প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সাকিব আল হাসানের একটা ইন্টারভিউ প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে নানা বিষয়ের সঙ্গে আলোচনায় এসেছে বিশ্বকাপ চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে দলের ভেতরের খবর বাইরে আসা নিয়েও।
প্রসঙ্গক্রমে সাকিব যা বলেছেন তা হুবুহু তুলে ধরা হলো- ‘বিশ্বকাপের সময় সাইফউদ্দিনকে নিয়ে একটা সংবাদ ছাপা হলো। ও নাকি বড় দলের বিপক্ষে ভয়ে খেলে না। এসব খবর কি দলের জন্য ভালো? দলে যারা ছিল তারা জানে এই নিউজ কে করিয়েছে। সাইফউদ্দিন কি খেলেনি? একটা দলকে মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়ার জন্য এসবই যথেষ্ট।’
এমন আরও একটি মন্তব্য নিয়ে জলঘোলা সৃষ্টি হচ্ছে আবার। যা শুরু হয়েছে মাশরাফি এমপি হওয়ার পর। সাধারণত এসব জিনিস নিয়ে মাথা ঘামাতে ইচ্ছা করে না। তবুও দিনের পর দিন একটা মানুষের ওপর যেভাবে সব দায়ভার চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাতে বরং প্রশ্ন জাগে, কেউ মাশরাফিরই বিরুদ্ধেই প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে কি-না!
সাকিব আল হাসানের এই ইন্টারভিউসহ আগে এবং পরে কোনো সংবাদেই উল্লেখ করা হয়নি দলের ভেতরের খবরগুলো মাশরাফি বাইরে বের করছেন। জাগো নিউজে সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত একটা সংবাদে বলা হয়েছে বিশ্বকাপ চলাকালীন এক আড্ডায় মাশরাফি উদাহরণ টানতে গিয়ে বলেছিলেন ‘সাকিব তো রিয়াদকেও বাদ দিতে চেয়েছে।’ এই সংবাদের কোথাও লেখা নেই মাশরাফি ড্রেসিং রুমের কথা বলেছেন।
তাহলে ক্রিকবাজে প্রকাশিত সংবাদে যে ড্রেসিং রুমের গল্প লেখা হলো। সেটা কে বললো? মাশরাফি? তাহলে সে কথা কেন জাগো নিউজে প্রকাশিত হলো না? এতটুকু যখন লিখতে পেরেছে, বাকিটাও লিখতে পারতো নিশ্চয়ই। লিখেনি, কারণ মাশরাফি বলেননি।
বেশ কয়েকটা ব্যাপার নিয়ে সমস্যা। সবচেয়ে বড় সমস্যা মাশরাফির সাথে সাংবাদিকদের ঘনিষ্ঠতা। যে সমস্যাকে জ্বালা-পোড়ায় পরিণত করেছে মাশরাফির সাথে সাংবাদিকদের কয়েকটি ছবি। যে কারণে সবাই মনে করছেন তিনিই বোধ হয় নিউজগুলো করাচ্ছেন।
ভয়ংকর যেই অভিযোগটা করা হয় সাঈফুদ্দিনের বিরুদ্ধে ইচ্ছে করে নিউজটা করিয়েছেন মাশরাফি। আমাকে কেউ প্লিজ বলেন, মাশরাফির সাথে তার কিসের শত্রুতা? ধরেন থাকলোই, তো? আপনার বিবেক কে প্রশ্ন করুন তো, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরে মাশরাফি কারো ক্যারিয়ার নষ্ট করতে চাইছেন?
প্রথমত, বাংলাদেশের প্রায় সব ক্রিকেটারের (সাকিবসহ) সাথেই সাংবাদিকদের ভালো সম্পর্ক আছে। প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই দুয়েকজন ক্রিকেটারের সাথে আছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও। দ্বিতীয়ত, আপনি একটি অফিসে কর্মরত, সেখানে ছয় মাস একসাথে কাজ করলেও আপনার কারো না কারো সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হওয়ার কথা। যদি আপনার মধ্যে অতিমানবীয় কিছু না থাকে, তাহলে অবশ্যই হবে।
তাহলে প্রায় দেড় যুগ ধরে যাদের প্রায় প্রতিদিন দেখে আসছেন, তাদের সাথে কেনো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠবে না? তাও মাশরাফির মতো কোনো মনখোলা মানুষের? তার সাথে তো গত ছয় মাস ধরে সাংবাদিকদের সাথে ভালো সম্পর্ক না, এই সম্পর্ক বহু পুরনো। তাহলে কেনো এখনই কথা উঠছে?
কারণ, আমাদের একজন দরকার, যাকে ইচ্ছে মতো গালি দেওয়া যাবে। ব্লেইম দেওয়া যাবে। আমাদের বাঙালিদের কাছে সেটাই সবচেয়ে জরুরি, কাউকে না কাউকে আমাদের প্রয়োজন। আশা রাখবো আমাদের এই কাউকে না কাউকের মধ্যে কোনো একদিন ‘আমিও’ পড়ে যাব।
লেখক : মাহমুদুল হাসান বাপ্পি, শিক্ষার্থী ও ক্রীড়া লেখক।
[স্পোর্টমেইল২৪.কমে সকল মতামত লেখকের নিজস্ব। এর জন্য কর্তৃপক্ষ কোন দায় বহন করবে না। চাইলে আপনিও খেলাধুলার যেকোন বিষয় নিয়ে আপনার চিন্তা, যুক্তি বা মতামত লিখতে পারেন। আমরা আপনার মতামত তুলে ধরবো আমাদের পোর্টালে। লেখা পাঠাতে পারেন এই ঠিকানায়- sportsmailinfo@gmail.com]