স্পোর্টসমেইল২৪
হ্যারি কেনের পেনাল্টি মিসে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিল ১৯৬৬ সালের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। আসরের চতুর্থ ও শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।
ম্যাচের ৮৪তম মিনিটে পেনাল্টি মিস করেন কেন। পেনাল্টি মিস না হলে ২-২ সমতা রাখার সম্ভাবনা ছিল ইংল্যান্ডের সামনে। কিন্তু দুর্ভাগ্য কেনের, দুর্ভাগ্য ইংল্যান্ডের। ২০০৬ সালের পর আবারও শেষ আট থেকে বিদায় নিতে হলো আসরে চতুর্থ হওয়া ইংলিশরা।
৪০ বছর পর বিশ্বকাপের মঞ্চে লড়াইয়ের সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স। গ্রুপ পর্বে হওয়া আগের দুই লড়াইয়ে জিতেছিল ইংলিশরা। এবারই বিশ্বকাপের নক-আউট পর্বে প্রথম দেখা হলো এ দু’দলের।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে (বাংলাদেশ সময়) আল-খোরের আল-বায়াত স্টেডিয়ামে ১১ মিনিটে আক্রমণ করে ফ্রান্স। তবে গোল করতে পারেনি। তবে প্রথম গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ফ্রান্সকে। ১৭তম মিনিটে মিডফিল্ডার অরেলিয়েন টিচুয়ামেনির গোলে এগিয়ে যায় ফরাসিরা (১-০)।
বাঁ-প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে ওসমানে ডেম্বেলেকে বল দেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তবে ডেম্বেলে সেটি দেন আঁতোয়ান গ্রিজম্যানকে। তার কাছ থেকে বল পেয়েই ২৫ গজ দূর থেকে অসাধারণ শটে ইংল্যান্ডের গোলবারের বাঁ-দিক দিয়ে বলকে জালে পাঠান টিচুয়ামেনি। বলের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও নাগাল পাননি ইংল্যান্ডের গোলবারের প্রহরী জর্ডান পিকফোর্ড।
গোল হজম করে ম্যাচে সমতা আনতে মরিয়া হয়ে ওঠে ইংল্যান্ড। ২১ থেকে ২৯ মিনিটের মধ্যে চারবার ফ্রান্সের সীমানায় আক্রমণ চালায় তারা। এর মধ্যে ২২ ও ২৯ মিনিটে হ্যারি কেনের জোড়ালোর শট দারুণভাবে প্রতিহত করেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক হুগো লোরিস।
প্রথম গোলের পর ৩৯তম মিনিটে আবারও আক্রমণ করে ফ্রান্স। ডিফেন্ডার থিও হার্নান্দেজের যোগান দেওয়া বলে ইংল্যান্ডের বক্সের বাইরে থেকে শট নেন এমবাপ্পে। তার শট ইংলিশদের গোলাবারের উপর দিয়ে চলে যায়। বাকি আর কোন দলই কোন আক্রমন করতে না পারলে ১-০ গোলে শেষ হয় প্রধমার্ধ।
বিরতির পর ম্যাচের ৪৭তম মিনিটে ফ্রান্সের গোলরক্ষক লোরিসের দৃঢ়তায় অল্পের জন্য গোলের দেখা পায়নি ইংল্যান্ড। মিডফিল্ডার জুড বেলিংহামের ডান-পায়ের জোড়ালো শট ফ্রান্সের গোলরক্ষক লোরিস কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। তবে কিছুক্ষণ পর, ৫৪তম মিনিটে গোল পেয়ে যায় ইংল্যান্ড।
বক্সের মধ্যে ইংল্যান্ডের স্ট্রাইকার বুকায়ো সাকাকে ফাউল করেন ফ্রান্সের প্রথম গোলের মালিক টিচুয়ামেনি। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে ১-১ সমতা আনেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হ্যারি কেন।
৭৭তম মিনিটে ফ্রান্সের নিশ্চিত গোল রুখে দেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিকফোর্ড। বক্সের ভেতর থেকে স্ট্রাইকার অলিভার গিরুদের তীব্র শট বাঁ-দিকে ঝাপিয়ে পড়ে প্রতিহত করেন পিকফোর্ড। তবে পরের মিনিটে দলকে আর রক্ষা করতে পারেননি পিকফোর্ড। বাঁ-দিক দিয়ে গ্রিজম্যানের ক্রস থেকে হাওয়ায় ভেসে আসা বলে লাফিয়ে হেডে গোল করেন গিরুদ। ২-১ লিড নেয় ফ্রান্স।
ম্যাচ শেষ হওয়ার প্রায় ১০ মিনিট আগে ম্যাচে সমতা আনার সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। বক্সের মধ্যে ফরাসি ডিফেন্ডার তিও হার্নান্দেজ ইংল্যান্ড মিডফিল্ডার ম্যাসন মাউন্টকে ফাউল করলে রেফারি ভিএআরের সহায়তায় পেনাল্টির ডাক দেন। তবে ৮৪তম মিনিটে পেনাল্টি শট থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন কেন। ফ্রান্সের গোলবারের উপর দিয়ে বল মারেন কেন। সেখানেই মূলত শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের আশা।
শেষ দিকে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া ছিল ইংল্যান্ড। তাদের আক্রমণগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে ফ্রান্সের সীমানায়। ইনজুরি সময়ের ১১ ও শেষ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে ফ্রি-কিক পায় ইংল্যান্ড। স্ট্রাইকার মার্কোস রাশফোর্ডের শট গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যে ম্যাচের সমাপ্তি টানেন রেফারি। ২-১ গোল ম্যাচ জিতে সেমির টিকিট পায় ফ্রান্স।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
