বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল গ্যালারিতে বসে দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকেই পুরস্কার নিয়েছে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল।
তার আগে বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়ন ও এগিয়ে চলার অনেক দিক তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায়। যেখানে ফুটবলের প্রতি তার ভালোবাসা ভাগাভাগি করতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ফুটবল খেলতেন।
খেলাধুলার প্রতি, বিশেষ করে ফুটবলের প্রতি নিজের ভালোবাসা শেখ হাসিনা প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘ফুটবল আমাদের দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা। মাঠে-ঘাটে, একেবারে গ্রাম পর্যায়ে খেলা চলে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়েও ফুটবল দল গঠিত হয়। আর বিশেষ করে আমি এমন একটি পরিবার থেকে এসেছি, আমার দাদা ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন, আবার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, তিনিও ফুটবল খেলতেন। আমার ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল সবাই ফুটবল খেলতো।’
বঙ্গবন্ধু পরিবারের ফুটবলপ্রীতির সেই ধারা এখনও সচল। প্রধানমন্ত্রীর পরের কথাতেই তা স্পষ্ট, ‘এখন আমার নাতি-নাতনিরাও ফুটবল খেলে। জয়ের মেয়ে ফুটবল খেলে, পুতুলের ছেলেমেয়েরা ফুটবল খেলে, এমনকি রেহানার ছেলে ববি, তার ছেলেমেয়েও ফুটবল খেলে। মোটামুটি আমাদের পরিবারের সবাই ফুটবল খেলার সঙ্গে জড়িত। কাজেই এই খেলাটির প্রতি আমাদের আলাদা আন্তরিকতা আছে।’
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে নীলফামারী সদরের দক্ষিণ কানিয়ালখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিলেটের জৈন্তাপুরের হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনালে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের টেপুরগাড়ী বি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে ময়মনসিংহের নান্দাইলের পাঁচরুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতা দুটি বিশ্বে ইতিহাস তৈরি করেছে বলেও মন্তব্য শেখ হাসিনার, ‘বাংলাদেশ বিশ্বে একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। আমার মনে হয় পৃথিবীর আর কোনও দেশে এই ইতিহাস নেই। এবারের এই টুর্নামেন্টে, অর্থাৎ ২০১৮ সালের টুর্নামেন্টে বেগম ফজিলাতুন্নেসা গোল্ডকাপে অংশগ্রহণ করেছে ৬৫ হাজার ৭০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর খেলোয়াড়ের সংখ্যা ১১ লাখ ১৬ হাজার ৯০০। আর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছে ৬৫ হাজার ৭৯০টি বিদ্যালয়। খেলোয়াড় সংখ্যা ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫১৫। এত বিশাল সংখ্যার খেলোয়াড় আমার মনে হয় পৃথিবীর আর কোনও দেশ আয়োজন করতে পারে নাই। সেই জন্য আমি সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, যারা এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।’
এই প্রতিযোগিতার সাফল্যের চিত্রও তুলে ধরেছেন তিনি, ‘আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে, অর্থাৎ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে আমরা এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করি। যার ফলে আজ খেলাধুলায় আমাদের ছেলেমেয়েরা পারদর্শিতা দেখাচ্ছে। আমাদের নারী অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব-১৮ এবং জাতীয় দলের ৫০ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে ৩৬ জন খেলোয়াড়ই বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এসেছে। ধীরে ধীরে তারা জাতীয় পর্যায়ে খেলোয়াড় হিসেবে অবস্থান করে নিচ্ছে।’