এশিয়ান কাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে খেলা চলাকালে আমিরাতের দর্শকদের বিরুদ্ধে কাতারের জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে কাতার ফাইনালে উঠায় দর্শকদের জুতা ছোঁড়া-ছুরি করতেও দেখা গেছে।
তবে স্বাগতিক দলকে ৪-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে সব কিছুর জবার মাঠেই দিয়েছে কাতার।
ম্যচের শুরুতে মাঠে যখন কাতারের জাতীয় সঙ্গীত বেজে উঠে তখনই দুয়োধ্বনি দিয়ে এর অবমাননা করতে থাকে স্বাগতিক সমর্থকরা। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে এর দারুণ জবাব দিয়ে ফাইনালে জাপানের সঙ্গী হল কাতার। একে একে গোল করে কাতারের জয়ে ভূমিকা রাখেন বাওয়ালম খাওখি, আলমোয়েজ আলী, হাসান আল-হায়দস ও হামিদ ইসমাইলি। আগামী শুক্রবার অনুষ্টিত হবে ফাইনাল ম্যাচ।
তবে টানা ছয় ম্যাচের জয় দিয়ে প্রথমবারের মত এশিয়ান কাপের ফাইনালে পৌছানোর সাফল্যের প্রতিদান স্বাগতিক দর্শকরা দিয়েছে মাঠে প্লাস্টিক বোতল ছুঁড়ে। কাতারীরা এক একটা গোল করেছে আর ক্ষুব্ধ স্বাগতিক দর্শকরা বোতল বৃষ্টি ঝড়িয়ে তাদের উদযাপনে সামিল হয়েছে। তৃতীয় গোলের পর সফরকারী দলের মিডফিল্ডার সালেম আল-হাজরির মাথায় লাগে একটি বোতল।
খেলা শেষে বিজয়ী কাতার দলের কোচ ফেলিক্স সানচেজ বলেন, ‘এখানকার পরিবেশ খুব একটা সহজ ছিল না। ছেলেদের তীব্র চাপ নিয়ে খেলতে হয়েছে। তবে বেশ ভালভাবেই তারা নিজেদের আবেগ সামলে নিয়েছে। এদেরকে নিয়ে আমি সত্যি গর্বিত।’
ম্যাচের ২১তম মিনিটে স্বাগতিক আরব আমিরাতের গোল রক্ষক খালিদ ইসার পায়ের নিচে শট নিয়ে যখন প্রথম গোলটি করেন, তখন পিন পতন নীরবতা নেমে আসে আবুধাবীর মাঠে উপস্থিত ৩৮ হাজার দর্শকদের মাঝে (১-০)। এরপরই কর্ণার থেকে শট নিতে গিয়ে আমিরাতি সমর্থকদের ছোড়া বোতলের শিকার হন সফরকারী তারকা আফিফ। রেফারির কাছে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে কিছুটা দূর থেকে শট নেন তিনি।
বিরতিতে যাবার মাত্র আট মিনিট আগে ফের গোল উদযাপনে মেতে উঠে কাতারী খেলোয়াড়রা। ৩৭তম মিনিটে আলীর নেয়া ডান পায়ের শটের বল জালে জড়িয়ে গেলে দ্বিগুন ব্যবধানে পৌঁছে যায় কাতার (২-০)।
এরপর পানির বোতলের সঙ্গে জুতা ছুঁড়ে মারে স্বাগতিক সমর্থকরা। বিরতির সময় বিনোদনমূলক ‘লেটস ব্রিং এশিয়া টুগেদার’ শীর্ষক গানটি পরিবেশন করেও স্বাগতিকদের ওই কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখা যায়নি।
তবে দমে যায়নি সফরকারী কাতারও। শেষ বাঁশি বাজার ১০ মিনিটের মধ্যে আরো দু’টি গোল আদায়ের মাধ্যমে প্রতমবারের মত এশিয়ান কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করে তারা। ম্যাচের ৮০তম মিনিটে হাসান আল-হায়দস ও ৯০তম মিনিটে হামিদ ইসমাইলির গোলে ৪-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পরবর্তী বিশ্বকাপের আয়োজকরা।
খেলা শেষে পর্তুগালে জন্ম নেয়া কাতারী ডিফেন্ডার পেড্রো কোরেইয়া সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এমন ম্যাচই খেলতে চাই। আমরা সবাই (দুই দেশের মধ্যে) সমস্যার বিষয়টি জানি। তবে সেটি নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা শুধু ফুটবল খেলতে চাই। ৪-০ গোলে জয় পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
ম্যাচ শেষে দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আরব আমিরাতের প্রধান কোচ আলবার্তো জাচ্চেরোনি। ইতালীয় এই কোচ বলেন, ‘আমি এই দেশের নেতৃবৃন্দের কাছে ক্ষমা প্রার্থী। আমি জানিনা এই ফলাফলের জন্য টুর্নামেন্টের সূচি দায়ী কি-না। শুধু এ টুকুই বলব, আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’ উল্লেখ্য, ২০১১ সালে এই কোচই জাপানকে এনে দিয়েছিলেন এশিয়া কাপের শিরোপা।
Shameful and disgusting scene at the @afcasiancup semifinal
— IstandWithQatar.org (@IstandWithQatar) January 29, 2019
UAE fans throwing shoes at Qatari players after Qatar takes a clear lead against the host team
pic.twitter.com/yxm4HelWM1