স্থানীয় একটা মাঠে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর খেলা শুরু হয়। মাঠের চারপাশে লাইটিং করা বাঁশ, দড়ি, রঙিন কাগজ দিয়ে বাউন্ডারি লাইন ঠিক করা হয়েছে। পেছনে উৎসুক দর্শকদের ভিড়। এ টুর্নামেন্ট যারা আয়োজন করেছে, তারা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। কারণ, যারা ক্রিকেট খেলছে এবং যারা খেলা দেখতে এসেছে, তারা কিছু ভালো সময় পার করছে। এটা আমাদের তরুণ সমাজের জন্য অবশ্যই ভালো দিক।
কিন্তু একটা বিষয় দেখে অবাক হলাম, এখানে বোলার থ্রো বোলিং করছে। তার মানে যারা ক্রিকেট খেলছে এবং যারা দেখছে, তারা শুধু বাউন্ডারির বিনোদন উপভোগ করার জন্যই অপেক্ষা করছে।
উইকেট পতন এখানে মুখ্য নয়। রান কিছুটা আটকে রাখতে পারলেই খুশি। তাছাড়া থ্রো বল করার জন্য কোনো বোলার হওয়া লাগে না। যে কেউ করতে পারে। কোনো প্রাকটিস করারও প্রয়োজন নেই।
আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টগুলোতেও একই ধরনের অবস্থা শুরু হয়েছে। টেস্টের কথা বাদই দিলাম, ওয়ানডে ম্যাচকেই এখন অনেকে লম্বা সময় মনে করে। সময় এখন টি-টুয়েন্টির। আবার, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পাশাপাশি এখন টি-টেন অর্থাৎ দশ ওভারের ক্রিকেট ম্যাচও দেখা যাচ্ছে।
টি-টোয়েন্টির দাপট, মাঠ ছোট করে ফেলা, বেনিফিট অব ডাউট ইত্যাদি বিভিন্ন সুবিধা ব্যাটাররা পাওয়ার কারণে এমনিতেই ক্রিকেটে আর আগের মতো বিশ্বমানের বোলার দেখা যায় না।
তাছাড়া, মাত্র চার ওভার বোলিং করে নিজেকে প্রমাণ করা কতটুকু সম্ভব! আর ২০ ওভারের ম্যাচে ১০ জন ব্যাটারকে আউট করা কী ছেলেখেলা ব্যাপার?
একটা সময় ওয়াসিম আকরাম, কপিল দেব, গ্লেন ম্যাকগ্রাদের বোলিং দেখার জন্যও মানুষ টেলিভিশনের সামনে বসে থাকতো। টি-টোয়েন্টির স্বল্প ওভারের ম্যাচে ব্যাটিং তাণ্ডবের প্রভাবে এমনিতেই সেই মানের বোলার তৈরি হচ্ছে না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ক্রিকেটকে কেন শুধু ব্যাটারদের খেলা বানানো হচ্ছে? খেলাটিকে শুধু বিনোদনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রম হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে কেন?
লেখক- রিয়াজুল হক, যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।