প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) থেকে নেইমারের বিদায় কাহিনী আরও জমে উঠেছে। দীর্ঘ সময় ধরে চলমান এ দল বদল নাটকের অবসান হতে হয়তো আরও সময় লাগবে।
২০১৭ সালে বিশ্ব রেকর্ড গড়া অর্থের বিনিময়ে প্যারিসে পাড়ি জমিয়েছিলেন নেইমার। রেকর্ড অর্থ ব্যয় করে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) নেইমারকে বার্সেলোনা থেকে নিয়ে এসে সুযোগ করে দিয়েছিলেন লিওনেল মেসির ছায়া থেকে মুক্তির।
২৭ বছর বয়সী ব্রাজিলীয় তারকা যে অত্যন্ত মেধাবী সেটি নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। প্রতিটি সুযোগকেই কাজে লাগানোর বিষয়ে তিনি যথেষ্ট পারদর্শী। সাবেক ক্লাবে হোক কিংবা রিয়াল মাদ্রিদে ফিরে আগের মত সাফল্য পাওয়ার সব সুযোগ এখন নেইমারের সামনে রয়েছে। এদিকে ফ্রান্সে সবাই বিশ্বাস করে কিলিয়ান এমবাপ্পেই পিএসজিকে নেতৃত্ব দেবে এবং নেইমারের অনুপস্থিতিতেও ক্লাবটি ভালো করবে।
ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা লিগ ওয়ানের নতুন মৌসুম শুরু করেছে নিমেসের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে। ওই ম্যাচে ২২২ মিলিয়ন ইউরোর ওই ব্যাজিলীয় তারকাকে কটাক্ক করে বিভিন্ন বক্তব্য সম্বলিত ব্যানার প্রদর্শন করে পিএসজি সমর্থকরা।
ম্যাচে অবশ্য অংশ নেননি নেইমার। ক্লাবে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি। নিষেধাজ্ঞায় থাকার কারণে ইতোমধ্যে তিনি রেনের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নতুন মৌসুমের উদ্বোধনী ম্যাচে খেলতে পারেননি। প্রাক দেস প্রিন্সেসে আসার পর ক্লাবের সর্বমোট ম্যাচের অর্ধেকেও অংশ নেননি নেইমার।
যখন নেইমার স্বাবলীলভাবে মাঠে খেলেছেন তখন ঠিকই ধারাবাহিকভাবে গোল করেছেন। ৫৮ ম্যাচে অংশ নিয়ে গোল করেছেন ৫১টি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অনুপস্থিত নেইমার। পায়ের ইনজুরির কারণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চারটি নকআউট ম্যাচের তিনটিতেই খেলতে ব্যর্থ হয়েছেন নেইমার।
২০১৮ সালের শেষ ষোলর লড়াইয়ে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরেছিল নেইমার বিহীন পিএসজি। চলতি বছর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে পরাজিত হয় প্যারিস জায়ান্টরা।
পিএসজি কোচ থমাস টাসেল গত সপ্তাহে বলেছেন, ‘আমি নেইমারকে ভালোবাসি। আমি তাকে দলে রাখতে চাই এবং কিলিয়ানসহ অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাকেও খেলাতে চাই। তবে বাস্তবতা হচ্ছে নেইমারকে ছাড়াই আমাদেরকে সমাধান খুঁজতে হবে। আপনি কখনো নেইমারকে হারাতে চাইবেন না। সেই সঙ্গে খুঁজে বের করতে চাইবেন তার মত খেলোয়াড়।’
কিলিয়ান এমবাপ্পে বলেছেন, ‘নেইমার ছাড়া এটি একই দল হতে পারে না।’
এদিকে মাঠের বাইরে নেইমারকে ঘিরে চলছে নানান তৎপরতা। আর মাঠে পিএসজির ভরসা এমবাপ্পে। মুদ্রার অপর পিঠে পিএসজির বড় ব্র্যান্ড হচ্ছে নেইমার। নেইমারের কারণেই ক্লাবটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতীতের সব কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। একইভাবে ফ্রেঞ্চ লিগের (এলএফপি) টেলিভিশন স্বত্ব নিলামেও ব্রাজিলীয় এ তারকার উপস্থিতিকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
২০২০ সালের টেলিভিশন স্বত্ব চীনা মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠিান কিনে নিয়েছে বছর প্রতি ১.১৫ বিলিয়ন ইউরোতে। যেটি আগের চুক্তিকে ছাড়িয়ে গেছে বহুগুণ। এখন নেইমারের চলে যাবার বিষয়ে তাদেরকেও কিছুটা চিন্তিত করেছে। তবে সেটি নিয়ে নির্ভার এলএফপি প্রধান দিদিয়ের কুইলট।
তিনি এল ইকুইপকে বলেছেন, ‘আপনার লিগের তারকা খেলোয়াড়রাই সব সময় সেটিকে ভালোর দিকে এগিয়ে নেবে। চীনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তারকা দ্যোতি ছড়িয়েছেন এমবাপ্পে। বিশ্বব্যাপী তার জনপ্রিয়তা বাড়ছে।’
এদিকে যাই হোক না কেন লিগ ওয়ানের রঙ ফিকে হতে শুরু করেছে। কারণ এ গ্রীষ্মেই অন্যত্র চলে গেছেন নিকোলাস পেপে, ফারল্যান্ড মেন্ডি, টেঙ্গুই এনডোমেবল ও ইসমাইলার মত তারকা খেলোয়াড়রা।