রাইফেল ক্লাবের নিলুফার ইয়াসমিন ২৭৩ স্কোর গড়ে স্বর্ণ, গুলশান শ্যুটিং ক্লাবের শামী আক্তার ২৬৪ স্কোর গড়ে রৌপ্য এবং পাবনা রাইফেল ক্লাবের নাবিলা তাবাসসুম ২৫৬ স্কোর গড়ে তাম্র জেতেন।
তরুণদের .১৭৭ ম্যাচ এয়ার রাইফেল ইভেন্টে কিশোরগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের সাকিবুল আলম আল-আমিন ২৮১ স্কোর গড়ে স্বর্ণ, মেট্রোপলিটন শ্যুটিং ক্লাব চট্টগ্রামের কাজী সাজেদুল হোসেন ২৭৭ স্কোর গড়ে রৌপ্য এবং নেত্রকোনা রাইফেল ক্লাবের মুশফিকুর রহমান ২৭৫ স্কোর গড়ে তাম্র পদক জেতেন। তরুণীদের এই ইভেন্টে কুষ্টিয়া রাইফেল ক্লাবের ফারবিন চৌধুরী রিথীকা ২৯৪ স্কোর গড়ে স্বর্ণ, গুলশান শ্যুটিং ক্লাব ঢাকার মায়েদা মুমতাহিনা ২৯০ স্কোর গড়ে রৌপ্য এবং চট্টগ্রাম রাইফেল ক্লাবের সুমাইয়া মোরশেদ ২৭৯ স্কোর গড়ে তাম্র জেতেন।
খেলা শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার (মেডেল) এবং সার্টিফিকেট তুলে নেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের উপ-মহাসচিব এবং ভলিবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মিকু। এ সময় বাংলাদেশ শ্যুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বর্ণ জয়ের অনুভূতি জানিয়ে লিমন বলেন, ‘খুবই আনন্দ লাগছে। ভাষায় প্রকাশের নয়। এমন একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করায় আমি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানাই। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমাদের মতো অনেকেই বের হয়ে আসবে। শুনেছি এখানে যারা ভালো করবে তাদের ফেডারেশনে রেখে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এটা হলে সত্যিই অনেক ভালো হবে।’
সাঁতারে আরিফুল-সুম্মার দাপট
প্রত্যাশামাফিকই সুইমিং ঝড় তুললেন তরুণ সাঁতারু আরিফুল ইসলাম। বাংলাদেশ যুব গেমসের সাঁতারে দপুটে ভূমিকায় দেখা গেল তাকে। আজ মিরপুর জাতীয় সুইমিং কমপ্রেক্সে তিনটি ইভেন্টে অংশ নিয়ে তিনটিতেই স্বর্ণপ্রদক জিতেছেন ঢাকা বিভাগের এই সাঁতারু। বালিকা বিভাগে দাপট দেখিয়েছেন সুম্মা খাতুন। দুটি ইভেন্টে অংশ নেয়া খুলনা বিভাগের এই সাঁতারু দুটিতেই স্বর্ণ জিতেছেন।
বালক ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলে স্বর্ণ জেতেন আরিফুল ইসলাম। সময় নিয়েছেন ২৫.২২ সেকেন্ড। ব্রোঞ্জ ও সিলভার জিতেছেন যথাক্রমে ঢাকা বিভাগের টিটু মিয়া ও চট্টগ্রাম বিভাগের নুরুল ইসলাম। বালিকা বিভাগের ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট উঠেছে সুম্মা খাতুনের মাথায়। সময় নিয়েছেন ৩০.৭৮ সেকেন্ড। ব্রোঞ্জ ও সিলভার জিতেছেন যথাক্রমে খুলনা বিভোগের খাদিজা আক্তার বৃষ্টি ও ঢাকা বিভাগের সেতু আক্তার।
৫০ মিটার ব্যাকস্ট্রোক বালক বিভাগে স্বর্ণ জিতেছেন খুলনা বিভাগের আল-আমিন। এই ইভেন্টে বালিকা বিভাগ থেকে স্বর্ণ জেতেন খুলনা বিভাগের রুপা খাতুন। ব্রোঞ্জ ও সিলভার জিতেছেন যথাক্রমে খুলনা বিভাগের রিয়া আক্তার মনি ও চট্টগ্রামের শ্রাবন্তী আক্তার।
৫০ মিটার ব্যাস্টস্ট্রোকে বরাবরের মতো শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছেন আরিফুল ইসলাম। প্রিয় এই ইভেন্টে স্বর্ণ জিতে নেয়ার পথে ৩১.৩৭ সেকেন্ড সময় ব্যয় করেন তিনি। ব্রোঞ্জ জিতেছেন ঢাকার ইমন মিয়া ও সিলভার জিতেছেন চট্টগ্রামের নুরুল ইসলাম। এই ইভেন্টে বালিকা বিভাগ থেকে স্বর্ণ জিতেছেন খুলনা বিভাগের খাদিজা আক্তার বৃষ্টি। ব্রোঞ্জ ও সিলভার জিতেছেন যথাক্রমে খুলনার মুক্তি খাতুন ও রাজশাহীর রোকেয়া আক্তার।
১০০ মিটার ফ্রি স্টাইলেও আরিফুলের রাজত্ব। ৫৫.৭১ সেকেন্ডে স্বর্ণ জিতে নেন কমনওয়েলথ গেমসে দারুণ কিছু করার অপ্রেক্ষায় থাকা তরুণ এই সাঁতারু। ব্রোঞ্জ ও সিলভার জিতেছেন যথাক্রমে ঢাকার টিটু মিয়া ও চট্টগ্রামের নুরুল ইসলাম। এই ইভেন্টের বালিকা বিভাগ থেকে স্বর্ণ জিতেছেন ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলেও স্বর্ণ জেতা সুম্মা খাতুন। ব্রোঞ্জ জিতেছেন খুলনার মুক্তি খাতুন ও সিলভার গেছে চট্টগ্রামের ড থ্রু প্র্রুর ঝুলিতে।
তিনটি ইভেন্টে স্বর্ণ জিতে উচ্ছ্বাসিত আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘তিনটি স্বর্ণ জিতে অবশ্যই ভালো লাগছে। তবে খুব বেশি খুশি হওয়ার কিছু নেই। কারণ, এই আসরটিকে আমি কমনওয়েলথ গেমসের প্রস্তুতি হিসেবে নিয়েছি। এ আসরে ভালো কিছু করে দেখাতে চাই। আর এই আসরে স্বর্ণ জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী ছিলাম।’