গোল উৎসবের মধ্য দিয়ে ২২তম ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপে নিজেদের মিশন শুরু করলো সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। গ্রুপ-বি’র ম্যাচে ইরানকে ৬-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড। দলের পক্ষে বুকায়া সাকা ২টি এবং জুড বেলিংহাম-রাহিম স্টার্লিং-মার্কাস রাশফোর্ড ও জ্যাক গ্রিলিশ একটি করে গোল করেন। বিপরীতে ইরানের পক্ষে জোড়া গোল করেন মেহদী তারেমি।
সোমবার (২১ নভেম্বর) দোহার খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ইরানের বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবেই খেলতে নামে সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। শুরুতেই বলের দখল নিয়ে ৮ম মিনিটে ডান দিক থেকে আক্রমণ শানায় ইংলিশরা।
ডি-বক্সে ক্রস করেন হ্যারি কেন। গোলবার ছেড়ে এগিয়ে এসে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে সতীর্থের সাথে সংঘর্ষে নাক ফেটে যায় ইরানের গোলরক্ষক আলিরেজা বেইরনভান্দের। এতে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে।
মাঠে চিকিৎসা নেওয়ার পর আবারও খেলা শুরু হয়। তবে শারীরিকভাবে অস্বস্তিবোধ করায় ২৪ মিনিটে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়লে বেইরনভান্দের বদলি গোলরক্ষক হিসেবে মাঠে নামেন গত বিশ্বকাপে পর্তুগালের তারকা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পেনাল্টি আটকে দেওয়া হোসেইন হোসেইনি।
ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ম্যাচে প্রথম গোল পায় ইংল্যান্ড। বাঁ-দিক থেকে ডিফেন্ডার লুক শ’র ক্রস থেকে ডি বক্সে লাফিয়ে ওঠে দুর্দান্ত গোল করেন মিডফিল্ডার জুড বেলিংহাম। জাতীয় দলের হয়ে ১৮তম ম্যাচে এসে প্রথম গোল পেলেন বেলিংহাম।
প্রথম গোল পাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করতে খুব বেশি সময় নেয়নি ইংল্যান্ড। ৪৩ মিনিটে গোল স্ট্রাইকার বুকায়ো সাকা। কর্নার থেকে হেডে ডি-বক্সে থাকা সাকাকে বল বাড়ান ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুয়েরে। বল পেয়ে তীব্র শটে ইংল্যান্ডের হয়ে ২০ ম্যাচে চতুর্থ গোল করেন সাকা।
সাকার গোল নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করার পথেই ছিল ইংল্যান্ড। ইরানের গোলরক্ষক বেইরনভান্দের ইনজুরিতে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকায় ১৫ মিনিট বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আর তাতেই প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ের প্রথম মিনিটে ইরানের জালে তৃতীয়বারের মতো বল পাঠান স্ট্রাইকার রাহিম স্টার্লিং।
কেনের নিচু ক্রস ভলিতে বক্সের ভেতর থেকে ডান-পায়ের শটে ইংল্যান্ডের হয়ে ৮০তম ম্যাচে ২০তম গোল করেন স্টার্লিং। প্রথমার্ধে ১০ মিনিটের ব্যবধানে তিন গোল করে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড। যেখানে ৮০ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখেছে ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে গোলের ব্যবধান বাড়াতে আরও মরিয়া হয়ে ওঠে ইংল্যান্ড। ম্যাচের ৬২ মিনিটে ইরানের জালে এক হালি গোল পূর্ণ করেন ম্যাচে দ্বিতীয় গোল করা সাকা। ডান-দিক দিয়ে স্টার্লিংয়ের যোগান দেওয়া বলে বাঁ-পায়ের শটে গোল করেন তিনি।
সাকার গোলের তিন মিনিট পর এক গোল পরিশোধ করে ইরান। মিডফিল্ডার আলি গোলিজাদেহ সহায়তায় আরেক মিডফিল্ডার মেহদি তারেমি গোলে ব্যবধান ১-৪ এ কমিয়ে আনে ইরান। ৭০ মিনিটে সাকার বদলি হিসেবে মাঠে নামার ৬৯ সেকেন্ডের মধ্যে গোল করে রাশফোর্ড।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে বদলি হিসেবে নেমে কোন ফুটবলারের দ্রুততম গোলের রেকর্ড এটি। ৭১ মিনিটে রাশফোর্ডের এ গোলের পেছনেও অবদান ছিল কেনের।
এরপর ৮৯ মিনিটে ইরানের জালে শেষ পেরেক টুকে দেন স্ট্রাইকার জ্যাক গ্রীলিশ। আরেক স্ট্রাইকার ক্যলুম উইলসনের পাস থেকে ডান পায়ের শটে গোল করেন গ্রীলিশ। এ অর্ধের ইনজুরি টাইমের ১৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ইরানের হারের ব্যবধান কমান তারেমি। তারপরও ৬-২ গোলের জয়ে চওড়া হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ে শিরোপার অন্যতম দাবিদার ইংল্যান্ড।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস