জিতেই অভ্যাস বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের। গত বছর বাছাই পর্বে তারা চার ম্যাচে ২৭ গোল দিয়েছিল লেবানন, ভিয়েতনাম, বাহরাইন, এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। সাফেও তাদের বড় জয় অব্যাহত থাকে। অথচ সেই বাংলাদেশ দল রোববার ৩ গোলে ধারাশায়ী হলো চীনের বিপক্ষে।
শক্তির বিচারে চীনের জয়ই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ম্যাচে তাদের তিন গোলের দুটিই এসেছে বাংলাদেশ রক্ষণকর্মীদের ভুলে। তা না হলে ম্যাচের শেষ মিনিট পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাই থাকতো হয়তো।
এই বড় ব্যবধানে হারের জন্য কোচ গোলার রাব্বানী ছোটন ফুটবলারদের মনোসংযোগের অভাবকেই দায়ী করলেন। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলরক্ষক রুপনা চাকমার ভুলে হওয়া গোলকেই সামনে আনলেন তিনি। তার মতে, এই গোল আমাদের কিছু সময়ের জন্য ম্যাচের বাইরে নিয়ে যায়।
তিনি যোগ করেন, মনে রাখতে হবে চীনাদের মতো বিশ্বকাপে খেলা দলের বিপক্ষে খেলতে হলে পুরো নব্বই মিনিটই খেলায় মনোসংযোগ রাখতে হবে। রুপনা এই ভুল না করলে হয়তো ১-০ হতো রেজাল্ট। না হলে বড়জোর ২ গোলের হার।
এই ভুল ছাড়া দলের বাকী পারফরম্যান্সে পাস পার্ক দিয়েছেন বাংলাদেশ কোচ। জানালেন, মিয়ানমারের বিপক্ষে চীনের ঝাং চেন জি, ওয়াং জিয়ং ই এবং দাই জিন ইয়াও ছিল মূল খেলোয়াড়।
তাদের কারনেই সেই ম্যাচে ৫ গোলে জয় চীনাদের; কিন্তু আমাদের মনিকা, মারিয়া এবং শামসুন্নাহার তাদের খেলতেই দেয়নি মাঝমাঠে। ফলে বাধ্য হয়ে তারা উইং দিয়ে আক্রমণে যায়। আমরা প্রথমার্ধে ট্যাকটিক্যালি ভালোই খেলেছি। কিন্তু বিরতির পর ৪৬ মিনিটে রুপনার ভুলে হওয়া গোলেই ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়।
পরাজয়ে মিয়ানমার সফর শেষ হলেও মিশন সফল বাংলাদেশ দলের। তারা এখন এশিয়ার সেরা আট দলের একটি। সেপ্টেম্বরে তারা থাইল্যান্ড যাবে অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের ফাইনাল রাউন্ডে খেলতে। যা একই সাথে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বও। রোববার মিয়ানমারের মেন্ডালের মাঠে মারিয়ারা ইংগিত দিলেন, চূড়ান্ত পর্বে ভালো করতে হলে আরো উন্নতি প্রয়োজন বাংলাদেশ দলের।
কোচ ছোটনও তা উল্লেখ করলেন, গতবার চূড়ান্ত পর্বে জাপান, উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে খেললেও ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারিনি। তবে এই ম্যাচে প্রথমার্ধে ট্যাকটিক্যালি পরিকল্পনাটা সঠিক ভাবে পালন করতে পেরেছে ফুটবলাররা। অবশ্য এই ধরনের ম্যাচ খেলতে হতে আরো বেশী বেশী ম্যাচ খেলতে হবে। আরো উন্নতি দরকার আছে দলে।
এদিকে চীনের ডাচ কোচ রজার রেইজনার্স সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তার দলের পারফরম্যান্সে। তার যুক্তি, বাংলাদেশের বিপক্ষে আমরা পুরো নিয়ন্ত্রন নিয়ে খেলতে পেরেছি। প্রতিপক্ষতো একটি ফি-কিক ছাড়া আর কোনো শটই নিতে পারনি চীনের পোষ্টে।’ তার বক্তব্য, আমার মতে চীনেরতো আরো বেশী গোল পাওয়া উচিত ছিল দ্বিতীয়ার্ধে।
বাংলাদেশের জালে দুটি বল গেছে ডিফেন্সের ভুলে। এ জন্য আবশ্য লাল সবুজ রক্ষনকর্মীদের দায় দিচ্ছেন না রেইজনার্স। তার মতে, ‘আমরা পজিশনাল এবং পাসিং ফুটবল খেলেছি। এতে প্রচুর দৌড়াতে হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলারদের। তাদের ভুলটা এই অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলেই।’
তিনি যোগ করেন, ‘বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে। আমি তাদের ২০১৭ সালের চূড়ান্ত পর্ব, এবারের বাছাই পর্ব সব খেলার ভিডিও দেখেছি।’ সোমবার দেশে ফিরছে বাংলাদেশ দল।