ফুটবল যাদুকরদের অন্যতম হাতিয়ার তার ক্ষিপ্রতা। অ্যাটাক কিংবা কাউন্টার অ্যাটাক, যেকোন সময় চিতার মতো শিকার করেন তারা। যেকোন পরিস্থিতে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠতে দেখা যায় তাদের। কাতার বিশ্বকাপেও একাধিক ফুটবলকে ‘উইথ দ্য বল স্পিড’-এ চোখ কপালে তুলিয়েছেন। ঘণ্টায় ২২.১৮ মাইল বেগে ক্ষিপ্র ফুটবলারকেও খুঁজে পেয়েছে মরুর দেশের আসর। তবে সেই লিস্টে সেরা চারে নেই ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, কে কে থাকছেন বিশ্বকাপে ভয়ঙ্কর দৌড়ের তালিকায়
১. কামালদিন সুলেমানা (ঘানা)
প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ ৩৫.৭ কিমি বা ২২.১৮ মাইল।
কাতার বিশ্বকাপে চমক দেখিয়ে চলছে আফ্রিকা ফুটবল দলগুলো। গতিতেও বাজিমাত করেছে তারা। ইউরোপের কোন ফুটবলার নয়, গতির দৌড়ে এক নম্বরে আছেন একজন আফ্রিকান ফুটবলার। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানার কামালদিন সুলেমানা হলেন এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গতির ফুটবলার।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে উরুগুয়ের বিপক্ষে বেঞ্চ থেকে নেমে ২২.১৮ মাইল বেগে দৌড়ান ব্ল্যাক স্টারস’দের এই মিডফিল্ডার। চলমান কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তার রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেনি।
২. আলফানসো ডেভিস (কানাডা) এবং নিকো উইলিয়ামস (স্পেন)
প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ ৩৫.৬ কিমি বা ২২.১২ মাইল
কানাডিয়ান উইংব্যাক হিসেবে পরিচিত মুখ আলফানসো ডেভিস আছেন এ লিস্টের দ্বিতীয় অবস্থানে। সর্বদাই তার দ্রুত গতির জন্য পরিচিত থাকে। উইলিয়ামসের মতো তিনিও প্রতি ঘণ্টায় ২২.১২ মাইল বেগে বল নিয়ে ছুটেছেন। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বল নিয়ে এমন ক্ষিপ্রতা দেখান রেডস’দের এই ডিফেন্ডার।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা আরেক ফুটবলার স্পেন জাতীয় দলের উইঙ্গার হিসেবে পরিচিত নিকো উইলিয়ামস। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে জার্মানির সাথে ১-১ গোলের ড্রয়ের দিনে আরও এক গতি মানবকে দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। ইউরোপের দুই সাবেক চ্যাম্পিয়নদের লড়াইয়ে সেদিন নিকো উইলিয়ামস দৌড়েছিলেন ২২.১২ মাইল (ঘণ্টা) গতিবেগে।
৩. ডেভিড রাউম (জার্মানি)
প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ ৩৫.৫ কিমি বা ২২.০০ মাইল
গ্রুপ পর্বে স্পেন-জার্মানির ম্যাচে আরও এক ইউরোপিয়ান ফুটবল দেখিয়েছিলেন গতির চটকদারিতা। ম্যাচটিতে জার্মানের রক্ষণভাগের দায়িত্বে থাকা এই ডিফেন্ডার ২২.০৫ মাইল প্রতি ঘণ্টায় দৌড়েছেন।
৪. অ্যান্টোনি রবিনসন (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) এবং ড্যানিয়েল জেমস (ওয়েলস)
প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ ৩৫.৪ কিমি বা ২১.৯৯ মাইল
কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ ‘বি’ এর দল ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েলস। গ্রপ পর্বের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল তারা। ওই ম্যাচে ওয়েলসের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টোনি রবিনসন প্রতি ঘণ্টায় ২১.৯৯ মাইল বেগে বল নিয়ে দৌড়েছেন। আর গ্রুপ পর্বের আরেক ম্যাচে ইরানের বিপক্ষে একই গতিতে দৌড়ান ওয়েলসের ফরোয়ার্ডে থাকা ড্যানিয়েল জেমস।
৫. আশরাফ হাকিমি (মরক্কো) এবং কিলিয়ান এমবাপ্পে (ফ্রান্স)
প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ ৩৫.৩ কিমি বা ২১.৯৩ মাইল
২২তম ফিফা বিশ্বকাপে ‘ব্লাক হর্স’ খ্যাত মরক্কোর ডিফেন্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আশরাফ হাকিমি। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত কোন দল হাকিমিদের চক্রব্যূহ ভেদ করে গোল করতে পারেনি। অ্যাটলাস লায়ন্সদের প্রতিরক্ষার পাশাপাশি জ্বলে উঠতে দেখা যায় হামিকিকে। গ্রুপ পর্বে ক্রোয়েশিয়াকে রুখে দেওয়ার দিনে ঘণ্টায় ২১.৯৩ মাইল বেগে ছুটেন হাকিমি।
একই গতি নিয়ে এই লিস্টের পাঁচে আছেন ফুটবল বিশ্বের অন্যতম পোস্টার বই ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পে। রাশিয়া বিশ্বকাপ ফাইনালের এমবাপ্পের সেই কাউন্টার অ্যাটাকের কথা হয়তো সবার মনে আছে। ফ্রান্সের রক্ষণভেদে থাকা বলটি হঠাৎ করেই দেখা যায় ক্রোয়েশিয়ার জালে। এবার কাতার বিশ্বকাপও দেখেছে তার গতি। রাউন্ড অব সিক্সটিনে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ঘণ্টায় ২১.৯৩ মাইল দৌড়ে ছিলেন ফরাসি তারকা।
স্পোর্টসমেইল২৪/এমটিআর