দুর্দান্ত খেলে নেইমারের গোলে এগিয়ে গেলেও লিড ধরে রাখতে পারেনি ব্রাজিল। উল্টো সমতায় ফিরে টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে জয় তুলে নিলো ক্রোয়েশিয়া। সেখানে ৪-২ ব্যবধানে হেরে কাতার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘটলো ব্রাজিলের।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা গোল শূন্যভাবে শেষ হলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। ৩০ মিনিটের মধ্যে ১০৫+২ মিনিটে নেইমারের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। এগিয়ে গিয়ে কিছুটা রক্ষণাত্মকভাবে খেলতে গিয়ে বিপদে পড়ে নেইমাররা। ১১৬তম মিনিটে সমতায় ফিরে ক্রোয়েশিয়া। এরপর আর কোনো গোল না হওয়া টাইব্রেকারে গড়ায়।
টাইব্রেকারে ব্রাজিলের নেওয়া চার নম্বর শুট গোলরক্ষক আটকে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে মেতে উঠেন ক্রোয়েশিয়ার ভক্তরা। কারণ, এর আগে নেওয়া চারটি শুটেই গোল পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া।
টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে জালের দেখা পান নিকোলা ভ্লাসিচ, লভরো মাইয়ের, লুকা মদ্রিচ ও মিসলাভ অরসিচ। বিপরীতে ব্রাজিলের নেওয়া চারটি শুটের মাঝে মাত্র ২টিতে গোল করতে পারে।
ব্রাজিলের হয়ে প্রথম শট নেন রদ্রিগো। তবে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে সেটি ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক দমিনিক লিভাকভিচ। অবশ্য পরের দুই শটে গোল করেন কাসেমিরো ও পেদ্রো। তবে চতুর্থ শট মার্কিনিয়োস বারে মারলে বিদায় ঘটে ব্রাজিলের।
খেলায় শট নেওয়া ও আক্রমণে ব্রাজিল এগিয়ে থাকলেও বল দখলে এগিয়ে ছিল ক্রোয়েশিয়া। পুরো ম্যাচে ৪৯ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা ব্রাজিল প্রতিপক্ষের গোলবারে ২১টি শট নিয়েছিল। যার মধ্যে টার্গেট শট ছিল ১১টি। বিপরীতে ৫১ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা ক্রোয়েশিয়ার ৯ শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল মাত্র একটি।
ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে কোণ গোল না হওয়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলায় গোলের জন্য দুদলই মরিয়া হয়ে উঠে। তবে ক্রোয়েশিয়ার চেয়ে আক্রমণে এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। এ সময় একের পর এক ফাউলও করেন ফুটবলাররা।
গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠা ব্রাজিলেও মুখে হাসি ফোটে ১০৫+২ মিনিটে। ক্রোয়েশিয়ার একজনকে কাটিয়ে পাকেতার বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নেন নেইমার। তবে এগিয়ে গিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা গোলরক্ষকে এড়িয়ে খুব কাছ থেকে জাল খুঁজে নেন নেইমার। ব্রাজিলকে এগিয়ে দেওয়ার এ গোলে কিংবদন্তি পেলের সর্বোচ্চ ৭৭ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করেন তিনি।
পিছিয়ে পড়ার পর আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ক্রোয়েশিয়া। সেই ধারাবাহিকতায় সাফল্যও পায় তারা। ১১৬তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল থেকে বিনা চ্যালেঞ্জে এগিয়ে যান বদলি নামা অরসিচ। এরপর ডি বক্সে খুঁজে নেওয়া পেতকোভিচ বুলেট গতির শট মার্কিনিয়োসের হাঁটুতে লেগে দিক পাল্টে বল জালে জড়ায়।
সমতায় ফেরার পর আর কোন গোল না হওয়ায় টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা। সেখানেই বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলকে হারানোর স্বাদ নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ক্রোয়েশিয়া।