মেসি যাদু দেখলো বিশ্ব। প্রথমে গোল করে দলকে এগিয়ে দিলেন। এরপর জোড়া গোল করলেন হুলিয়ান আলভারেজ। ভয়ংকর আর্জেন্টিনা দেখাল রুদ্ররুপ। মধুর প্রতিশোধ নিল দিয়েগো ম্যারাডোনার উত্তরসূরিরা।লুসাইল স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে প্রথম সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে কাতার বিশ্বকাপে প্রথম দল হিসাবে ফাইনালে উঠে গেল তারা।
২০১৪ বিশ্বকাপের পর আবারও ফাইনালে জায়গা করে নিল লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফ্রান্স ও মরক্কো ম্যাচের জয়ী দল।
রেকর্ড গড়নে মেসি। দেখালেন সেরাটা। আর্জেন্টিনাও কৌশলে পরিবর্তন এনেই মাঠে নামে। প্রথমে কিছুটা এলোমেলো মনে হলেও পরে তারাই গুছিয়ে নিয়ে দেখিয়েছে যাদু। সাধরাণত বল দখলে রেখেই আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। এদিন উল্টোটা করলো তারা। প্রতিপক্ষকে বল দখলের সুযোগ দিয়ে হঠাৎ আক্রমণে গেছেন মেসিরা।
ক্রোয়েশিয়া প্রায় ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ১২টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে কেবল দুটি। আর্জেন্টিনার আক্রমণ ছিল তুলনামূলক গোছানো। ম্যাচে নায়ক মেসি হলেও পার্শ্বনায়ক ২২ বছর বয়সী আলভারেজ। আগের ম্যাচের নায়ক গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজের এদিন খুব বেশি পরিশ্রম করতেই হয়নি।
ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ডোমিনিক লিভাকভিচ শুরুতে অবশ্য দারুন একটি আক্রমণ ঠেকিয়ে দেন। এরপর আরও কয়েকটি শট প্রতিহত করলেও যথেষ্ট ছিল না। আর্জেন্টিনা পেনাল্টি মেসির গোলে এগিয়ে যায়। পেনাল্টি হয় লিভাকোভিচের কারনেই। ডি বক্সের মধ্যে বল নিয়ে যাওয়া আলভেরাজকে ফাউল করে বসেন। সঙ্গেই সঙ্গেই রেফারি পেনাল্টি ডেকে বসেন।
বুলেড গতির শটে মেসি দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। একই সঙ্গে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে ছাড়িয়ে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার পক্ষে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়লেন। তার গোল এখন ১১টি । এই বিশ্বকাপেই করলেন পাঁচটি। কাতার বিশ্বকাপে তার সমান গোল আছে আর শুধু ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পের। এছাড়া আন্তর্জাতিক ফুটবলে মেসির গোল সংথ্যা দাড়াল ৯৬টি।
প্রথম গোলে পর পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে চোখধাঁধাঁনো এক গোল করেন আলভারেজ। মেসির কাছ থেকে পাস পেয়ে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে অসাধারণ প্রচেষ্টায় দলকে ২-০ তে এগিয়ে নিয়ে যান আলভারেজ। প্রথম ম্যাচে হারের পর সব মিলে টানা পঞ্চম ম্যাচে ২-০ তে লিডও পেয়ে যায় মেসিরা।
প্রধমার্ধেই ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধেই দেখা যায় আবার মেসি যাদু। ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্সকে বোকা বানিয়ে দুর্দান্ত এক পাস দেন আলভারেজের কাছে। এতো সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেননি তিনিও। এরপর আর পেছনে ফিরে তাঁকাতে হয় দলকে। আরও কয়েকটি গোলে সুযোগ তৈরি করলেও শেষ পর্যন্ত গেল হয়নি।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হারটাই যেন শাপে বর হয়ে গেছে। ওই হারের পর প্রাণ ফিরে পেয়েছে আর্জেন্টিনা। তুলে নিয়েছে টানা পাঁচ জয়। আর্জেন্টিনা ফাইনাল। মেসি স্বপ্ন ছুঁতে আর মাত্র এক ম্যাচ দূরে। এবার হয়তো আর খালি হাতে ফিরবেন না এই ফুটবল দেবতা।
স্পোর্টসমেইল২৪/জেএম