বিপিএল না বলে আপনি এখন বলতে পারেন ‘এমপিএল’ অর্থাৎ মাশরাফি প্রিমিয়ার লিগ। কেন এ কথা বলছি ভাবছেন? বলবোই না কেন, বলেন? পাঁচবারের আসরে চারবারই যে ব্যক্তিটির হাতে ফাইনালের ট্রফি ওঠে, তার বন্ধনা না করে তো উপায় নেই।
অন্যদিকে ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল। ভয়ঙ্কর নাম, ভয়ঙ্কর কাম। গতকাল খুব গর্ব করেই ঢাকা ডায়নামাইটস এর কোচ সুজন মাহমুদ নিজের দলকে নিয়ে গর্ব করেছিলেন। ভেবেছিলেন জিতাটা তাদের হাতের মুঠোয়। কিন্তু যে দলে বিপক্ষে গেইল, চার্লস, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, মাশরাফির মত খেলোয়াররা রয়েছে তাদের এ গর্ব- খর্ব করাটা কোন ব্যাপারই না, তা প্রমাণ হলো।
দানবীয় ব্যাটিং, টর্নেডোর গতিতে রান তোলা, আর স্বভাব সূলভ হাসি। এ মারকুটে ব্যাটসম্যান যে যেকোন মুহূর্তে জ্বলে উঠতে পারে তা ভুলেই গিয়েছিল বোধয় ঢাকার কোচ।
যিনি নিজেই নিজের রেকর্ড ভাঙেন; তিনিই গেইল। ফাইনালে ঢাকার বিপক্ষে এ দানব ব্যাটসম্যান হাঁকালেন ১৮টি ছক্কা, যা কিনা তার নিজের রেকর্ডকে ছাড়ালেন। আইপিএল এ এ দানব ১৭টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন এক ম্যাচে। এ দিন মিরপুরে সে রেকর্ডকে টর্নেডো গতিতে ভাঙলেন এ হার্ডহিটার, ভয়ঙ্কর ক্রিকেট দানব, ঠান্ডা মাথার গরম খেলোয়ার ক্রিস গেইল।
শুধু তাই নয়, তুলে নিলেন শতরান। জয়ী করলেন মাশরাফির রংপুরকে। এ দিন মাশরাফিও বোলিং এ জ্বলে উঠেছিলেন, ফিল্ডিংয়েও অসাধারণ নৈপুণ্য ছিল তার। তার পর গেইল এর ব্যাটিং হৃদয় ছুয়েছে সবার।
মাশরাফি আর গেইলের মাঝে রয়েছে অসাধারণ সম্পর্ক। সেদিন সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি মজা করে বলেছিলেন, ‘গেইলকে তিনি দেখেছেন যেদিন ভালো ঘুমান, সেদিন অন্যের ঘুম সে হারাম করেন। গেইলের ভালো খেলার রহস্য ‘ঘুম।’
তবে কী আমরা ধরে নেব আজ ১৪৬ রানের ইনিংনের পেছনের রহস্য ভালো ঘুম। না হেসে উপায় নেই। তবে এ ব্যাটিং দানব ঘুমাতে বেশি পছন্দ করেন এবং সেটার প্রমাণও দিয়েছেন মাশরাফি তার ঠাট্টার ছলে।
তবে মেনে নিতে হবে মাশরাফি সত্যি ভাগ্যবান। এমনিতেই যতক্ষণ মাঠে থাকেন তার মত নমনীয় খেলোয়ার বোধয় বিশ্বে খুব কম দেখা যায়। বিনয়ী ম্যাশ, বিনয়ের সাথে ম্যাচ করেন শেষ। আর এতেই যেন বিপক্ষ দলের সব শেষ।
গত পাঁচ আসরে তিনি তিনটি দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন ঢাকা, কুমিল্লা, রংপুর। ঢাকাতে দুবার এবং কুমিল্লা ও রংপুরকে একবার করে শিরোপা এনে দিয়েছেন তিনি। এটি একটি রেকর্ডও বলতে পারেন। তবে গতবার কুমিল্লার সাথে কোন এক কারণে মন কষাকষির বদৌলতে ম্যাশকে মূল্যায়ণ করার সুযোগ পায় রংপুর। আর এতেই বাজিমাত রংপুর।
ভাগ্যদেবতাকে দলে নিয়ে পুরো দলের ভগ্য ফিরালেন রংপুর রাইডার্স। ট্রফি নিয়েই ফিরলেন ঘরে। সব শেষে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ান ‘রংপুর রাইডার্স’।