ঢাকা প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের শিরোপা নিশ্চিত করেছে আবাহনী। ক্রোয়েশিয়ার কোচ দ্রাগো মামিচ চলে যাওয়ার পর সবার পণ ছিল পারফরম্যান্স ধরে রাখার। সেই চ্যালেঞ্জ উতরে গেলেন ওয়ালি-সানডে-মামুন মিয়ারা। তাদের একতা ও জয়ের ক্ষুধায় আবাহনী ষষ্ঠবারের মতো ঘরে তুলেছে প্রিমিয়ার লিগের ট্রফি।
এদিকে এক ম্যাচ বাকি থাকায় শেষ ম্যাচে জায়ান্ট চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে। সেই ম্যাচের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রফি ঘরে তুলবে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। আকাশি-হলুদদের শেষ ম্যাচ জেতার লক্ষ্য তো আছেই, সেই সঙ্গে ঘরোয়া আসরের শেষ প্রতিযোগিতা স্বাধীনতা কাপের ট্রফিও শো-কেসে দেখতে চায় তারা।
এছাড়া এএফসি কাপের মতো বড় আন্তর্জাতিক আসরে নিজেদের সেরাটা নিয়ে নামার লক্ষ্য আবাহনীর। দলের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রুপু ম্যাচের মধ্যে ছিলেন বেশ উৎকণ্ঠিত। যদিও ম্যাচ শেষে ভাষাই হারিয়ে ফেললেন। গতকাল এই সাবেক তারকা বলেছেন, ‘রাতে স্বস্তির ঘুম হয়েছে। চাপ ছিল, সেটা কমেছে। এখন নতুন করে চিন্তা করছি আমরা। স্বাধীনতা কাপে দল তৈরি, সেই সঙ্গে এএফসি কাপের প্রস্তুতি। এশিয়ান কোটা পূরণ করার চেষ্টা চলছে। সব আসরেই যে ভালো করতে হবে।’
আবাহনীর ‘ঘরের ছেলে’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মিডফিল্ডার প্রাণতোষ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘আমরাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছি- এই খুশি রাখব কোথায়। ছয় ট্রফির সবটাতেই আমি অংশীদার। একটি চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য যেখানে সবাই অপেক্ষায় থাকে, সেখানে আমি সব ট্রফি জয়ী দলের সদস্য। আসলে টিম স্পিরিটই বড় শক্তি আমাদের। এখানে চাপের কিছু নেই। এএফসি কাপ কিংবা স্বাধীনতা কাপে ভালো করতে হবে। আবাহনী তো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই খেলে।’
আরেক মিডফিল্ডার ইমন বাবুর কথা, ‘সবার প্রচেষ্টা ছিল, কমিটমেন্ট ছিল। এক সময় সাত পয়েন্টে পিছিয়ে ছিলাম। টেবিলে পাঁচ নম্বরে ছিলাম। প্রতিটি খেলোয়াড় বেশ পরিশ্রম করেছে। বিদেশিদের চেয়ে স্থানীয়দের পারফরম্যান্স ভালো ছিল এবার।’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘এএফসি কাপের জন্য প্রস্তুতি চলছে। আগের চেয়ে গুরুত্ব বেশি দিচ্ছে ক্লাব। স্বাধীনতা কাপ তো আছেই। সেই অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ক্লাব এই বিষয়ে আরও সচেতন।’
ডিফেন্ডার ওয়ালি ফয়সাল কার্ড সমস্যার কারণে ‘অলিখিত ফাইনাল’ খেলতে পারেননি। ড্রেসিং রুম থেকে টানটান উত্তেজনাকর ম্যাচের সাক্ষী হতে হয়েছে। ওয়ালি ওই সময়ের কথা তুলে ধরলেন এভাবে, ‘ড্রেসিং রুম থেকে যখন সবাই বের হচ্ছিল, তখন আমি মাটিতে পা রাখতে পারছিলাম না। গোটা মৌসুম খেললাম, অথচ শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলতে পারছি না, খুব কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু যখন ট্রফি জিতলাম, তখন সব কষ্ট দূর হয়ে গেল।’
লিগে চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে শেষ ম্যাচ ঢাকা আবাহনীর। এরপর স্বাধীনতা কাপ, এএফসি কাপ। এই মৌসুমে আবাহনীকে এখনও পেরোতো হবে বহুদূরের পথ।