উড়তে থাকা মরক্কোকে থামাতে পারলো না পর্তুগাল, উল্টো ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদেরকে বিদায় করে কাতার বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে পা রাখলো মরক্কো। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দিনের প্রথম ও টুর্নামেন্টের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে মরক্কো।
প্রতিদ্বন্দ্বীতা যতই ছোট হয়ে আসছে শিরোপার আরও কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে দলগুলো। বিশেষ করে অঘটনের জন্ম দিয়ে এগিয়ে আসা দলগুলোর জন্য সেই স্বপ্ন আরও বড় হয়ে দিচ্ছে, মরক্কো তেমনই একটি দল।
গ্রুপ পর্বে ক্রোয়েশিয়ার-বেলজিয়ামের মতো দলকে টপকে শীর্ষস্থান লাভের পর শেষ ষোলতে স্পেনকে পেনাল্টিতে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে। মরক্কোর জন্য তা স্বপ্নের চেয়েও বেশি কিছু। আর এবার তো শক্তিশালী পর্তুগালকে হারিয়ে দিলো তারা।
আল থুমামা স্টেডিয়ামে পর্তুগালের বিপক্ষে প্রথমার্ধেই এগিয়ে যায় মরক্কো। বল দখলে পিছিয়ে থাকলেও ম্যাচের ৪২তম মিনিটে ইউসেফ এন নেসিরির গোলে এগিয়ে যায় মরক্কো। সেই ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় তারা।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে প্রথম একাদশের বাইরে রেখে দল সাজিয়েছিলেন পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস। তবুও ম্যাচের শুরু থেকেই মরক্কোর ওপর চাপ তৈরি করার চেষ্টা করছিল পর্তুগাল। চাপে রেখে সুযোগ তৈরি করেছিল তারা। ম্যাচের ৪তম মিনিটেই সুযোগ পায় পর্তুগাল। তবে মরক্কো গোলরক্ষককে পরাস্ত করা সম্ভব হয়নি।
ব্রুনো ফার্নান্ডেজের ফ্রিকিকে হেড করেছিলেন জোয়াও ফেলিক্স। তার হেড সরাসরি চলে যায় মরক্কো গোলকিপার ইয়াসিন বুনুর হাতে। এরপর শুরুর চাপ সামলে ধীরে ধীরে ম্যাচের রাশ তুলে নেয় মরক্কো, আক্রমণে বাড়ায় তারা। আক্রমণ প্রতি আক্রমণে দারুণ জমে ওঠে খেলা।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মাঝে ৪২তম মিনিটে এগিয়ে যায় মরক্কো। বাঁ দিক থেকে ওঠে এসে সেন্টার করেছিলেন আত্তিয়াত আল্লাহ। কোস্তা ও রুবেন দিয়াজের মাথার ওপর দিয়ে লাফিয়ে ওঠে হেডে গোল করেন ইউসুফ নেসেরি। পিছিয়ে পড়লেও ৪৫তম মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল পর্তুগাল। তবে ব্রুনো ফার্নান্ডেজের শট বারে লেগে বেরিয়ে গেলে বেঁচে যায় মরক্কো।
দ্বিতীয়ার্ধে সমতা ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে পর্তুগাল। গোলের জন্য ৫১ মিনিটে রোনালদোকে মাঠে নামান কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস। রোনালদো মাঠে নামার পর আক্রমণ বাড়ায় পর্তুগাল। ফলে ৬৪তম মিনিটে আবারও সমতা ফেরানোর সুযোগ পায় তারা।
মরক্কোর ডিফেন্সের ভুলে বল পেয়ে যান ব্রুনো ফার্নান্ডেজ। তবে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট বারের উপর দিয়ে বেরিয়ে গেলে আবারও গোল বঞ্চিত হয় পর্তুগাল।
ব্রুনো ফার্নান্ডেজ, জোয়াও ফেলিক্স, রোনালদোর একের পর এক আক্রমণে কোনঠাসা হয়ে পড়লেও মরক্কোর জালে বল পাঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। ৮২তম মিনিটে পর্তুগালকে নিশ্চিত গোলের হাত থেকে দলকে বাঁচান ইয়াসিন বুনু।
রোনালদো সাজিয়ে দেওয়া বলে বাঁ-পায়ে জোরালো শট নিয়েছিলেন জোয়াও ফেলিক্স। দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে নিশ্চিত গোল বাঁচান বুনু। এরপর ম্যাচের ইনজুরি সময়ের প্রথম মিনিটে রোনালদোর শট আটকে আবার দলের পতন রোধ করেন মরক্কো গোলকিপার।
মূলত ইউসুফ নেসিরি গোল করলেও মরক্কোর জয়ের নায়ক হয়ে উঠেন গোলকিপার ইয়াসিন বুনু। আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে মরক্কো সেমি-ফাইনালে খেলার ইতিহাস রচনা করে।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস