স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বিজয়ের মাসে বৃহস্পতিবার বাফুফে ভবনের কনফারেন্স রুমে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়। এর আগে ২০০৯ সালের ৪ জানুয়ারি আরও একবার এ দলকে সংবর্ধনা দিয়েছিল বাফুফে।
বাফুফের এ আয়োজনে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ম্যানেজার তানভীর মাজহার তান্না, দলের প্রস্তাবক-খেলোয়াড় সাইদুর রহমান প্যাটেল, শেখ আশরাফ আলী, কে এন নওশের, সুভাষ সাহা, শেখ আব্দুল হাকিম, তসলিম উদ্দিন শেখ, আবদুস সাত্তার, সিরু, আব্দুল খালেক (তার অনুপস্থিতিতে ছেলে আফজাল হোসেন মিঠু), মোজাম্মেল হক ও বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি রোমন্থন করে তানভীর মাজহার তান্না বলেন, ‘৪৭ বছর আগে আমার বয়স ছিল ২০ বছর। বালুঘাটে পিন্টু ভাই (স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু) তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন সাহেবের একটি চিঠি আমার কাছে নিয়ে আসেন। তাজউদ্দিন সাহেব বলেছেন, তোমাকে ম্যানেজার করে একটি দল গঠন করতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে তৎকালীন তারকা ফুটবলারদের জড়ো করতে শুরু করলাম। দল গঠন করলাম। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় খেললাম।’
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই ম্যানেজার আফসোস করে বলেন, ‘আমাদের দলের অনেকেই আজ নেই। অনেকেই রোগে শোকে ভুগছেন। অথচ জীবন বাজি রেখে খেলা এই মুক্তিযোদ্ধাদের ঠাঁই ইতিহাসের পাতায় তেমন হয়নি। উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে, হয়তো একদিন সবাই চলে যাবো। কেউই আর আমাদের মনে রাখবে না।’
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাঈদুর রহমান প্যাটেল বলেন, ভারতের বিভিন্ন জায়গায় প্রর্দশনী ম্যাচ খেলা আমরা ১৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা (ভারতীয়) তুলে দিয়েছিলাম আগরতলায় তৎকালীন সরকারের ফান্ডে।
বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেন, এ দেশের স্বাধীনতায় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অবদান নেহায়েত কম নয়। তাই সবাইকে আমি শ্রদ্ধা জানাই। দেশ স্বাধীন হওয়াতেই আজ আমি বাফুফের সভাপতি হতে পেরেছি। তিনবার দক্ষিণ এশিয়ার সাত দেশের ফুটবল সংস্থার সভাপতি পদে আসীন হয়েছি। আমার মনে পড়ে মুম্বাইতে আমরা খেলতে গেলে নবাব পাতৌদি পরিবার আমাদের সম্মান জানিয়েছিল। সেখানে নায়ক দিলীপ কুমার এবং নায়িকা ও পাতৌদি পরিবারের বধূ শর্মীলা ঠাকুরও আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছেন। মাটিতে শুয়ে রাত কাটাতে হয়েছে। অনেক কষ্ট করেছি আমরা। তাই ইতিহাসের পাতায় আমাদের ঠাঁই হওয়া প্রয়োজন। আগামী প্রজন্মকে জানতে হবে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল কেমন ছিল।
তমা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় দলের সবাইকে একটি করে ব্লেজার এবং ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, বাফুফে সদস্য আব্দুর রহিম, শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।