ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের গত আসরে চতুর্থ হয়েছিল ইংল্যান্ড। এবারও কোয়াটারফাইনাল নিশ্চিত করলো তারা। সেনেগালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ১৯৬৬ সালের চ্যাম্পিয়নরা।
ম্যাচের প্রথমার্ধে জর্ডান হেন্ডারসন ও হ্যারি কেনের গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে বাকি ১টি গোল করেন বুকায়ো সাকা। আল-খোরের আল-বায়াত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচের ৬২ শতাংশ সময় বল নিজেদের দখলে রেখেছিল ইংলিশরা।
ফেভারিটের তকমা নিয়েই সেনেগালের মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড। গ্রুপ পর্বের পারফরমেন্স ও ফিফা র্যাংকিংয়ে সেনেগালের চেয়ে বেশ এগিয়েই ইংলিশরা। তবে খেলতে নেমে ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটে কোন আক্রমণ করতে পারেনি দল দুটি। বল দখল ও নিজেদের গোছাতেই ব্যস্ত ছিল তারা।
ম্যাচের ২১তম মিনিটে প্রথম আক্রমণ করে ইংল্যান্ড। স্ট্রাইকার ফিল ফোডেনের ক্রস থেকে সেনেগালের গোলমুখে ব্যর্থ শট নেন ডিফেন্ডার জন স্টোনস। এরপর ২৩তম মিনিটে প্রথম আক্রমণ করে সেনেগাল। মধ্যমাঠ থেকে বল নিয়ে সতীর্থ ফরোয়ার্ড বুলয়ালে ডিয়াকে পাশ দেন ইসমাইলা সার। তবে বক্সের ভেতর থেকে ডিয়ার নেওয়া শট সেটি আটকে যায় ইংল্যান্ড আক্রমণভাগের দক্ষতায়।
এরপর হঠাৎ আক্রমণে ম্যাচের ৩৮তম মিনিটে দারুণ এক গোলে ম্যাচে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। মধ্য মাঠ থেকে বল পেয়ে সেনেগালের বক্সের ভেতর ক্রস করেন ইংলিশ মিডফিল্ডার জুড বেলিংহাম। বক্সের ভেতর বল পেয়েই বাঁ-পা পায়ের আলতো টোকায় সহজেই বলকে সেনেগালের জালে পাঠান আরেক মিডফিল্ডার।
এগিয়ে গিয়ে গিয়ে যেন সেনেগালকে আরও চেপে ধরে ইংল্যান্ড। ৪১ মিনিটে ডান-প্রান্ত দিয়ে স্ট্রাইকার বুকায়ো সাকার ক্রসে বল পেয়েও হ্যারি কেন প্রতিপক্ষের গোলবারের বাইরে মারেন। তবে ৪১ মিনিটে ভুল করলেও প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে ভুল করেননি কেন।
মধ্য মাঠ থেকে বল নিয়ে সামনের দিকে থাকা কেনকে বাড়িয়ে দেন হেন্ডারসন। এরপর ফোডেনের সাথে ওয়ান-টু-ওয়ান করতে করতে সেনেগালের বক্সের ভেতর ঢুকে ডান-পায়ের জোড়ালো শটে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলের মালিক হন কেন। যা এই বিশ^কাপে কেনের প্রথম গোল।
হেন্ডারসন ও কেনের জোড়া গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে ম্যাচের বিরতিতে যায় গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ড। প্রথমার্ধে ৬৫ শতাংশ বল আয়ত্বে রাখা ইংল্যান্ড বিরতি থেকে ফিরেও বল দখলের ধারা অব্যাহত রাখে। এ অবস্থায় দ্বিতীয়ার্ধে গোল পেতে খুব বেশি দেরি করতে হয়নি ইংলিশদের।
পরিকল্পনা মতো একটি আক্রমণ থেকে ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে তৃতীয় গোল পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। মধ্য মাঠ থেকে বল নিয়ে নিজেদের দারুণ বোঝপড়ায় সেনেগালের সীমানায় আক্রমণ রচনা করেন ফোডেন ও বেলিংহাম।
বাঁ-প্রান্ত দিয়ে সেনেগালের বক্সের ভেতর পাশ দেন ফোডেন। সেখানে দাঁড়ানো থাকা বল পেয়ে আলতো ছোঁয়ায় সেনেগাালের গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান, ব্যবধান হয়ে যায় ৩-০। বড় ব্যাবধানে এগিয়ে গিয়ে ম্যাচ জয়ের পথ তৈরি করে ফেলে ইংল্যান্ড।
এরপর ম্যাচের ৬৯ ও ৭৪তম মিনিটে সেনেগাল দু’টি আক্রমণ করলেও গোলের জন্য তা যুৎসই ছিল না। ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগের দেয়াল ভাঙতে পারেনি তারা। শেষ দিকে ৮৪তম মিনিটেও গোলের সুযোগ পেয়েছিল সেনেগাল।
ইসমাইল জ্যাকবসের ক্রসে বক্সের ভেতর হেড নেন ইসমাইল সার। তবে তার হেড ইংল্যান্ডের গোলবারের উপর দিয়ে চলে গেলে কোন গোলই পায়নি সেনেগাল।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস