কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে ১৯৮৬ সালের পর বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করেছে আর্জেন্টিনা। তবে শিরোপা জয় করলেও ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান দখল করতে পারেনি লিওনেল মেসির দেশ। দক্ষিণ আমেরিকান চির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল এখনো র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর স্থানটি ধরে রেখেছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে সেলেসাওরা। ওই সময় তারা বেলজিয়ামকে হটিয়ে শীর্ষস্থানটি লাভ করেছিল। কাতার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে বাঁধা পেরুতে না পারায় ধরে নেওয়া হয়েছিল বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টিনা হয়তো পয়েন্টের দিক থেকে ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে যাবে।
বিশ্বকাপে ব্রাজিল তিনটি ম্যাচে জয়ী হয়েছে। তবে ক্যামেরুনের কাছে গ্রুপ পর্বে পরাজয়ের পর পেনাল্টি শ্যুট আউটে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে বিদায় নেয়। এদিকে, আর্জেন্টিনা ফাইনাল পর্যন্ত জিতেছে সাতটি ম্যাচ। শুধুমাত্র সৌদি আরবের সাথে আসরের প্রথম ম্যাচে তারা পরাজিত হয়েছে।
২০২১ সালে কোপা আমেরিকা জয় করেছে আর্জেন্টিনা। আর এখন তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু নাম্বার ওয়ান পজিশনের জন্য এটা যথেষ্ঠ নয়। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচে জয়ের তুলনায় পেনাল্টি শুট আউটের জয়ের পয়েন্ট অনেক কম। আর্জেন্টিনা কিংবা ফ্রান্স যদি ১২০ মিনিটে ফাইনালে জিততে পারলে ব্রাজিলকে টপকে শীর্ষস্থানে উঠতে পারতো তারা। তবে পেনাল্টি শুট আউটে জয়ী হওয়ায় ব্রাজিলকে টপকানো সম্ভব হয়নি।
ফাইনালের দুই দল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স উভয় দলই একধাপ উপরে ওঠে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া বেলজিয়াম দুই ধাপ নীচে নেমে চতুর্থ স্থানে চলে গেছে। ইংল্যান্ড পঞ্চম স্থান ধরে রেখেছে, কোয়ার্টার ফাইনালের আরেক দল নেদারল্যান্ড দুই ধাপ উপরে উঠে ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে।
র্যাঙ্কিংয়ের সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান পাওয়া ক্রোয়েশিয়ার। পাঁচ ধাপ উপরে উঠে ১২তম স্থান থেকে ক্রোয়েটরা শীর্ষ ১০’এ চলে এসেছে। কাতারে খেলতে ব্যর্থ হওয়া ইতালি দুই ধাপ নীচে নেমে অষ্টম স্থানে রয়েছে। পর্তুগাল তাদের নবম স্থান ধরে রেখেছে। স্পেনের তিন ধাপ অবনতি হয়ে ১০ম স্থানে চলে গেছে।
১১ ধাপ করে উন্নতি হয়েছে মরক্কো ও অস্ট্রেলিয়ার। উভয় দেশই বিশ্বকাপে দারুণ পারফর্ম করেছে। আফ্রিকান শীর্ষ দল হিসেবে চতুর্থ স্থান দখল করা মরক্কো রয়েছে ১১তম স্থানে। শেষ ষোলতে খেলা অস্ট্রেলিয়া উঠে এসেছে ২৭তম স্থানে। যদিও এটা মরক্কোর সর্বোচ্চ অবস্থান নয়।
১৯৯৮ সালে র্যাঙ্কিংয়ের ১০ম স্থান অর্জন করেছিল মরক্কো। ২০১৫ সালে সর্বনিম্ন ৯২তম স্থানে নেমে গিয়েছিল আফ্রিকান দেশটি।
ব্রাজিলকে হারানোর সুবাদে ক্যামেরুন ১০ ধাপ উপরে উঠে ৩৩তম স্থানে অবস্থান করছে।
কনকাকাফ অঞ্চলের শীর্ষ দল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তিন ধাপ উন্নতি হয়ে ১৩তম ও মেক্সিকো দুই ধাপ নীচে নেমে ১৫তম স্থনে রয়েছে। কানাডা ও কাতারের সবচেয়ে বেশি অবনমন হয়েছে। উভয় দলই ১২ ধাপ নীচে নেমে যথাক্রমে ৫৩ ও ৬২তম স্থানে অবস্থান করছে।
ওয়েলস ৯ ধাপ নীচে নেমে রয়েছে ২৮তম স্থানে। ডেনমার্কেরও অবস্থানের অবনতি হয়েছে। আট ধাপ নীচে নেমে তারা বর্তমানে ১৮তম স্থানে রয়েছে। সার্বিয়া আট ধাপ নীচে নেমে রয়েছে ২৯তম স্থানে।
নতুন ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ ২০ দল
১. ব্রাজিল, ২. আর্জেন্টিনা, ৩. ফ্রান্স, ৪. বেলজিয়াম, ৫. ইংল্যান্ড, ৬. নেদারল্যান্ড, ৭. ক্রোয়েশিয়া, ৮. ইতালি, ৯. পর্তুগাল, ১০. স্পেন, ১১. মরক্কো, ১২. সুইজারল্যান্ড, ১৩. যুক্তরাষ্ট্র, ১৪. জার্মানী, ১৫. মেক্সিকো, ১৬. উরুগুয়ে, ১৭. কলম্বিয়া, ১৮. ডেনমার্ক, ১৯. সেনেগাল, ২০. জাপান।