লিওনেল মেসি মানেই প্রতিপক্ষ শিবিরে আতঙ্কের নাম। সময়ের সেরা খেলোয়াড়ও তিনি। তাকে নিয়ে প্রতিপক্ষ আলাদা পরিকল্পনা সাজায়। একাধিকে খেলোয়াড় তাকে ঘিরে রাখে। কাতার বিশ্বকাপে মেসি রয়েছেন স্বপ্নের ছন্দে। বড় টুর্নামেন্টে এমন ছন্দময় মেসিকে খুব একটা দেখা যায় না। হয়েছেন তিন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়। অথচ সেমিফাইনালে আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে নিয়ে ভাবছেই না ক্রোয়েশিয়া। আক্রমণভাগের খেলোয়াড় ব্রুনো পেতকোভিচ জানালেন, আর্জেন্টিনার পুরো দল নিয়ে ভাবছে ক্রোয়েশিয়া।
মঙ্গলবার প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়া। হলুদ কার্ডের খড়গ রয়েছে আর্জেন্টিনার উপর। নিয়মিত একাদশের দুই খেলোয়াড় এদিন খেলতে পারবেন না। তাতে ক্রোয়েশিয়ারও পরিকল্পনায় বেশ সুবিধা হচ্ছে। একই সঙ্গে নিজের দলের সবাই ফিট থাকায় বাড়তি কিছু সুবিধা পাচ্ছেন কোচ দালিচও। আক্রমণভাগের খেলোয়াড় ব্রুনোর চোখ পুরো দলের উপর। কারণ মেসিকে আটকালেও আর্জেন্টিনার আরও দশ খেলোয়াড় বাকি থাকবে।
ব্রুনো বলেন, ‘মেসিকে আটকানোর কোনও পরিকল্পনা এখনও করিনি। আমরা শুধু মেসিকে নিয়েই ভাবছি না। সাধারণত আমরা একটি দলের কোনও এক জনকে আটকানোর চেষ্টা করি না। পুরো দলকে কিভাবে আটকানো যায় সেই পরিকল্পনা করে মাঠে নামি।’
মেসি সুযোগ পেলে কি করতে পারেন সেটা কারো অজানা নয়। বল পায়ে সুযোগ পেলেই মুহুর্তেই গোলবারে শট মারবনে এটাই স্বাভাবিক। তার ফর্মও এখন দুর্দান্ত। ব্রুনো বলেন, ‘শুধু মেসির জন্য আলাদা করে কাউকে রাখব না। কারণ, আর্জেন্টিনা দলে মেসি ছাড়াও কয়েকজন দারুন খেলোয়াড় রয়েছে। তাই পুরো দলকে নিয়েই ভাবছি আমরা। পুরো দলকে আটকে দিলে একা মেসি কিছুই করতে পারবে না। পরিকল্পনা সেভাবেই হবে। শুধু মেসিকে আটকাতে গেলে ফল উল্টো হতে পারে।'
এবার বিশ্বকাপে মেসি সব মিলে চার গোল করেছেন। দুটি গোল করিয়েছেন। সব মিলে পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই হয়েছেন ম্যাচসেরা। এমন মেসিকে আর্জেন্টিনা চাইবে সেমিফাইনালেও। ক্রোয়েশিয়া কোচ খুশি কারণ তিনি পুরো দল পাচ্ছেন। কার্ড কিংবা ইনজুরি সমস্যা নেই দলে।
একই সঙ্গে লুকা মদরিচও রয়েছেন দারুন ফর্মে। ক্রোয়েশিয়ার মাঝ মাঠ বরাবরই শক্তিশালী। মাঝ মাঠই তাদের ভরসা। ব্রুনো বলেন, ‘মাঝ মাঠ আমাদের প্রধান শক্তি। লুকা মদরিচ, মাতেও কোভাচিচ ও মার্সেলো ব্রোজাভিচ ক্রোয়েশিয়ার ইতিহাসের সেরা তিন মিডমিল্ডার। ওদের পাস দেওয়ার পরে আমাদের আর কিছু ভাবতে হয় না।’
এদিকে ক্রোয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় অস্ত্র গোলকিপার লিভাকোভিচ। তাদের সেমিফাইনালে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান তারই। নকআউট পর্বে টানা দুই ম্যাচ টাইব্রেকারে জিতেছে ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যাওয়াও তাদের একটা রণকৌশলের অংশ হয়ে গেছে। ব্রাজিলের বিপক্ষে একের পর এক বল ঠেকিয়ে ম্যাচ ড্র করতে বড় ভূমিকা ছিল এই লিভাকোভিচের।
বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার টাইব্রেকারে সাফল্য শতভাগ। এই সাফল্যে নিয়ে ব্রুনো বলেন, ‘পেনাল্টি নেওয়ার সময় মানসিক শক্ত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় প্রচুর চাপ থাকে। অনেকে এই চাপ সামলাতে পারে না। আর আমাদের তো এজন লিভাকোভিচ রয়েছে। তার মতো গোলকিপার থাকলে চাপ এমনিতেই কমে যায়।'
স্পোর্টসমেইল২৪/জেএম