ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, নাম শুনলেই মনে পড়ে রিয়াল মাদ্রিদের কথা। রোনালদো পর্তুগালের ফুটবলার হলেও এই ক্লাবেই যে টানা ৯ বছর খেলেছেন। জিতেছেন কত না পুরষ্কার। তবে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ৯ বছরের সম্পর্কচ্ছেদ করেছিলেন এক নিমিষেই।
চলতি বছরের জুলাইয়ে ১০০ মিলিয়ন ইউরোতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো যোগ দেন ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে। তবে তার ক্লাব পরিবর্তন নিয়ে চলে নানা সমালোচনা। শুধু কি টাকার জন্য নাকি অন্য কোনো কারণ ছিল? গুঞ্জন ছিল- কোচ জিনেদিন জিদান দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়াতেই রিয়াল ছেড়েছেন তিনি। এছাড়া ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদই নাকি রাখতে চায়নি বুড়িয়ে যাওয়া রোনালদোকে!
তবে সবকিছুর পর এবার আসল ঘটনা জানালেন রোনালদো নিজেই। রিয়ালের সঙ্গে ৯ বছরের সম্পর্কচ্ছেদের জন্য তিনি দায়ী করেছেন ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনা পেরেজের আচরণকে।
ক্লাব ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। তার সময়ে ১৫টি বড় ট্রফি জিতেছে রিয়াল। জিতেছে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটি লা লিগা শিরোপা। ঈর্ষণীয় এ সাফল্যের পরও রিয়ালে শেষ সময়টায় কদর পাননি ৩৩ বছর বয়সী রোনালদো। বরং ক্লাব ও তার প্রেসিডেন্টের আচরণে কষ্টই বেড়েছে পর্তুগিজ যুবরাজের।
রোনালদো বলেন, ‘তিনি শুধু আমার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কটাই দেখতেন। আমিও সেটা জানতাম। তিনি আমাকে যা বলতেন, কখনই মন থেকে নয়। ক্লাবের থেকে বিশেষ করে প্রেসিডেন্টের থেকে আমি যা পেয়েছি-মনে হচ্ছিল, শুরুর মতো তারা আমাকে দেখছে না। প্রথম চার-পাঁচ বছর, আমার মধ্যে ‘ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো’ অনুভূতিটা ছিল। পরে সেটা কমে যায়।’
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট যখন আমার দিকে তাকাতেন, আমি সেই জিনিসটা আর পেতাম না। মনে হতো আমি তাদের কাছে আর অপরিহার্য নই। আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমি কি বলছি।’
এমন অবহেলার কারণেই রিয়াল ছাড়ার সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন রোনালদো। পর্তুগিজ যুবরাজের ভাষায়, ‘যদি আমি টাকার জন্যই ক্লাব ছাড়তাম, তবে চীনে যেতাম। সেখানে এর চেয়ে (জুভেন্টাস) বা রিয়ালের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি আয় করতে পারতাম। আমি জুভেন্টাসে টাকার জন্য আসিনি। বেশি না হলেও মাদ্রিদে আমি সমান টাকাই পেতাম। পার্থক্য হলো, জুভেন্টাস আমাকে সত্যিই চেয়েছিল। তারা আমাকে সেটা পরিষ্কার করেই বলে। তারা আমাকে সেটা দেখিয়েছেও।’
জিদানকে নিয়ে গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বলেন, ‘তিনি চলে যাওয়াতেই আমি এ সিদ্ধান্ত নেইনি। হতে পারে, ছোট কারণগুলোর মধ্যে এটিও একটি। যার কারণে আমার সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়েছিল।’
রোনালদো কথা বরেছেন তার সেক্স স্ক্যান্ডাল নিয়েও। তিনি স্বীকার করেন ওই ঘটনা তার জীবনে বড় প্রভাব ফেলেছে। তবে আবারও আত্মপক্ষ সমর্থন করে জুভেন্টাস ফরোয়ার্ড বলেন, ‘অবশ্যই এটা আমার জীবনে প্রভাব ফেলেছে। আমার একজন সঙ্গী আছে, চার সন্তান, বয়স্ক মা, বোন, ভাই, একটি পরিবার আছে। যাদের সঙ্গে আমি খুব ঘনিষ্ঠ। আমার খ্যাতির কথা নাই বললাম, যেটা মানুষের কাছে অনূকরণীয়। চিন্তা করুন, কেউ একজন আপনার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছে, সেটা আপনি করেন আর না’ই করেন। আমি জানি আমি কি, আমি কি করেছি। সত্যি একদিন বেরিয়ে আসবেই।’