ফুটবলে মিড-ফিল্ডার কিংবা ফরোয়ার্ডরা গোল করে নায়ক হয়ে যাবেন এটাই যেন স্বাভাবিক। কিন্তু গোলকিপারের হাতেই যে দলের সাফল্য নির্ভর করে এটা এখন মেনে নিতেই পারে-আর্জেন্টিনা, ক্রোয়েশিয়া-মরক্কো। কাতার বিশ্বকাপে পতনের মিছিলে টিকে রয়েছে আর চার দল-আর্জেন্টিনা, ক্রোয়েশিয়া, ফ্রান্স ও মরক্কো। তবে এ চার দলের গোলকিপাররাই পুরো টুর্নামেন্টে দলকে আগলে রেখেছেন।
অতন্দ্র প্রহরী হিসাবে রক্ষা করেছেন গোলবার। কাতার বিশ্বকাপেও সেরা গোলকিপারের তালিকায় এগিয়ে রয়েছেন এ চার দেশের গোলকিপাররা। গোল্ডেন গ্লোবও নিশ্চিতভাবে আর্জেন্টিনার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, ফ্রান্সের হুগো লরিস, ক্রোয়েশিয়ার ডোমিনিক লিভাকোভিচ ও মরক্কোর ইয়াসিন বোনোর মধ্যে কেউ পেয়ে যাবেন।
লিভাকোভিচ ফিফা র্যাংকিংয়ে তালিকায় প্রথমদিকে নেই। তবে তিনি যে কতটা দক্ষ সেটা এবার দুটি ম্যাচেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। গতবারের ফাইনালিন্ট ক্রোয়েশিয়া এবার শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে জিতেছে। দুই ম্যাচেই নায়ক হয়ে উঠেছেন লিভাকোভিচ।
জাপানের বিপক্ষে শেষ ষোলোতে তিনটি পেনাল্টি বাঁচিয়েছিলেন তিনি। তার হাতেই এশিয়ার দল জাপানের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। এবার বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট ব্রাজিলের স্বপ্ন ভঙ্গও হয়েছে লিভাকোভিচের হাতে। শেষ আটে ব্রাজিলের বিপক্ষে ১৩টি শট বাঁচিয়েছেন তিনি। এরপর টাইব্রেকারে রদ্রিগোর শট ঠেকিয়ে দেন। ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে ক্রোয়েশিয়া ওঠে যায় সেমি-ফাইনালে।
সেমি-ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার প্রতিপক্ষ যে আর্জেন্টিনা, তাদেরও রয়েছেন একজন মার্টিনেজ। অনেকে তাকে নাম দিয়েছেন ‘বাজপাখি’। গোলবারের উপরের বলও প্রতিহত না করে চুম্বকের মতো ধরে বসেন। কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে তার দল হারিয়েছে নেদারল্যান্ডসকে। সেখানে নায়ক হয়েছেন তিনি। ডাচদের প্রথম দু’টি পেনাল্টি বাঁচিয়েছেন। আর এতেই ব্যবধান হয়ে গেছে ম্যাচের। লিওনেল মেসির দল তাতে পৌঁছে যায় সেমিতে। ফিফা র্যাংকিংয়ে মার্টিনেজের অবস্থান ১৯ নম্বরে।
এদিকে, এবার বিশ্বকাপে চমকের নাম মরক্কো। সবাইকে অবাক করে আফ্রিকার প্রথম দল হিসাবে তারা চলে গেছে সেমি-ফাইনালে। দলে এ সাফল্যের পেছনের অন্যতম নামটি যে বোনো। বিশ্বকাপে মাত্র একটি গোল খেয়েছেন তিনি। তাও সেটি সতীর্থের আত্মঘাতী গোল। স্পেনের বিপক্ষে টাইব্রেকারে টানা তিনটি শট বাঁচিয়েছেন বোনো। তাতেই বিদায় নিয়ে ফেলে প্রতিবেশি রাষ্ট্র স্পেন।
কোয়ার্টার ফাইনালেও পর্তুগালের বিপক্ষে নিশ্চিত কিছু গোল বাঁচিয়ে দলকে সুরক্ষিত রেখেছেন। গোলের নীচে পাহাড় হয়ে উঠেছিলেন। ফিফার র্যাংকিংয়ে বোনোর অবস্থান মার্টিনেজের পরই ২০ নম্বরে।
হুগো লরিস ফ্রান্সের গোলকিপার। ফিফা র্যাংকিংয়ে রয়েছেন ১১ নম্বরে। তার চেয়ে নিজেকে আরও বড় করে প্রমাণ করলেন বিশ্বকাপের মঞ্চেও। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসাধারণ কিছু শট বাঁচিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপে গোলকিপারদের সর্বোচ্চ পুরস্কারের দৌড়েও এ চারজন। দলের হয়েও যে নীরব নায়ক তারাই।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস