লিওনেল মেসি, যাকে সবাই কম কথা বলা ফুটবল যাদুকর হিসেবেই জানেন। সেই মেসি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড় করোনাভাইরাসে আর্থিক সঙ্কটের সময় পাশে দাঁড়ালেন ক্লাব বার্সেলোনার। খেলা বন্ধ থাকায় নিজেদের বেতন ৭০ শতাংশ কম নিয়ে ক্লাব কর্মচারীদের শতভাগ বেতন দিতে বলেছেন।
চারদিকে সঙ্কটের সময় ক্লাব কর্মচারীদের বেতন পেতে যেন কোন সমস্যা না হয়, সে জন্য নিজেদের বেতনের ৭০ শতাংশ ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা। ক্লাবের সেরা তারকা ও অধিনায়ক লিওনেল মেসি বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। তিনি জানান, ক্লাবের প্রয়োজনে ৭০ শতাংশ বেতন ছেড়ে দিতে তারা রাজি।
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে থমকে গেছে খেলাধুলাসহ সকল কার্যক্রম। ফলে আর্থিক বিষয়টি নিয়ে সমস্যা সর্বত্র। আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে বিশ্বের নামী-দামি ক্লাবগুলো।
কিছুদিন আগে ফুটবলের প্রধান সংস্থা ফিফা বলেছিল, খেলোয়াড়দের সামান্য বেতন কেটে নিতে। এমন খবরের পর বেতন ছাড়তে রাজি হন জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান-বরুশিয়া ডর্টমুন্ড-বায়ার্ন মিউনিখের খেলোয়াড়রা।
বার্সেলোনার ফুটবলারদেরও বেতন কাটা হবে বলে ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানায়। বার্সার পক্ষ থেকে জানানো হয়, খেলোয়াড়দের ৭০ ভাগ বেতন কেটে নেওয়া হবে। তবে তাতে নাকি রাজি হননি বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা। স্প্যানিশ বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদনও ছাপা হয়।
তবে সকল আলোচনা-সমালোচনা বন্ধ করে দিলেন বার্সেলোনার ফুটবল জাদুকর মেসি। ক্লাবের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা যাতে পুরো বেতন পান সেটিই নিশ্চিত করতে বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন তিনি।
মেসি বলেন, ‘সবার আগে একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই। আমরা সবসময়ই আমাদের বেতন কমানোর বিষয়টি নিয়ে ভেবেছি। কারণ আমরা ভালো করেই বুঝি, এটা একটা অন্যরকম পরিস্থিতি। ক্লাব যখনই চাইবে, আমরা খেলোয়াড়রা সকল সাহায্য করতে প্রস্তুত।’
খেলোয়াড়রা ৫০ শতাংশ বেতন দিতে রাজি, এমন সংবাদ করে চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান মেসি। বলেন, ‘তবে আমরা এতে বিস্মিত নই যে, ক্লাবে এমন লোকও আছেন, যারা আমাদের আতশি কাঁচের নিচে রাখার চেষ্টা করেছেন এবং আমাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করতে চেষ্টা করেছেন। তবে সবসময়ই জানতাম আমরা ভালো কিছু করব।’
সমালোচকদের সমালোচনার পরও এতদিন কেন চুপ ছিলেন, সেটিও পরিষ্কার করেছেন মেসি। বলেন, ‘যদিও আমরা এতদিন কিছু বলিনি। কারণ, আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ক্লাবকে সাহায্য করার উপায় খুঁজে বের করা এবং এ পরিস্থিতিতে কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা দেখা।’
কর্মচারীদের শতভাগ বেতন নিশ্চিতের জন্যই নিজেরা ছাড় দিয়েছেন বলে জানান মেসি। বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে সময় এসেছে বলার, এ সঙ্কট চলাকালীন পরিস্থিতিতে ৭০ শতাংশ বেতন কেটে নেওয়ার ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। আমরা ক্লাবকে আরও সাহায্য করতে চাই। যাতে কর্মচারীদের শতভাগ বেতন দেওয়া যায়।’
বার্সেলোনার বোর্ড অব ডিরেক্টর, পেশাদার স্পোর্টস দলের সদস্য ও বেশিরভাগ বাস্কেটবল দলও নিজেদের বেতন দিয়ে আর্থিক সহায়তা করতে রাজি হয়েছে।