টুর্নামেন্ট সেরা পুরস্কার নিতে গিয়ে মেসি সামনে রাখা বিশ্বকাপ ট্রফিতে গিয়ে চুমু দিলেন। কোনো ভাবেই তর সইছিল না। ২০১৪ সালে একবার গোল্ডেন বল নিয়ে চলে আসতে হয়েছে। শুধু তাকিয়ে দেখা ছাড়া ছোয়ার ক্ষমতা ছিল না। এবার আর বাধা নেই। সব বাধা বেরিয়ে চ্যাম্পিয়ন লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। ট্রফি নিতে তাই তর সইবেই কেন?
ট্রফির সামনে গিয়েই শিশুর মতো হাসছিলেন। বারবার তাকিয়ে কি যেন ভাবছিলেন। হয়তো নিজের চোখকেও মাঝে মাঝে বিশ্বাস হচ্ছিল না তার। তবে ম্যাচ শেষে জানালেন, নিজের অনুভূতির কথা। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবো। কতবার যে এই স্বপ্ন দেখেছি। এটা পাওয়ার জন্য শুধু অপেক্ষাই করে গেছি। এতোদিনের লালিত স্বপ্ন আজ হাতের মুঠোয়। বিশ্বাসই হচ্ছে না।'
২০০৬ সাল থেকে বিশ্বকাপ খেলছেন মেসি। ব্যক্তিগত ট্রফি একাধিক তার দখলে। রয়েছে অনেক রেকর্ডও। ক্লাব ক্রিকেট থেকে জাতীয় দলের হয়ে বাকি সব অর্জনই ছিল তার। তবু ছিল না সব থেকে বড় চাওয়ায় থাকা বিশ্বকাপ। যা পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সেই স্বপ্নপূরণ হল রোববার। ফ্রান্সের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে জিতে।
মেসির এই পথ চলায় সব সময়ই পাশে ছিল তার পরিবার। মা, স্ত্রী ও সন্তানরা। মেসিও পরিবারকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি। তিনি বলেন, পরিবারকে ধন্যবাদ আমার পাশে থাকার জন্য। আমাকে যারা বিশ্বাস করেছিলেন, আস্থা রেখেছিলেন তাদেরও ধন্যবাদ।'
তিনি বলেন, ‘আবারও প্রমান হল আর্জেন্টিনা একটা দল হয়ে যখন খেলে কিছু চায় সেটা পেয়ে যায়। কোনো একজনের জন্য নয়, গোটা দলের পারফরম্যান্সেই এই সাফল্য। বিশ্বকাপ পাওয়ার স্বপ্নের পেছনে সবাই দৌড়েছে। এখন আর তর সইছে না। আর্জেন্টিনা ফিরতে চাই।'
আর্জেন্টিনার অর্থনৈতিক অবস্থায় খুবই নাজুক। খুব কষ্ট করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। এরই মধ্যে মেসিরা আনন্দের জোয়াড়ে ভাসালেন দেশকে।সবার আগে সেই দেশের মানুষের সামনে যেতে চায় মেসিবাহিনী।
অথচ বিশ্বকাপে মেসিদের পথচলা শুরু হয়েছিল খুবই বাজেভাবে। দুর্বল সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে। সেই হারটাই হয়তো তাতিয়ে দিয়েছিল লিওনেল স্কোলিনার দলকে। মেসি বলেন, ‘কোপা আমেরিকা জয়ের পর বিশ্বকাপ জয়। অবিশ্বাস্য অর্জন।ভাবতেই পারছি না। ট্রফি জিতে টুর্নামেন্ট শেষ করতে চেয়েছিলাম সেটা পেরেছি। এর বেশি কিছু এখন আর চাইতে পারি না।'
তিনি বলেন, ‘এখনই জাতীয় দলে খেলা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। জাতীয় দলের হয়ে আরও কিছু ম্যাচ খেলবো এরপর সিদ্ধান্ত নেব।' মেসির এই কথায় নিশ্চই তার সমর্থকরা আরও বেশি খুশি হয়েছেন। তার পায়ের জাদু আরও কিছুদিন দেখতে পাবেন ফুটবল বিশ্ব।
স্পোর্টসমেইল২৪/জেএম