২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। সেই হোঁচট সামলে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতেই খায় বড় ধাক্কা । সেবার দ্বিতীয় রাউন্ডে ফ্রান্সের কাছে ৪-৩ গোলে হেরে বিদায় নেয় লিওনেল মেসির দল। কাতার বিশ্বকাপে এরই মধ্যে ক্রোয়েশিয়াকে সেমিফাইনালে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে আর্জেন্টিনা। এবার ফাইনালে ফ্রান্সকে হারাতে পারলে শিরোপার সঙ্গে আরও মধুরতম প্রতিশোধও নেওয়া হবে দলটির।
পুরো ফুটবল বিশ্বই এখন মেসির হাতে শিরোপা দেখতে চায়। কিন্তু এমবাপ্পে? তিনি কি বসে থাকবেন? মোটেই না। ফুটবল বিশ্বে আলোড়ন তাই মেসির প্রথম? নাকি এমবাপ্পের দ্বিতীয়? এমন প্রশ্নে।
দোহার লুসাইল আইকনকি স্টডেয়িামে রোববার রাত ৯টায় কাতার স্বপ্নের ফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা ও এমবাপ্পের ফ্রান্স। লড়াইটা ইউরোপ বনাম লাতিন আমরেকিারও। ২০০২ সালে ব্রাজলি চ্যাম্পয়িন হওয়ার পর গত চার আসরে ইউরোপের দলগুলোই ঘুরেফিরে বিশ্বকাপ জিতেছে। গত আসরে তো অলইউরোপ ফাইনাল খেলেছিল।
দু'দলের জন্যই তৃতীয় শিরোপার হাতছানি। আর্জেন্টিনা সর্বশেষ শিরোপা জিতেছে ১৯৮৬ সালে, ম্যারাডোনা জাদুতে। এরপর দু'বার ফাইনাল খেললেও শিরোপা ছোঁয়া হয়নি তাদের। তবে আট বছরের ব্যবধানে দু'বার ফাইনালে নাম লেখালো মেসির দল।
ফ্রান্স প্রথম বিশ্বকাপ জেতে ১৯৯৮ সালে। এরপর তারা ফাইনালে উঠল সব মিলে আরও তিনবার। গত আসরে দাপট দেখিয়ে শিরোপা জেতা ফ্রান্স আবারও টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের খুব কাছে।
ফ্রান্সের ফরোয়ার্ড উসমান দেম্বেলাও মনে করছেন, এবার ট্রফিটা মেসির হাতে ওঠা উচিৎ। তিনি বলেন, ‘এই ট্রফিটা মেসির প্রাপ্য। তার শুধু এই ট্রফিটাই অধরা রয়েছে। তবে একই সঙ্গে ফ্রান্সও শিরোপার দাবিদার। আমরা এখানে আমাদের দেশকে গর্বিত করতে এসেছি।'
মেসির সতীর্থরা যেকোনো ভাবেই শিরোপা জিততে চায়। বিশেষ করে অধিনায়ক মেসির জন্য। তার বিদায়টা বিষাদে ভরাতে চায় না সতীর্থরা। মেসিও তার দলের উপর আস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটা আমার সেরা বিশ্বকাপ হবে কিনা জানি না। তবে বিশ্বকাপ জিততে যা যা করা দরকার সবই আমরা করবো। আর্জেন্টিনার এই দলটা দুর্দান্ত।'
শিরোপা নিয়ে কাড়াকাড়ির সঙ্গে দুদলের খেলোয়াড়দের মধ্যেও চলছে গোল্ডেন বুট, গোল্ডেন বল আর গোল্ডেন গ্লোব জেতার লড়াই। সমান পাঁচটি করে গোল করে গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন পিএসজি'র দুই সতীর্থ আর্জেন্টিনার মেসি ও ফ্রান্সের এমবাপ্পে। ফাইনালে দুজনই নিশ্চই দলকে জেতানোর সঙ্গে একে অন্যকে ছাড়িয়ে যেতে চাইবেন। তবে কেউ গোল না পেলে এএগিয়ে থাকবেন মেসিই।
আবার চারটি করে গোল রয়েছে দু'দলের দুই স্ট্রাইকার আর্জেন্টিনার জুলিয়ান আলভারেজ ও ফ্রান্সের অলিভিয়ার জিরুদের। দুটি দলই ফাইনালের আগে একটি করে ম্যাচ হেরেছে। তাই ফাইনাল মঞ্চে দু'দলই সমান সমান।
মেসির ইনজুরি নিয়ে শংকা জাগলেও এখনও আর কোনো সমস্যা নেই। ফাইনালে তিনি খেলছেন। দিদিয়ের দেশমের দলে হানা দিয়েছিল ফ্লু। তবে তারাও সেরা একাদশ খেলাতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
লড়াইটা দুই গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ ও হুগো লরিসের মধ্যেও।
তৃতীয় শিরোপা কার হাতে উঠবে সেটা দেখতেই আজ সারা বিশ্বের চোখ থাকবে নিশ্চই টিভি পর্দায়....
স্পোর্টসমেইল২৪/জেএম