বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনালে পৌঁছেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। রোববার মতিন মিয়ার জোড়া গোলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুপুটে জয় তুলে সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে সফরকারী ৩-০ গোলে পরাজিত করেছে বাংলাদেশ। এ জয়ে গ্রুপ রানারআপ হিসেবে শেষ চারে স্থান করে নিয়েছে স্বাগতিকরা। সেমি-ফাইনালে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন বুরন্ডির মোকাবেলা করবে লাল সবুজের দল।
ইনজুরির কারণে রোববার বাংলাদেশের হয়ে মাঠে নামতে পারেননি অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। তবে তার অনুপস্থিতির প্রভাব খেলায় পড়তে দেননি সতীর্থ খেলোয়াড়রা। প্রথমবারের মত জাতীয় দলের হয়ে অভিষিক্ত হয়েছেন মিডফিল্ডার মানিক হোসেন মোল্লা।
আগেই স্বাগতিক দলের কোচ জেমি ডে জানিয়ে দিয়েছিলেন আজ লঙ্কানদের বিপক্ষে ‘মাস্ট উইন’ ম্যাচে অল আউট ফুটবল উপহার দেবে তার শিষ্যরা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে বাংলাদেশ।
শুরু থেকেই লঙ্কানদের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে বাংলাদেশ। তবে প্রথম পরিকল্পিত আক্রমণটি রচিত হয়েছে ম্যাচের ১০ মিনিটের সময়। চমৎকার পরিকল্পিত আক্রমণ হলেও দলকে গোল বঞ্চিত করেন সাদ উদ্দিন। বাঁ প্রান্ত দিয়ে ডি বক্সের বাইরের কানা থেকে ইব্রাহিমের ক্রসের বল একেবারেই বিপজ্জনক স্থানে পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে লাফিয়ে উঠে বাঁ পায়ের পরিবর্তে ডান পায়ে বল ছোঁয়ালে সেটি উল্টো পথে ফিরে আসে।
অবশ্য গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি স্বাগতিক বাংলাদেশকে। ম্যাচের ১৭ মিনিটেই মতিন মিয়ার অসাধারণ এক দৃষ্টিনন্দন গোলে এগিয়ে যায় তারা। বাঁ প্রান্ত দিয়ে ডি বক্সের বাইরে বল পেয়ে সফরকারী দলের দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে আচমকা কোনাকুনি শটে গোল করেন তিনি।
১ গোলে এগিয়ে গিয়ে ২১ মিনিটে ফের আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। এবার ডান প্রান্ত দিয়ে মাহবুবুর রহমান একাই মধ্যমাঠ থেকে বল টেনে নিয়ে দ্রুতগতিতে সফরকারী দলের ডি বক্সে ঢুকে পড়েন। লঙ্কান গোলরক্ষক এগিয়ে এলে তাকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য বলে টোকা দেন মাহবুব। তারপরও ঝাপিয়ে পড়ে বলের গতি পরিবর্তন করে দেন লঙ্কান গোলরক্ষক রুয়ান অরুনাসিরি। ফলে ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতির পর ৫১ মিনিটে সোহেল রানা মধ্য মাঠ থেকে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে লঙ্কান রক্ষণে ঢুকে গিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন। ফলে আবারও গোল বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ।
তবে ৬৪ মিনিটে দলকে দ্বিগুণ ব্যবধানে পৌঁছে দেন মতিন মিয়া। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ভুলে মাঝমাঠে বল পেয়ে যান তিনি। একক প্রচেষ্টায় ডি বক্সে ঢুকে একজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে মতিন মিয়া দারুণ দক্ষতায় লঙ্কান গোলরক্ষক অরুনাসিরিকে বোকা বানিয়ে আলতো টোকায় বল জালে জড়িয়ে দেন (২-০)।
ম্যাচের ৮৩ মিনিটে ইব্রাহিম গোল করে বাংলাদেশকে ৩-০ গোলের নিরাপদ অবস্থানে পৌঁছে দেন। রাকিবের পাস থেকে গোল পোস্টের একেবারেই সামনে বলে টোকা দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন তিনি।
ম্যাচের ৮৯ মিনিটে তপু বর্মন দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে (লাল কার্ড) মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। তবে বাকি সময় কোন রকম বিপদে পড়তে হয়নি স্বাগতিকদের। ফলে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।