ফুটবলের যত কৌশল তার সবই যেন প্রয়োগ করেছে বসুন্ধরা কিংস। মতিন মিয়ার হ্যাটট্রিকের সুবাদে প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের দ্বিতীয় লেগ পর্বে হোম ভেনুতে বুসন্ধরা কিংস ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল চারটায় খেলা শুরু হয় নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামে। বসুন্ধরা সমর্থকদের আকাঙ্খা ছিল জয়ের ধারা অক্ষুণ্ন রাখার। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ভেজা মাঠে শঙ্কাও ছিল সমর্থকদের মনে। কিন্তু না সব শঙ্কা কাটিয়ে নিজ মাঠে জয়ের ধারা অক্ষুণ্নই রেখেছেন অস্কার ব্রজোনের দল।
কিংসের পক্ষে একাই তিনটি গোলের হ্যাটট্রিক করেন মতিন মিয়া। অপর দুইটি গোল করেন ইব্রাহিম ও শেখ আলমগীর কবীর। তবে এ খেলায় কিংসের তিন বিদেশির একজনও গোল করতে পারেনি।
প্রথম লেগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ২-০ গোলে ব্রাদার্সকে হারিয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। হোম ভেনুতে খেলতে এসে গোলের ব্যবধান বাড়িয়ে নিল কিংসের দল। এ নিয়ে ১৯টিতে জয় একটিতে ড্র করে ৫৮ পয়েণ্টে শীর্ষস্থান অক্ষুণ্ন রাখলো কিংস। পক্ষান্তরে সম পরিমাণ ম্যাচ খেলে চার জয়, চার ড্র এবং ১২টি পরাজয় নিয়ে ১৬ পয়েণ্ট নিয়ে পয়েণ্ট টেবিলের ১২তম অবস্থানে রইল ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
খেলা শুরুর ছয় ও সাত মিনিটে কিংসের আক্রমণ ছিল জোড়ালো। দুই দফায় গোলের সুযোগ হাত ছাড়া করে ডেনিয়াল কলিনড্রেস ও ইমন মাহমুদ। ৯ মিনিটে ব্রাদার্সের মোস্তাকিম শাহরিয়ারের শুট ঠেকিয়ে দেয় কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। ১৩ মিনিটে কিংসের পক্ষে আরেকটি গোলের সুযোগ নষ্ট হয়। ১৫ মিনিটে ডেনিয়েলের হেডে গোলের সুযোগ নসাৎ করে দেয় ব্রাদার্সের গোলরক্ষক সুজন।
১৭ মিনিটে মার্কস পায়ে বল পেয়ে গোল করতে ব্যর্থ হয়। ১৮ মিনিটে কিংস এর ইমন ফাকা গোলপোস্ট পেয়ে তার বল গোলবার ঘেষে মাঠের বাহিরে পাঠিয়ে দেয়। কিংসের জোড়ালো আক্রমণ অব্যাহত থাকে। কয়েক মিনিট পর পর চারটি কর্নার পেয়েও গোলের সুযোগ নিতে পারেনি কিংস। তবে ব্রাদার্সের ডি বক্সের ভেতর বল চাপিয়ে কিংস গোলের সুযোগ খুঁজতে থাকে। কিন্তু বারবারই তারা ব্যর্থ হচ্ছিল। ২১ মিনিটে মতিন মিয়ার একটি জোড়ালো শট প্রতিহত করে ব্রাদার্সের গোলরক্ষক সুজন।
২৪ মিনিটে ব্রাদার্সের ডি বক্সের ভেতর বল নিয়ে জটলায় পায়ে বল পেয়ে কিংসের মার্কস গোলবারে শট নিলেও সেই বল চলে যায় মাঠের বাইরে। ২৫ মিনিটে একটি ফ্রি কিকে বখতিয়ারের হেড বিফল হয় গোল পেতে। ২৭ মিনিটে কিংসের আরেকটি জোড়ালো আক্রমণ প্রতিহত করে ব্রাদার্সের গোল রক্ষক। তবে ৩২ মিনিটে আর ব্যর্থ হননি কিংসের ইব্রাহিম।
ইমনের কাছ থেক বল পেয়ে তিনি সোজা বল পাঠিয়ে দেন ব্রাদার্সের জালে। এগিয়ে যায় কিংস ১-০ গোলে। ৩৯ মিনিটে কিংসের আরেকটি আক্রমণ কাজে লাগিয়ে দেয় মতিন মিয়া। দল এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। ৪৯ মিনিটে মতিন মিয়া আরেকটি সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে নেয় ৩-০ গোলে। ৬২ মিনিটে মার্কস ও বখতিয়ার নিজেদের মধ্যে বল আদান প্রদান করে ব্রাদ্রার্সের গোলবারে এগিয়ে যায়।
সেই বল মার্কস মতিন মিয়াকে হ্যাটট্রিকের সুযোগ করে দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঠেকিয়ে দেন ব্রাদার্সের গোলরক্ষক সুজন। তবে ৬৭ মিনিটে সেই সুযোগ আর হাত ছাড়া করেননি মতিন মিয়া। বল পেয়ে সোজা পাঠিয়ে দেন ব্রাদার্সের জালে। মতিন মিয়ার হ্যাটট্রিকে দল পৌঁছে ৪-০ ব্যবধানে। ৯০ মিনিটে কিংসের আরেকটি জোড়ালো আক্রমণে মার্কসের কাছে বল পেয়ে কাজে লাগিয়ে দেয় শেখ আলমগীর কবীর রানা। ৫-০ গোলে জয় পেয়ে খেলা শেষ করে কিংস।