ফেবারিট উরুগুয়েকে দশজনের দল হয়েও ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে কলম্বিয়া। এ জয়ে ২৩ বছর পর প্রথমবারের মতো কোপা আমেরিকার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে তারা। কলম্বিয়ার পক্ষে জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেছেন জেফারসন লারমা।
ম্যাচের ৩৯তম মিনিটের হেড করে কলম্বিয়ার জয়সূচক গোলটি করেন লারমা। এরপর প্রথমার্ধ্যেই মিডফিল্ডার ড্যানিয়েল মুনোজ দ্বিতীয় হলুদ কার্ড (লাল কার্ড) দেখে মাঠ ছাড়লে দশজনের দলে পরিণত হয় কলম্বিয়া।
কোপা আমেরিকার ফাইনাল নিশ্চিত করার পর এখন শিরোপা জয়ের জন্য লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে লড়াই করতে হবে তাদের।রোববার মিয়ামির ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে মাঠে নামবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।
শার্লটের ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকদের উপস্থিতিতে বিশৃঙ্খল এক সেমিফাইনাল পার করে শেষ পর্যন্ত ফাইনালের টিকেট পায় কলম্বিয়া। গ্যালারিতে সমর্থকদের মধ্যে যেমন উত্তেজনা বিরাজ করেছে তেমনি মাঠেও বেশ কিছু খেলোয়াড়কে বিভিন্ন সময় উত্তেজনা ছড়াতে দেখা গেছে।
বিরতির ঠিক আগে মিডফিল্ডার ড্যানিয়েল মুনোজ দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় কলম্বিয়া। এরপর উরুগুয়ের একের পর এক চাপ সামলাতে হয়েছে কলম্বিয়াকে। তবে সব চাপ সামলিয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।
৭৪,৮০০ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন শার্লট স্টেডিয়ামটি যেন বোগোটার হোম গ্রাউন্ডে পরিণত হয়। ভেন্যুর চারদিক থেকে তখন উরুগুইয়ান সমর্থকরাও মাঠে প্রবেশের জন্য জোড় চেষ্টা চালায়। তবে এমন পরিবেশ অবশ্য অনুমেয়ই ছিল।
কলম্বিয়া ম্যাচের শুরুটা শক্তিভাবেই করেছিল। লিভারপুল উইঙ্গার লুইস দিয়াস প্রায়ই বামদিক থেকে কিছু ক্রস ডি বক্সের মধ্যে করেছে। এর মধ্যে তার একটি ক্রসে মুনোজের হেড অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে চলে যায়। উরুগুয়ে স্বভাবসুলভ ভাবেই কাউন্টার এ্যাটাক থেকে বিপদজনক হয়ে ওঠে।
লিভারপুল তারকা ডারউইন নুনেজ গোলের দেখা প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন। রডরিগো বেনটানকারের চতুর পাসে নুনেজের শট গোলের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। ম্যাক্সিমিলিয়ানো আরাউজোর আরো একটি এ্যাসিস্ট থেকে নুনেজ সুযোগ নষ্ট করেন। বিপরীতে কলম্বিয়াও বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া করেছে।
হামেস রড্রিগুয়েজের কার্লিং ক্রসে জন কোরডোবার জেড টার্গেটে পৌঁছায়নি। ৩৯তম মিনিটে রড্রিগুয়েজের কর্নার থেকে হোসে মারিয়া জিমিনেজের মাথায় উপর দিয়ে লারমার দুর্দান্ত হেডে এগিয়ে যায় কলম্বিয়া।
এরপর রিচার্ড রিওসের শট দারুণভাবে রুখে দেন উরুগুয়াইন গোলরক্ষক সার্জিং রোশে। বিরতির ঠিক আগে মুনোজ আর মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেননি। ম্যানুয়ের উগার্তেকে ফাউলের অপরাধে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারনে তাকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে।
ম্যাচের বাকি সময় কলম্বিয়াকে ১০ জন নিয়ে প্রতিরোধ করতে হয়েছে যা মোটেই সহজ ছিল না। ৬২তম মিসিটে কলম্বিয়ান কোচ নেস্তর লোরেঞ্জো রড্রিগুয়েজকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেন। প্রতিপক্ষ দলকে দশজনের পেয়ে উরুগুয়ে এরপর কিছুটা আক্রমণের ধার বাড়ায়।
তবে নিকোলাস ডি লা ক্রুস লো ড্রাইভে সুবিধা করতে পারেননি। বদলী খোলয়াড় লুইস সুয়ারেজের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ফেডেরিকো ভালভার্দের গোলের ভালো সুযোগ হাতছাড়া করেন। ভালভার্দের একটি শট লাইনের উপর থেকে ক্লিয়ার না হলেও তখনই সমতায় ফিরতে পারতো উরুগুয়ে। তবে সে সুযোগ আর হয়নি।