ভারতের বিপক্ষে খেলা নয় ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে আটটিতে, ড্র একটি। বাংলাদেশের ওপর ভারতের আধিপত্য বোঝাতে এই পরিসংখ্যানটুকুই যথেষ্ট। তবে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চারবারের সেরাদের শক্তিশালী মানলেও কৃষ্ণা-স্বপ্নারা প্রত্যয়ী কণ্ঠে জানালেন পরিসংখ্যানের পাতায় একটি জয় লেখার মতো আত্মবিশ্বাস আছে তাদের।
নেপালের বিরাটনগরের শহীদ রঙ্গসালা স্টেডিয়ামে আজ বুধবার স্থানীয় সময় বেলা ৩টায় ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে দুই দল। ৬-০ আর ৫-০ গোলের জয় নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের সেরা হয়ে সেমি-ফাইনালে উঠে এসেছে ভারত। ২-০ গোলের জয় দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশে নেপালের কাছে ৩-০ গোলে হেরে হয়েছিল ‘এ’ গ্রুপের রানার্স আপ।
গত নভেম্বরে শেষ দেখায় অলিম্পিকের বাছাইয়ে ভারতের কাছে ৭-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে প্রতিপক্ষকে শক্তিশালী মানলেও হাঁটুর চোট কাটিয়ে ফেরা মিডফিল্ডার কৃষ্ণা রানী সরকার জানালেন ফাইনালে উঠতে প্রাণবাজি রেখে লড়বেন তারা।
‘ভারত অবশ্যই কঠিন দল। সাফে ২ বছর আগে আমরা দু’বার ওদের সঙ্গে খেলেছি। প্রথম ম্যাচ ড্র করেছিলাম। দ্বিতীয় ম্যাচ যদিও হেরেছিলাম। কিন্তু লড়াই হয়েছিল অনেক। আমরা একচেটিয়া খেলেছিলাম। ওখানকার প্রায় সব খেলোয়াড়ই এই দলে আছে। আশা করি ওই ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও অনেক লড়াই হবে।’
‘ভারতকে হারানোর বিশ্বাস আমাদের আছে। অবশ্যই চেষ্টা করবো জেতার জন্য। গত দুই ম্যাচ খেলেনি, সেহেতু সেমি-ফাইনালে আমি আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবো। জানবাজি দিয়ে খেলবো আমরা।’
মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাইয়ে হারা ম্যাচে বাংলাদেশের জালে চার গোল করেছিলেন বালা দেবী; দুটি কমলা দেবী। অভিজ্ঞ এই দুই ফরোয়ার্ডকে ছাড়াই সাফের মুকুট ধরে রাখার মিশনে এসেছে ভারত। বালা-কমলা না থাকলেও ভারতকে খাটো করে দেখছেন কৃষ্ণা। ১৬ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। ‘ওদের দলে দু’জন সিনিয়র খেলোয়াড় (বালা ও কমলা) নেই।
কিন্তু ‘এ’ দল থেকে আরও কিছু সিনিয়র প্লেয়ার এসেছে। ওদের সাথেও আমরা খেলেছি। ওরাও ভালো। আমাদের চেষ্টা করতে হবে ওদেরকে আটকানোর।’
‘মিয়ানমারে আমি গোল করেছিলাম ভারতের বিপক্ষে। প্রথম ১৫ মিনিটে পেনাল্টির আগ পর্যন্ত আমি এবং স্বপ্না ওদের রক্ষণকে অনেক চাপে রেখেছিলাম। কিন্তু পেনাল্টিতে গোল হওয়ার পর মোমেন্টামটা থাকেনি। তবে এবার তা হবে না। আমরা আগেই হেরে বসে নেই। সবাই আমরা তাকিয়ে আছি সামনের দিকে।’
বিরাটনগরের দিল্লি পাবলিক স্কুল মাঠে অনুশীলনের পর ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্না জানালেন বাড়তি চাপ অনুভব না করার কথা। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দিলেন সমানতালে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি।
‘যেহেতু সেমি-ফাইনাল ম্যাচ, অবশ্যই আমাদের প্রস্তুতি অন্যরকম। সর্বোচ্চটুকু দিয়ে খেলব। যে ম্যাচ চলে গেছে, সেটা চলে গেছে। এখন আমরা শুধু ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভাবছি।’ ‘অবশ্যই তারা ভালো দল কিন্তু আমরা তেমন চাপ অনুভব করছি না। আমরা চেষ্টা করব আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলার। ভারতের সঙ্গে আমরা এই প্রথম খেলছি না। সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে তাদের সঙ্গে সমানতালে খেলার।’ বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও বাঁচা-মরার লড়াইয়ে জিততে প্রতিপক্ষকে চার ফরোয়ার্ড দিয়ে আক্রমণের ছক কষছেন।
‘ফরোয়ার্ড লাইনে থাকবে চারজন সাবিনা, স্বপ্না, কৃষ্ণা ও সানজিদা। পেছনে লেফটে শামসুন্নাহার সিনিয়র, ডানে শিউলি আজিম, সেন্ট্রালে আঁখি খাতুন ও মাসুরা পারভীন। মাঝ মাঠে মারিয়া মান্ডা ও মনিকা চাকমা।’ ‘চার জনের সংঘবদ্ধ আক্রমণ হবে। নেপালের ম্যাচে কৃষ্ণা না থাকায় স্বপ্নাকে বেশি ইফোর্ট দিতে হয়েছিল।