মরুর দেশের টগবগে ব্লাক হর্সের মতো এগিয়ে চলছিল মরক্কো। বেলজিয়াম, পর্তুগাল, স্পেনকে হারিয়ে রূপকথার গল্প লিখেছে অ্যাটলাস লাইন্সরা। হাকিমিদের তাক লাগানো পারফরমেন্সে মুগ্ধ ছিল গোটা ফূটবল বিশ্ব। তবে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায় ফ্রান্সের কাছে হেরে। ম্যাচ শেষে তাদের সমর্থদের মধ্যে শুরু হয়েছে দাঙ্গা।
কাতারে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ২-০ গোলে পরাস্ত হয় মরক্কো। এরপর ফ্রান্স থেকে একেবারে ব্রাসেলসের রাস্তা পর্যন্ত সমর্থকেরা ক্ষোভ-দাঙ্গা শুরুকরে বলে জানায় বিদেশি গণমাধ্যমগুলো। ফরাসি সমর্থকদের দাবি, এমবাপ্পেদের জয়ের উৎসব অনেক জায়গায় ঠিকমতো উদযাপনই করতে পারেনি তারা।
প্যারিসে ফাইনালের টিকিট পেতেই ব্রাসেলসের রাস্তায় পটকা-আতসবাজি নিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন ফ্রান্সবাসী। ফ্রেন্স ভক্তদের সাথে বেশকিছু জায়গায় মরক্কো সমার্থকদের হাতাহাতি হয়। পরে তাদেরকে সামাল দিতে ফ্রান্সজুড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশকে মোতায়েন করে ফরাসি প্রশাসন। দাঙ্গা এড়াতে ব্যবহার করতে হয় জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস।
এ নিয়ে ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন বলেছেন, ‘ফরাসি সমর্থকদের মতো আমাদের মরক্কোর বন্ধুদের পার্টি করতে স্বাগত জানাই এবং তাদের পার্টি করতে বাধা দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবে নিরাপত্তার ব্যাপারটা সকলকে নিশ্চিত করতে হবে’।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বেলজিয়ামে সংখ্যালঘু হিসেবে বসবাস করছে মরক্কোবাসীরা। ফলে ফ্রান্সের এই ঘটনা যেন তাদের এলাকায় বড় আকার ধারণ না করে, তার জন্য তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেয় বেলজিয়াম পুলিশ। রাজধানী ব্রাসেলসের রাস্তায় সেনা পর্যন্ত নামাতে হয়।
রয়টার্স সূত্রে জানা যায়, ভক্তরা ময়লার বস্তা-কার্ডবোর্ডের বাক্সে আগুন ধরিয়ে দেয়। পটকা-আতসবাজি সহ বিভিন্ন জিনিস ছুড়ে পুলিশকে আক্রমণ করে। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতেই জলকামান চালায় সেনা। ঘটনার জেরে প্রায় ১০০ জন মরক্কো সমর্থককে গ্রেফতার করেছে সেনা। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পরাজয় আসল বিষয় নয়, বরং বেলজিয়ামে সংখ্যালঘু মরক্কোবাসি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে চাপা উত্তেজনার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
ফ্রান্সের কাছে হারলেও বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়ার মিশনে মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়ার। ম্যাচটি শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) কাতারের খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।
স্পোর্টসমেইল২৪/এমটিআর