স্পোর্টসমেইল২৪
দুই বছর আগেও নেদারল্যান্ডের গোলরক্ষক আন্দ্রিয়েস নোপার্টের ক্যারিয়ার ছিল অনিশ্চয়তা ভরা। এমনকি ফুটবল থেকে বিদায়েরও চিন্তা করছিলেন তিনি। তবে এখন তিনি লিওনেল মেসিদের আটকানোর পরিকল্পনা করছেন, নিচ্ছেন প্রস্তুতিও। কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে শুক্রবার আর্জেন্টিনার মোকাবেলা করবে নেদারল্যান্ড।
ডাচ দ্বিতীয় বিভাগে ২০২০ সালে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করা নোপার্টের কাতার বিশ্বকাপে সেনেগালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটির মাধ্যমে জাতীয় দলের অভিষেক ঘটে। এক সময় ফুটবল ছেড়ে দিয়ে ২৮ বছর বয়সী এ গোলরক্ষক পুলিশে যোগদান করতে চেয়েছিলেন।
গত বছর ডাচ পেশাদার লিগের গো অ্যাহেড ঈগলসে যোগ দেওয়ার পর চলতি মৌসমে যোগ দেন হিরেনভিনে। আর এই ক্লাব থেকে নেদারল্যান্ডের কোচ লুইস ফন গালের চোখে পড়েন। এখন তিনি কাতার বিশ্বকাপে দলের মূল গোলরক্ষক।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে মেসিদের আটকাতে নোপার্ট এখন মরিয়া। বিশেষ করে মেসির পেনাল্টি শ্যুট আটকানোর স্বপ্ন দেখছেন তিনি, এ স্বপ্নটিও তার অনেকদিনের।
এ সম্পর্কে নোপার্ট বলেছেন, “এটা নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপর। মেসি পেনাল্টি মিসও করতে পারে। এবারের টুর্নামেন্টে আমরা তাকে পেনাল্টি মিস করতে দেখেছি। আমাদের সাথেও এমন হতে পারে। সেও একজন মানুষ। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে, সে বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। তবে আমিও তার পেনাল্টি রুখতে পুরোপুরি প্রস্তুত।”
কাতারে এখন পর্যন্ত নেদারল্যান্ডের সবগুলো ম্যাচেই খেলেছেন নোপার্ট। কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এ ম্যাচগুলোতে হজম করেছেন মাত্র দুটি গোল। এবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে লম্বা খেলোয়াড় ৬ ফিট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার নোপার্ট ইতিমধ্যেই গোল এরিয়ায় নিজেকে প্রমাণ করেছেন ও প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
অল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে নোপার্ট বলেন, “সব খেলোয়াড়েরই স্বপ্ন থাকে বিশ্ব কাপে খেলার। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। তবে আমার ক্যারিয়ার দেখলে বোঝা যাবে এখনই এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের কোন সুযোগ ছিল না। আমি মনে করেছিলাম, আমার ক্যারিয়ারে কখনই এটা সম্ভব নয়। তারপরও আমি লড়াই চালিয়ে গেছি। আমি বিশ্বাস করেছি শুধুমাত্র ফন গালই পারবে আমাকে এখানে নিয়ে আসতে এবং সেটাই হয়েছে।”
নেদারল্যান্ডের দীর্ঘ সময়ের নাম্বার ওয়ান গোলরক্ষক জাসপার সিলিসেনকে বাদ দিয়ে নোপার্টকে সুযোগ দেওয়া ছিল ফন গালের সাহসী ও বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত। ফেনুর্ডের জাস্টিন বিলো ও আয়াক্সের রেমকো পাসভির দলে থাকলেও নোপার্টকেই ফন গাল বেছে নেন। বাকি দু’জন মিলে এখন পর্যন্ত মাত্র আটটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন।
প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পাওয়া নোপার্ট ধারণা করেছিলেন, দলে তার ভূমিকা হবে ব্যাক-আপ গোলরক্ষকের। কিন্তু ফন গাল তাকে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই মূল একাদশে খেলিয়েছেন।
নোপার্ট আরও বলেন, “আমার জন্য প্রতিটি ম্যাচই এক। আমি মাঠে নামি বল ধরার জন্য। আমার সামনে বিশ্বের সেরা রক্ষণভাগ থাকায় অনেক সময়ই আমি চিন্তা মুক্ত থাকি। আমাদের সকলের এখন একটিই লক্ষ্য, বিশ্বকাপে শিরোপা।”
