স্পোর্টসমেইল২৪
রূপকথার গল্পের মতই এক নায়ককে পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রেে ফুটবল ক্লাব ইন্টার মিয়ামি। তিনি আর কেউ নন, সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। মেসির কাঁধে ভর করে একঝাঁক উজ্জীবিত তরুণ প্রথমবারের মতো আয়োজিত লিগ কাপের শিরোপা জয় করে নিয়েছে মিয়ামি। এ যেন আসলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন।
পেনাল্টি শুটে মেজর লিগ সকারের শীর্ষ সারির দল ন্যাশভিলকে পরাজিত করে শিরোপা ঘরে তুলেছে মেসির মিয়ামি। নির্ধারিত সময়ের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র ছিল। এরপর পেনাল্টিতে ১০-৯ গোলে মিয়ামি বিজয়ী হয়।
ম্যাচের ২৪ মিনিটে বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন সুপারস্টার মেসি অসাধারণ এক স্ট্রাইকে মিয়ামিকে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধে ফাফা পিকাল্ট ন্যাশভিলকে সমতায় ফেরান।
মিয়ামির হয়ে শেষ মিনিচে লিওনার্দো কাম্পানা গোলের সুযোগ নষ্ট করার আগে মেসির শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। না হলে হয়তো আগেই জয় নিশ্চিত করতে পারতো ডেভিড বেকহ্যামের দল। দুই গোলরক্ষকের মধ্যে শেষ লড়াইটা বেশ জমে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত মিয়ামির ড্রেক ক্যালেন্ডার এলিয়ট পানিকোর শট রুখে দিয়ে দলকে জয়ের লক্ষ্যে নিয়ে যান।
যুক্তরাষ্ট্রের এ গোলরক্ষককে ঘিড়ে মেসি বাহিনী ম্যাচ শেষে শিরোপা উদযাপন করেছে। ম্যাচের শেষ ভাগেও ক্যালেন্ডার বেশ কয়েকটি সেভ করে মিয়ামিকে রক্ষা করেছেন।
মেজর লিগ সকারের তলানির দল হিসেবে মিয়ামি টানা তৃতীয় মৌসুমে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মেসির আগমণে পুরোপুরি পাল্টে যাওয়া ড্রেসিং রুমের আবহ যেন মাঠেও প্রতিফলিত হচ্ছে। সাথে বাড়তি অনুপ্রেরণা হিসেবে যোগ হয়েছে দুই সাবেকর স্প্যানিশ তারকা সার্জিও বাসকুয়েটস ও জোর্দি আলবার অভিজ্ঞতা। তাদের সকলের প্রচেষ্টায় টানা সাত ম্যাচে অপরাজিত থেকে লিগ কাপের শিরোপা ঘরে তুললো মিয়ামি।
ন্যাশভিল স্পস্টভাবেই বাসকুয়েটস ও মেসিকে আটকানোর পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল। মিয়ামি যাতে পজিশনাল ফুটবল খেলতে না পারে সেই চেষ্টা তারা করে যাচ্ছিল। সেট পিস থেকে প্রথম সুযোগটি তারাই তৈরিরী করেছিল।
গ্যারি স্মিথের দলে এর মাধ্যমে মিয়ামিকে বিপদে ফেলার ইঙ্গিত দিয়েছিল। তবে লুকাস নটনের কর্নার থেকে ওয়াকারের হেড ক্যালেন্ডার রুখে দেন। ২৪ মিনিটে ব্রেকথ্রু এনে দেন মেসি। টেইলরের পাসে ২৫ গজ দুর থেকে মেসির শট আটকানোর সাধ্য ছিল না পানিকোর। এ গোলের পরই পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নেয় মিয়ামি।
বিরতির পর ম্যাচের চিত্র পাল্টে যায়। কর্নার থেকে পিকাল্টের হেডে ৫৭ মিনিটেচ সমতায় ফিরে ন্যাশভিল। জার্মান ফরোয়ার্ড হ্যানি মুখতারও ন্যাশভিলকে আশা জাগিয়ে তুলেছিলেন। ৭১ মিনিটে মেসির শট পোস্টে লাগলে হতাশ হতে হয় মিয়ামিকে।
পেনাল্টিতে প্রথম ১০ শটে দুই দলই একটি করে মিস করে। শেষ পর্যন্ত পানিকোর শট রুখে দিয়ে ক্যালেন্ডার মিয়ামিকে জয় উপহার দেন।
শিরোপা জয়ের আনন্দে যখন পুরো দল ব্যস্ত তখন কোচ জেরাডো মার্টিনো বলেছেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পুরো দল একসাথে লড়াই করেছে। সাত ম্যাচের টুর্নামেন্টে জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা কঠিন। মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে এ শিরোপা জয় এটাই প্রমাণন করে যে ভবিষ্যতে অন্য দলগুলোকে আমাদের সমীহ করতেই হবে।”
ক্লাবের অন্যতম মালিক সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক বেকহ্যাম বলেছেন, “আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি সিনেমা দেখছি। এসব খেলোয়াড়দের দেখলে সেটাই মনে হবে। তাদের প্রত্যেকের খেলাই দারুণ সুন্দর ও ছন্দময়।”
সাতবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী মেসি গোলাপি জার্সিতে এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচে ১০ গোল করেছেন। বুধবার ইউএস কাপের সেমিফাইনালে সিনসিনাতির বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারলে মিয়ামির সামনে আরও একটি ফাইনাল খেলার পথ নিশ্চিত হবে।