রেকর্ড জয়ে ২২তম ফিফা বিশ্বকাপ শুরু করলো সাবেক চ্যাম্পিয়ন স্পেন। গ্রুপ-ই’তে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কাতার বিশ্বকাপে সর্বশেষ দল হিসেবে সুযোগ পাওয়া কোস্টারিকাকে ৭-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে স্পেন। দলের পক্ষে জোড়া গোল করেছেন ফেরান তোরেস।
কোস্টারিকার বিপক্ষে এ বিশাল জয়ে নিজেদের রেকর্ড নিজেরাই ভেঙেছে স্পেন। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে ৬-১ গোলে জিতেছিল তারা। এবার সে রেকর্ড ভেঙে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে ৭ গোলে জিতলো স্পেন।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) দোহার আল-থুমামা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার ভালো সুযোগ পেয়ে যায় স্পেন। বাঁ-দিক দিয়ে মিডফিল্ডার পেড্রি গঞ্জালেজের অসাধারণ ক্রস করেলে বল পান স্ট্রাইকার দানি ওলমো। তবে বল ধরে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা না করে পোস্টের ৪০ গজ দূর থেকে দারুণ এক শটটি গোলবার ঘেষে চলে যায়।
প্রথমবার ভুল করলেও পরেরবার আর একই ভুল করেননি। ম্যাচের ১১তম মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে আলতো ছোঁয়ায় ওলমোকে বল দেন মিডফিল্ডার গাভি। বল নিয়ে একটু সামনে এগিয়ে কোস্টারিকার গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে বোকা বানান ওলমো। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন।
ওলমোর গোলে লিড নিয়ে স্পেনের পুরনো ঐতিহ্য ফুটে ওঠে। ২০০৮ থেকে ২০১২ সালে টিকিটাকা ফুটবল শৈলির জন্য বিশ্বে দারুণ জনপ্রিয় দল হয়ে উঠেছিল তারা। এমন টিকিটাকা ধরন দিয়েই ২০১০ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। সেই টিকাটাকা ফুটবল নৈপূণ্যে বল দখলে নিয়ে ২১ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় স্পেন।
বাঁ-প্রান্ত দিয়ে ডিফেন্ডার জোর্দি আলবার ক্রসে তীব্র গতির শটে বলকে কোস্টারিকার জালে পাঠান স্ট্রাইকার মার্কো আসেনসিও (২-০)। এরপরও থমকে যায়নি স্পেন। মধ্যমাঠ থেকে টিকিটাকার পরিকল্পনাকে সামনে রেখে আক্রমণের ধারা অব্যাহত রাখে তারা।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে তৃতীয় গোল পেয়ে যায় স্পেন। ডি বক্সের ভেতর আলবাকে ফাউল করেন কোস্টারিকার ডিফেন্ডার ওস্কার ডুয়ার্তে। পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করে স্পেনকে ৩-০ গোলে এগিয়ে দেন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় ফেরান তোরেস। এ অর্ধের বাকি সময় আর কোন গোল না হলে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্পেন।
১৯৩৪ সালে প্রথম ও শেষবার বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমার্ধে ৩-০ গোলের লিড নিতে পেয়েছিল স্পেন। আর এ ম্যাচে ৮৮ বছরের পুরনো রেকর্ড মনে করিয়ে দিলো তারা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আক্রমণের পরিকল্পনা আরও শানায় স্পেন।
ম্যাচের ৫৪তম মিনিটেই মধ্যমাঠ থেকে করা আক্রমণ শানিয়ে ম্যাচে দলের চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন তোরেস। গাভির কাছ বল পেয়ে ডান-দিকে বক্সে ছয় গজ দূর থেকে দারুণ শটে গোল করেন তোরেস। পেনাল্টি থেকে ম্যাচের তৃতীয় গোলটিও করেছিলেন তোরেস।
তোরেসকে দ্বিতীয় গোলে সহায়তা করা গাভিও ৭৪তম মিনিটে গোল করে স্কোর শিটে নাম লেখান। দল এগিয়ে যায় ৫-০ গোলে। বড় জয় নিশ্চিত হওয়ার পরও যেন স্পেনকে গোলের নেশায় পেয়ে যায়। ম্যাচে শেষ দিকে আরও দুই বার কোস্টারিকার জালে বল পাঠায় স্পেন।
৯০তম মিনিটে মিডফিল্ডার কার্লোস সোলার এবং ইনজুরির টাইমের দ্বিতীয় মিনিটে গোল করেন আলভারো মোরাতা। ৭-০ গোলেল বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্পেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস