ফাইনালে যেতে হলে পাড়ি দিতে হতো কঠিন পথ। যে পথে বাধা ছিল বার্সেলোনা। প্রথম লেগে ৩-০ গোলে এগিয়ে থাকায় বার্সাকেই ফাইনালে ‘দেখছিল’ সবাই। তার মধ্যে একাদশে ছিলেন না সালাহ। তবে সকল বাধা অতিক্রম করে ফাইনালে পা রেখেছে লিভারপুল। মঙ্গলবার রাতে দ্বিতীয় লেগে বার্সেলোনাকে ৪-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে সালাহ-রবের্তো ফিরমিনো বিহীন লিভারপুল।
শেষ চারের ফিরতি পর্বে মঙ্গলবার রাতে ৪-০ গোলে জিতে দুই লেগ মিলে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে ফাইনালে ওঠেছে লিভারপুল। দুটি করে গোল করেন দিভোক ওরিগি ও জর্জিনিয়ো ভেইনালডাম। গত সপ্তাহে কাম্প নউয়ে প্রথম লেগে ৩-০ গোলে বার্সেলোনার কাছে হেরেছিল তারা।
কঠিন সমীকরণে খেলতে নেমে শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দিতে থাকে লিভারপুল। একের পর এক আক্রমণে বার্সেলোনা ছিল অনেকটাই ছন্নছাড়া। ভুল পাসের ছড়াছড়ির সঙ্গে ছিল সুযোগ নষ্টের মহড়াও। ফলে আরও একবার নকআউট পর্বের অ্যাওয়ে ম্যাচে দিক হারালো মেসি-সুয়ারেসরা। অন্যদিকে ভাবনায় না লিভারপুল দেখালো তাদের ফুটবল শক্তি।
খেলার সপ্তম মিনিটেই গোলের যাত্রা শুরু হয়। ডি-বক্সের মধ্যে একজনকে কাটিয়ে জর্ডান হেন্ডারসনের নেওয়া শট থেকে গোলমুখে ফাঁকায় পেয়ে অনায়াসে জালে পাঠান বেলজিয়ামের ফরোয়ার্ড ওরিগি। ১৪ মিনিটে গোল পরিশোধের সুযোগ পায় বার্সেলোনা। তবে লিওনেল মেসির শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন গোলরক্ষক।
প্রথমার্ধে ইংলিশ ডিফেন্ডার অ্যান্ড্রু রবার্টসন পায়ে ব্যথা পেলেও খেলা চালিয়ে যান। তবে দ্বিতীয়ার্ধে তাকে আর নামানো হয়নি। তার বদলি হিসেবে নামেন ভেইনালডাম। ডাচ এই মিডফিল্ডারের নৈপুণ্যেই অবিশ্বাস্য জয়ের আশা জোরালো হয় লিভারপুলের।
৫৪তম মিনিটে ডান দিকে আলবার পা থেকে বল কেড়ে কিছুটা এগিয়ে ক্রস বাড়ান ট্রেন্ট অ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ড। বল একজনের পায়ে লেগে চলে যায় পেনাল্টি স্পটের কাছে। জোরালো নিচু শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ভেইনালডাম। এর দুই মিনিট পর বাঁ দিক থেকে সুইস মিডফিল্ডার জেরদান সাচিরির ক্রসে সবার উপরে লাফিয়ে হেডে পোস্ট ঘেঁষে জাল খুঁজে নেন ২৮ বছর বয়সী ভেইনালডাম।
দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন হয়ে যায় ৩-৩। কোণঠাসা হয়ে পড়া বার্সেলোনা শিবিরে জেগে ওঠে আরও একবার প্রথম লেগে বড় ব্যবধানে জয়ের পরও ছিটকে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়। ৭৯তম মিনিটে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের হতবাক করে দিয়ে স্কোরলাইন ৪-০ করেন ওরিগি।
কর্নার থেকে রেফারির বাঁশি শুনে আচমকা শট নেন অ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ড। গোলরক্ষক টের স্টেগেনসহ বার্সেলোনার রক্ষণভাগ তখনও ঠিক প্রস্তুত না হওয়ার সুযোগে জোরালো শটে বার্সেলোনার জালে বল পাঠান ওরিগি। বাকি সময় আর কেউ গোল করতে পারেনি।
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শেষ চারের প্রথম লেগে তিন গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে ফাইনালে ওঠার কীর্তি গড়ছে লিভারপুল। ক্লাব পর্যায়ে ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতার আগের সংস্করণে এমন কীর্তি রয়েছে মাত্র দুটি। ১৯৭০-৭১ মৌসুমে গ্রিক ক্লাব পানাথিনাইকোস ও ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে বার্সেলোনা এ কীর্তি গড়েছিল।