বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি ভারত চ্যাম্পিয়ন

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০১:৪৫ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৯
বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি ভারত চ্যাম্পিয়ন

ফাইল ছবি

মাঠে বা মাঠের বাইরে কোথাও স্বস্তিতে নেই আই লিগের গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন দল মিনার্ভা পাঞ্জাব। অথচ দলটির স্বত্বাধিকারী রঞ্জিত বাজাজের মুখে হাসি লেগেই আছে। তার মিনার্ভা গতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারতের ঘরোয়া ফুটবল আই লিগে। সেই দলটি কিনা এবার লিগে ১১ দলে নবম!

এএফসি কাপে প্রথমবারের মতো সুযোগ পাওয়া মিনার্ভার হোম ভেন্যু এখনো ঠিক হয়নি। পাঞ্জাবে নিজেদের মাঠটা এএফসির ম্যাচের উপযোগী নয়। কিন্তু ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনও মিনার্ভার হোম ভেন্যু পেতে সেভাবে এগিয়ে আসেনি। তাই তো রাগে-ক্ষোভে ক্লাব গুটিয়ে নিতে চেয়েছিলেন রঞ্জিত। সব মিলিয়ে ভঙ্গুর এক মিনার্ভা এবার এএফসি কাপের ম্যাচ খেলতে এসেছে ঢাকায়। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আজ বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর মুখোমুখি হবে ভারতের চ্যাম্পিয়নরা।

এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপ ও এএফসি কাপ মিলিয়ে গত সাতটি আসরে একবারও গ্রুপ পর্ব পার হতে পারেনি আবাহনী। তবে এবার আবাহনী স্বপ্ন দেখছে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার। ৩ এপ্রিল এএফসি কাপের অ্যাওয়ে ম্যাচে আবাহনী হারিয়েছে মানাং মার্সিয়াংদিকে। কাঠমান্ডু গিয়ে নেপালের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের বিপক্ষে জয় দিয়ে এএফসি কাপ শুরু করতে পারা বড় ব্যাপারই।

লড়াইটা হবে মিনার্ভার রক্ষণের সঙ্গে আবাহনীর আক্রমণভাগের। মিনার্ভার রক্ষণে নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার করিম ওমোলাজা, কলম্বিয়ান জর্জ রদ্রিগেজ, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর রবার্ট প্রিমাস। কাল বাফুফে ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আবাহনী কোচ লেমোসের মুখে ঘুরেফিরে উঠে এসেছে এই নামগুলো। এমন জমাট রক্ষণদেয়াল ভেঙে গোল করতে নিশ্চিত মুখিয়ে থাকবেন এখন পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা (৮টি করে) আবাহনীর দুই ফরোয়ার্ড সানডে সিজোবা ও নাবিব নেওয়াজ জীবন।

এএফসি কাপের প্রথম ম্যাচে দলকে গুরুত্বপূর্ণ ৩ পয়েন্ট এনে দিয়েছেন আফগান ডিফেন্ডার মাসিহ সাইঘানি। লিগে টুকটাক গোল পাচ্ছেন হাইতির কারভেন্স বেলফোর্ট। সবচেয়ে আশার কথা লিগে টানা তিন ম্যাচে গোল পেয়েছেন জীবন। লিগের সর্বশেষ ৫ ম্যাচে ১৩ গোল করেছেন আবাহনীর স্ট্রাইকাররা। তা ছাড়া কাঠমান্ডুতে দুর্দান্ত খেলেছেন গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল। সব মিলিয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে আবাহনী।

পাঞ্জাবের দলটিতে গোল করার লোকের বড়ই অভাব। ২০ ম্যাচে গোল মাত্র ১০ টি! এএফসি কাপের জন্য তাই শিলং লাজং থেকে ধার করেছে স্যামুয়েল লালমুয়ানপুইয়াকে। শিলং প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে আজ আটকে রাখতে পারলে দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য একটু এগোবে আবাহনী। গত কয়েক আসরে এএফসি কাপে খেলা অভিজ্ঞ ফুটবলার আছেন আবাহনীতে।

গোলরক্ষক সোহেল, ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সাল, রায়হান হাসান, মিডফিল্ডার প্রাণতোষ কুমার, আতিকুর রহমান ফাহাদ, ফরোয়ার্ড সানডে, জীবনদের জন্য যেটি বাড়তি সুবিধা। কিন্তু মিনার্ভা পাঞ্জাবের সব ফুটবলারই এই প্রথম খেলছেন এএফসি কাপে। ঘরের মাঠের সুবিধাও থাকবে আবাহনীর পক্ষে।

চোট কাটিয়ে উঠলেও ডিফেন্ডার তপু বর্মণকে আজ একাদশে রাখছেন না কোচ মারিও লেমোস। বাদশা ভালো করছেন তাই তাঁকে পছন্দ। পর্তুগিজ কোচ তাঁকে নিয়ে খুবই আশাবাদী, ‘সানডে, জীবন, বেলফোর্ট নিয়মিত গোল পাচ্ছে। ছেলেরা ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। যদিও পাঞ্জাব ভালো দল। তবে আশা করি কাল আমরাই জিতব।’

মিনার্ভা পাঞ্জাবের কোচ শচীন বাড়দের মুখেও জয়ের আশা। চেন্নাই এফসির সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ের পর এই ম্যাচ থেকে পুরো ৩ পয়েন্ট পেতে চান শচীন বাড়দের, ‘ছেলেরা এএফসি কাপের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। লিগের ফল যেমনই হোক না কেন এএফসি কাপের ম্যাচেই বেশি নজর সবার। আবাহনীর প্রত্যেক ফুটবলার সম্পর্কে আমাদের ধারণা রয়েছে। ওদের কীভাবে সামলাব, সেই কৌশল নিয়েই কাজ করেছি। এখানে ৩ পয়েন্টের জন্যই খেলতে নামব।’ দেখাই যাক, ৩ পয়েন্ট কার পকেটে যায়? নাকি ফল যা-ই হোক, ঘরের মাঠে আবাহনীই এগিয়ে।



শেয়ার করুন :